জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের (সম্মান) ভর্তির ফলাফল মার্চ মাসের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে তিনি এ কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, ‘আজ “সি” ইউনিটের পরীক্ষার মাধ্যমে সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম শেষ হচ্ছে। আশা করি মার্চের মধ্যেই সব ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি ঈদের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ক্লাস শুরু করারও পরিকল্পনা রয়েছে। দ্রুত ফলাফল প্রকাশ ও ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সবাই নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।’

দীর্ঘ চার বছর পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব নিয়মে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে। প্রতি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০। এর মধ্যে বহুনির্বাচনী প্রশ্নের জন্য থাকবে ২৪ নম্বর এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য থাকবে ৪৮ নম্বর। এ ছাড়া এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১২ নম্বর ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সর্বোচ্চ ১৬ নম্বর যুক্ত হবে।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মো.

মনজুর মোর্শেদ ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সি ইউনিটের ফলাফল প্রকাশ করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা।’

গত ৩১ জানুয়ারি ই ইউনিটের (চারুকলা অনুষদ), ১৪ ফেব্রুয়ারি ডি-ইউনিট (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ), ১৫ ফেব্রুয়ারি বি-ইউনিট (কলা ও আইন অনুষদ), ২২ ফেব্রুয়ারি এ-ইউনিটের (বিজ্ঞান ও লাইফ অ্যান্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদ), ২৮ ফেব্রুয়ারি সি ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এ ইউনিটে ৪৪ হাজার ২২৩জন, বি ইউনিটে ৪২ হাজার ৯৭৪ জন, সি ইউনিটে ২০ হাজার ১১২ জন, ডি ইউনিটে ২৪ হাজার ৯৫৬ জন, ই ইউনিটে ১ হাজার ৩৭৫ জন শিক্ষার্থী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) এ ইউনিটে ৮৬০, বি ইউনিটে ৭৮৫, সি ইউনিটে ৫২০, ডি ইউনিটে ৫৯০ এবং ই ইউনিটে ৬০টিসহ মোট ২ হাজার ৮১৫টি আসন রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ট র পর ক ষ পর ক ষ র র ফল ফল র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতীয়দের বিদেশে পড়াশোনায় আগ্রহ কমছে, কারণ কি শুধুই রাজনীতি

উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশের অনেক নামী প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে যান ভারতের ছাত্রছাত্রীরা। করোনাপরবর্তী সময়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও শিক্ষার্থীদের বিদেশযাত্রার প্রবণতা কমছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য বলছে, বিদেশে অধ্যয়নরত ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ১৫ শতাংশ। এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন উচ্চশিক্ষার জন্য অন্য দেশে যাওয়ার আগ্রহ কমছে ভারতীয়দের?

কেন্দ্রের পরিসংখ্যান

ভারতের সংসদে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ২০২৪ সালে বিদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তুলে ধরেছে। এ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশে ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছরে (২০২৪) শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫ শতাংশ কমেছে।

লোকসভায় এক সংসদ সদস্যর প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার জানিয়েছেন, ২০২৩ সালে ৮ লাখ ৯২ হাজার ৯৮৯ জন ভারতীয় শিক্ষার্থী অন্য দেশে পড়াশোনা করেছেন। ২০২৪ সালে এসে ৭ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪ জন শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষার জন্য গেছেন ভিনদেশে। অর্থাৎ এক বছরে সোয়া লাখের বেশি শিক্ষার্থী কমেছে।

সবচেয়ে বেশি কমেছে কানাডায়। এ দেশে শিক্ষার্থী কমার হার ৪২ শতাংশ। ইংল্যান্ডে প্রায় ২৮ শতাংশ, আমেরিকায় প্রায় ১৩ শতাংশ শিক্ষার্থী কম পড়তে গেছেন।

আরও পড়ুনইংল্যান্ডে পড়াশোনা: খণ্ডকালীন চাকরি ও স্কলারশিপের সুযোগ, আইইএলটিএসে ৬.৫ স্কোর হলে আবেদন ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভারতীয় শিক্ষার্থীদের কাছে আমেরিকা, ইংল্যান্ড, কানাডার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান বরাবরই খুব আকর্ষণীয়। তবে অন্য দেশেও পড়ার ঝোঁক রয়েছে। ভারতের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, অন্য কয়েকটি দেশে বিপরীতমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য রাশিয়া ও ফ্রান্স। ২০২৩–এর তুলনায় ২০২৪ সালে রাশিয়ায় ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৩৪ শতাংশ, ফ্রান্সে সংখ্যাটি ১৪ শতাংশ।

রাশিয়ার ক্ষেত্রে মেডিকেলে পড়তে যাওয়ার ঝোঁক বেশি। হাজারো শিক্ষার্থী সে দেশে যাচ্ছেন ডাক্তারি পড়তে। সেখানে পড়াশোনার খরচ যেমন কম, তেমনি মেডিকেলের পাঠ নেওয়ার জন্য কঠিন প্রবেশিকা পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় না। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের বৃত্তি থেকে বসবাসের ব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হয়। শুধু এমবিবিএস নয়, পিএইচডি করতেও অনেকে রাশিয়ায় যাচ্ছেন।

