সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের জন্য নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বিরাট সুযোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, যতক্ষণ না জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে সংসদ ও সরকার গঠন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়।

শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তারেক রহমান। খবর বাসসের।

গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন ও সহযোগিতা চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ৫ আগস্ট ‘কংসরূপী নৃশংস গণহত্যাকারী স্বৈরাচার’ বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। স্বৈরাচার পালালেও গণতন্ত্র কিন্তু এখনও শঙ্কামুক্ত নয়। অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র কিন্তু অব্যাহত রয়েছে। পলাতক স্বৈরাচারের যে দোসর, এরা নানা কৌশলে পুনরায় মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার অপচেষ্টায় প্রতিনিয়ত লিপ্ত।

তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু একটি দেশের জনসংখ্যার চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য নির্ণয়ের জন্য একটি শব্দ মাত্র, এর চেয়ে বেশি কিছু নয়। এ বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে, বিশ্বাসী, অবিশ্বাসী কিংবা সংশয়বাদী, দেশের প্রতিটি নাগরিকের গর্বিত পরিচয়– আমরা বাংলাদেশি।

‘বাংলাদেশ সবার’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, সব নাগরিক সমঅধিকার ভোগ করবে– এটাই বিএনপির নীতি, এটাই বিএনপির রাজনীতি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি এবং বিএনপি বিশ্বাস করে দলমত, ধর্ম, দর্শন যার যার, রাষ্ট্র কিন্তু সবার। ধর্ম যার যার, নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার। সুতরাং একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার জন্য আমাদের সবার সামনে আগামী জাতীয় নির্বাচন একটি বিরাট বড় সুযোগ।

সনাতনী সম্প্রদায়ের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিতাড়িত পলাতক স্বৈরাচারের সময় গত দেড় দশকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় কিংবা তাদের ধর্মীয় স্থাপনা ও বসতবাড়িতে হামলার ঘটনাগুলো যদি আমরা পর্যালোচনা করি তাহলে দেখব, হাতেগোনা দু-একটি ঘটনা ছাড়া বাংলাদেশের সংখ্যালঘুকেন্দ্রিক অধিকাংশ হামলার ঘটনা কিন্তু কোনো ধর্মীয় কারণে হয়নি। ঘটনাগুলো যাচাই করলে দেখা যাবে, এসবের নেপথ্যে ছিল অবৈধ লোভ-লাভের জন্য দুর্বলের ওপর সবলের হামলা। কিংবা অসৎ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য। সে জন্যই আপনাদের প্রতি আহ্বান, আপনাদের ধর্মীয় পরিচয়কে ভবিষ্যতে আর যাতে কেউ হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে না পারে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন।

একটি রাষ্ট্র ও সমাজে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, আইনের শাসন রয়েছে কিনা, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, রাষ্ট্রে যদি আইনের শাসন না থাকে, কেউ নিরাপদ নই। সংখ্যালঘু, সংখ্যাগুরু, দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোনোই বিকল্প নেই। একমাত্র আইনের শাসনই যে কোনো মানুষের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে পারে।

চট্টগ্রাম নগরীর জেএম সেন হল মাঠে আয়োজিত জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন প্রদীপ চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সিটি মেয়র ডা.

শাহাদাত হোসেন। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান নেতারা এবং বিভিন্ন মঠ-মন্দিরের সাধু সন্ন্যাসী।


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত র ক রহম ন ব এনপ ত র ক রহম ন গণতন ত র ব এনপ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ওসমান হাদীর উপর গুলির ঘটনায় মাসুদুজ্জামানের তীব্র নিন্দা 

ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাকে গণসংযোগকালে হিংস্র সন্ত্রাসীদের কর্তৃক গুলিবিদ্ধ করার নৃশংস ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের বিএনপি মনোনিত প্রার্থী, বিশিষ্ট সমাজসেবী, ও ক্রীড়ানুরাগী মাসুদুজ্জামান। 

শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিএনপি নারায়ণগঞ্জ মহানগর আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভা ও মিছিলের মাধ্যমে নেতৃবৃন্দ এ ঘটনার নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের দাবি জানান এবং প্রকৃত দুষ্কৃতিকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। 

সভায় বক্তারা বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং বিরোধী মতকে দমন করতেই পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের সহিংসতা চালানো হচ্ছে, যা গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পরিপন্থী।

প্রতিবাদ সভায় মাসুদুজ্জামান মাসুদ বলেন, “প্রত্যেক দলের রাজনীতি আলাদা, মত ও পথ ভিন্ন হতে পারে। কিন্তু দিন শেষে আমরা সবাই একই দেশের নাগরিক। ভিন্নতা মেনে নিয়েই দেশ ও মানুষের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ থাকা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। 

অথচ একটি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারী চক্র নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে একের পর এক হামলা ও অন্তর্ঘাতমূলক তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদি এবং চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ’র ওপর সংঘটিত ন্যাক্কারজনক হামলা সেই গভীর ষড়যন্ত্রেরই বহিঃপ্রকাশ। আমরা এই বর্বর হামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে হামলার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।” 

একইসাথে তিনি এসব ষড়যন্ত্রকারীর বিরুদ্ধে সর্বস্তরে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং বলেন, “নির্বাচন বানচাল করে দেশকে অস্থিতিশীল করার সকল ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করবে।”

প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এড.জাকির হোসেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, সদস্য সচিব শাহেদ আহমেদ, মহানগর কৃষক দলের সভাপতি এনামুল খন্দকার স্বপন, সাবেক কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু। এছাড়াও ওয়ার্ড বিএনপি, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের স্থানীয় জনগণ এই সময় উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে নেতৃবৃন্দ শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল বের করেন এবং দেশের গণতন্ত্র, নির্বাচন ও জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন জোরদার করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ওসমান হাদীর উপর গুলির ঘটনায় মাসুদুজ্জামানের তীব্র নিন্দা 
  • বিজয় ও বিপর্যয়
  • তারেক রহমান দেশে এলে রাজনীতিতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে: আমীর খসরু
  • ২৫ তারিখে দেশের রাজনীতিতে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে: আমীর খসরু
  • ষড়যন্ত্র রুখতে পারে গণতন্ত্রের প্র্যাকটিস: তারেক
  • মওলানা ভাসানী মজলুমদের পক্ষে ছিলেন, কখনো আপোষ করেননি: টুকু 
  • একটি দল ভোটের প্রয়োজনে আ.লীগের নাম মুখে নেয় না: সালাউদ্দিন আহমেদ
  • খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় কুতুবপুর ইউনিয়ন বিএনপির দোয়া
  • তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল
  • নির্বাচন যত সহজ ভাবা হচ্ছে, তত সহজ হবে না: তারেক রহমান