এনায়েত হোসেনের ‘পালাবদলের ছড়া’ বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ফরিদপুর প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রকাশনা উৎসবে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন দৈনিক সমকালের প্রকাশক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।

ছড়াকার এনায়েত হোসেন স্মৃতি সংসদের মোহাম্মদ আবু সায়েম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক এম এ সামাদ, প্রফেসর আলতাফ হোসেন, সাংবাদিক ও লেখক মফিজ ইমাম মিলন, ফারুক ইয়া আযম, অধ্যাপক ম.

হালিম, অধ্যাপক আ. আজিজ, এফডিএ নির্বাহী পরিচালক আজহারুল ইসলাম, জেলা কালচারাল অফিসার সাইফুল হাসান মিলন, ছড়াকার এনায়েত হোসেন স্মৃতি সংসদ সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনার রশিদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নাট্য ব্যাক্তিত্ব ম. নিজাম।

অনুষ্ঠানে দৈনিক সমকালের প্রকাশক ও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ছড়াকার এনায়েত হোসেন ছিলেন সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার সৃষ্টি সকল প্রজন্মের কাছে অনুকরণীয়। 

ছড়াকার এনায়েত হোসেন ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের নর্থচ্যানেল গ্রামে ১৯৪৫ সালের পহেলা মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ২০২১ সালের ১০ জুলাই তিনি মারা যান। এ পর্যন্ত তার ৮টি বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘পালাবদলের ছড়া’ বইটি প্রথম ১৯৭৯ সালে প্রকাশিত হয়। এ বছর ছড়াকার এনায়েত হোসেন স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বই

এছাড়াও পড়ুন:

‘বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু, ইলাই আমরার ঈদ’

দলা পাকানো চালের গুঁড়া চ্যাপটা করে ছোট ছোট বড়া বানানোর পর সেগুলো কড়াইয়ে দিচ্ছিলেন লাভলী বেগম (২৫)। চুলায় খড়ের আগুন কমে আসছিল বারবার। মাথা নিচু করে চুলার নিচ দিকে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায় নাস্তানাবুদ অবস্থা। কুলায় যে পরিমাণ চালের গুঁড়া, তাতে ২০ থেকে ৩০টা বড়া হবে।

ঈদের আয়োজন বলতে কি শুধু এই কয়টি বড়া? লাভলী বলেন, ‘মাইয়ে (মা) কিছু গুড় আনছিলা। গুড়ের হান্দেশ (সন্দেশ) করছি। আর কিতা করমু। সকালে বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু। ইলাই আমরার ঈদ।’ কথা শেষের সঙ্গে সঙ্গে লাভলী বেগমের একটা দীর্ঘশ্বাস যেন হাওরের বাতাসে মিশে গেল। তাঁর পাশে তখন পাখির ছানার মতো বসা দুই সন্তান সাহানা (৫) ও আবির (৩)। তাদের চোখ কড়াইয়ে, তেলের ওপর ভাসতে থাকা বড়ার দিকে।

লাভলী বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরপারের কান্দাহাটি গ্রামে। গতকাল রোববার পড়ন্ত বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে কথা হয় লাভলী ও তাঁর পরিবারের অন্যদের সঙ্গে। এর আগে গত বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্যার সময় ওই গ্রামের যাওয়ার পর প্রথম দেখা হয়েছিল। বন্যা সব শেষ করে দিয়ে গেছে তাঁদের। হাওরের ঢেউয়ে তখন ঘরটি ভেঙে পড়ে।

লাভলী তিন সন্তান নিয়ে মা সবুরা বেগমের সংসারে আছেন। বাবা নেই; নেই মানে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে চলে গেছেন বহু আগে। লাভলীরও একই অবস্থা, স্বামী আরেকটা বিয়ে করে আলাদা থাকেন। এখন সবুরার আটজনের সংসার। ছেলে জহুরুল ইসলামের (২০) স্ত্রী ও এক মেয়ে আছে। এই সংসার মূলত সবুরা বেগম ও ছেলে জহুরুল ইসলামের শ্রম-ঘামে চলে। সবুরা, জহুরুল দুজনই শ্রমিক। যখন যে কাজ পান, সেটাই করেন, কিন্তু অভাব যায় না।

ঘরের চুলায় তেলের বড়া ভাজছেন লাভলী বেগম। সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপারের কান্দিগাঁও গ্রাম থেকে গতকাল রোববার বিকেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