ঘোড়াঘাটে ওরস আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে মাজারে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
Published: 28th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলায় তিন দিনব্যাপী ওরস আয়োজনের প্রস্তুতির মধ্যে একটি মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে সীরাতে মুস্তাকিম পরিষদ নামের একটি সংগঠনের ব্যানারে এলাকায় লাঠিমিছিল কর্মসূচির পর এই ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
‘রহিম শাহ বাবা ভান্ডারী মাজার’ নামের এ মাজারটি উপজেলার সিংড়া ইউনিয়নের বিরাহীমপুর গুচ্ছগ্রামে অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২ থেকে ৪ মার্চ পর্যন্ত মাজারে বার্ষিক ওরস হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য ভক্তদের অংশ নেওয়ার জন্য প্রচার চালায় মাজার কর্তৃপক্ষ। মাজারের সামনে মঞ্চ ও বড় তোরণ নির্মাণ করা হয়েছিল। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ভক্তদের জন্য শামিয়ানা দিয়ে তিনটি প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে সীরাতে মুস্তাকিম পরিষদের ব্যানারে কয়েক হাজার ‘তৌহিদি জনতা’ লাঠি হাতে মিছিল বের করেন। ওই মিছিল থেকে মাজারে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় মাজারের বিভিন্ন আসবাব, ঘরের টিন ও দেয়ালের ইট খুলে ফেলে হয়। সেখানে বিক্ষুব্ধ লোকজন বিভিন্ন স্লোগান দেন। তৌহিদি জনতা আগুন দিয়ে মাজারের চারপাশ ঘিরে অবস্থান নেওয়ায় সেখানে সেনাবাহিনী ও থানা-পুলিশ যেতে পারেনি। ভাঙচুরকারীদের অভিযোগ, মাজারটিতে গানবাজনা, মাদক সেবন ও অশ্লীল কর্মকাণ্ড চালানো হয়।
সীরাতে মুস্তাকিম পরিষদের ব্যানারে লাঠি হাতে মিছিল বের করা হয়। শুক্রবার বিকেলে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভোলায় সংঘর্ষ ঠেকাতে যাওয়া বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যা
ভোলায় জমির বিরোধ নিয়ে সংঘর্ষে এক বিএনপি নেতাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের কুঞ্জপট্টি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই বিএনপি নেতা সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর নিহত ব্যক্তির স্বজন, এলাকাবাসী, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভোলা-ভেলুমিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম জামাল উদ্দিন হাওলাদার (৬০)। তিনি ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
এলাকাবাসী, নিহতের স্বজন, গ্রাম পুলিশ ও ভোলা সদর থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কুঞ্জপট্টি মৌজায় মো. ইব্রাহীম রাঢ়ি নামের এক ব্যক্তি ৫ শতক জমি কেনেন। তবে পাশের জমির মালিক মো. আলম ব্যাপারী ওই জমি তাঁর বলে দাবি করেন। এ নিয়ে তাঁদের মধ্যে কয়েক বছর ধরে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে অনেকবার সংঘর্ষ-সংঘাত হয়েছে। গতকাল সোমবার ঈদের দিনেও এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে আজ বেলা ১১টার দিকে দুই পক্ষ লাঠিয়াল ভাড়া করে জমি দখল করতে যায়। এ সময় দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়ে গুরুতর আহত হন স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. জামাল উদ্দিন হাওলাদার। বিকেলে বরিশালে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেন, বিএনপি নেতা জামাল উদ্দিন বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘তোমরা মারামারি বন্ধ করো, আমি তোমাদের সমস্যা সমাধান করে দেব।’ এ সময় জামাল উদ্দিনের মাথায় ও শরীরে এলোপাতাড়ি পেটানো শুরু করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তাঁকে প্রথমে ভোলা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। কিন্তু বাড়ি আনার সময় পথে নড়ে উঠলে তাঁকে আবার বরিশালের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানের চিকিৎসক বিকেল ৫টার দিকে পরীক্ষা করে তাঁকে আবার মৃত ঘোষণা করেন।
ভেলুমিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল উদ্দিন দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঠেকাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইব্রাহীম রাঢ়ির ছেলে তাঁর মাথায় প্রথম আঘাত করেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্থানীয় লোকজন ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন।
ভোলা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, এ ঘটনায় কোনো পক্ষের অভিযোগ পাননি। পেলে ব্যবস্থা নেবেন। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হবে।