আরও পড়ুনলিথুয়ানিয়ায় উচ্চশিক্ষা: ৩৫০টির বেশি প্রোগ্রামে পড়াশোনা, স্কলারশিপের সুবিধা, সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা কাজ১৪ নভেম্বর ২০২৪

ছাত্র কমার কারণ—

বিদেশে ভারতীয়দের পড়তে যাওয়ার প্রবণতা কমার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক কারণ। বিভিন্ন দেশে দক্ষিণপন্থী দলের উত্থান হয়েছে। এর ফলে কঠোর হয়েছে অভিবাসননীতি। ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কারণে গন্তব্য হিসেবে আমেরিকা, ইউরোপের একাধিক দেশ আগের মতো আর অনুকূল নয় বলে তাঁদের মত।

বিভিন্ন দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ও পররাষ্ট্রনীতি ছাত্রসংখ্যা কমার পেছনে কিছুটা দায়ী বলে মন্তব্য তাঁদের। এ ক্ষেত্রে কানাডার প্রসঙ্গ বিশেষভাবে উল্লেখ্য। এ দেশেই সবচেয়ে বেশি কমেছে ভারতীয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যা নিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। তার প্রভাব পড়েছে ভিসার ক্ষেত্রে।

ভারতের রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজাগোপাল ধর চক্রবর্তী বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমেরিকার যে নীতি, তা কোনো ভিনদেশির পক্ষে সুবিধাজনক নয়। কানাডার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয়ে গেছে। এর ফলে এই দুটি দেশে পড়তে যাওয়া ভারতীয় শিক্ষার্থীরা অন্য দিকে ঝুঁকেছেন। ইউক্রেন, রাশিয়ায় অনেক মেডিকেল ছাত্র পড়তে যেতেন, সেখানে যুদ্ধ হলেও যাচ্ছেন। আমেরিকা বা কানাডার মতো সেখানে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা নেই, পড়াশোনার খরচও কম।’

বিদেশে না যাওয়ার ক্ষেত্রে বড় হয়ে উঠেছে অর্থনৈতিক কারণ। বিশেষজ্ঞদের মতে, সার্বিক মন্দা, শিল্প উৎপাদনে ঘাটতি, কর্মসংকোচন নিয়োগের ক্ষেত্রকে অনিশ্চিত করে তুলেছে। অতীতে ভারতীয় শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়তে যেতেন যে লক্ষ্য নিয়ে, সেখানে কোথাও নিয়োগ খুঁজে নেওয়া, তেমন পরিস্থিতি আর নেই। বড় বহুজাতিক সংস্থায় কর্মী ছাঁটাইয়ের খবর পাওয়া যায় মাঝেমধ্যে।

আরও পড়ুনথাইল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন কাজ, আইইএলটিএসে ৫.৫–এ আবেদন০২ অক্টোবর ২০২৪

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য বলেন, ‘দক্ষিণপন্থী রাজনীতির উত্থানের সঙ্গে সঙ্গে জনকল্যাণের ধারণাটা ফিকে হয়ে আসছে। যে উদারনৈতিক নীতির ফলে অন্য দেশের ছাত্রছাত্রীরা স্বাগত ছিল, সেখানে আজ বাধা তৈরি হয়েছে। এর ফলে আমেরিকাসহ অন্যান্য দেশে তাদের নিজেদের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। ভারতীয় ছাত্রদের যে মেধা ও পরিশ্রম, তার গুরুত্ব কমে যাচ্ছে। এই প্রবণতা আগামী দিনেও বজায় থাকবে।’

শুধু বিদেশযাত্রা নয়, দেশের সার্বিক শিক্ষার পরিবেশের সঙ্গে বিষয়টিকে সংশ্লিষ্ট করতে চাইছেন রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শিক্ষাবিদ পবিত্র সরকার। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে শিক্ষার গুরুত্ব কমছে। বাজেট কমছে, নিয়োগের সম্ভাবনা কমছে। তাই কলেজে ছাত্র ভর্তি কমে গিয়েছে। বিদেশে পড়ার ক্ষেত্রে সম্ভবত সেই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। বাইরের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার উৎসাহ কমে যাচ্ছে অথবা যোগ্যতাতেও ঘাটতি হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের অর্থনীতিতে সাড়ে ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির আরেকটি পূর্বাভাস
  • ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং-ফেব্রিক ইঞ্জিনিয়ারিং-অ্যাপারেল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা, আবেদনের সুযোগ আরও ২০ দিন
  • দেশে স্ট্রবেরির নতুন জাত ফ্রিডম–২৪
  • নাটোরে পুরাতন ডিসি বাংলো থেকে গত সংসদ নির্বাচনের ১০০ বস্তা ব্যালট পেপার উদ্ধার
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি: বিষয় পছন্দক্রমে ফোন ভেরিফিকেশনে বিশেষ নির্দেশনা
  • ভারতীয়দের বিদেশে পড়াশোনায় আগ্রহ কমছে, কারণ কি শুধুই রাজনীতি
  • ট্রাম্পের বিভাজন নীতি