সংস্কার শেষ না করে নির্বাচন দিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে মন্তব্য করেছেন নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, সংস্কারপর্ব শেষ না করে নির্বাচন দেওয়া হলে যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তাতে কিন্তু সেই আগের অবস্থাই তৈরি হবে। এমনকি বিগত সময়ের চাইতে আরও খারাপ অবস্থা তৈরি হতে পারে। 

শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণশক্তি সভা আয়োজিত ‘জনদুর্ভোগ ও স্থানীয় সরকার বিভাগ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আগে কথা বলার সুযোগ ছিল না। এখন কথা বলার সুযোগ থাকলেও কে শোনে সে কথা। বর্তমান দেশের যে পরিস্থিতি তাতে চলাফেরা নিয়ে আতঙ্কে রয়েছে দেশের মানুষ। কোথাও কোনো নিরাপত্তা নেই। আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে যিনি উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন তিনি যদি আগামী নির্বাচন পর্যন্ত থাকেন তাহলে নির্বাচন পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। 

নিসচার চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আমরা যা বলি তা একটু শুনুন। যদি না শোনেন, তাহলে আমাদের আর কথা বলার দরকার নেই। কারণ সঠিকভাবে যদি নির্বাচন করতে চান, তাহলে আমাদের কথা শুনতে হবে। গত ছয় মাসে পুলিশে অনেক সংস্কার করা সম্ভব ছিল। তা হয়নি। আমাদের মধ্যে এখন ঐক্য নেই। ঐক্য না থাকার ফল ভালো কিছু বয়ে আনবে না। এজন্য সবার আগে রাজনীতিবিদদের মধ্যে সংস্কার আসতে হবে। তাদের মধ্যে বোধোদয় হলে দেশের মানুষ একটা সুন্দর রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখতে পারবে। 

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ড.

হেলাল উদ্দিন, গণমুক্তি জোটের চেয়ারম্যান ড. শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর স থ ত

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় অটোরিকশার চালককে পিটিয়ে হত্যা, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ

কুমিল্লায় সিএনজি গ্যাস নেওয়ার সময় কথা কাটাকাটির জেরে ওমর ফারুক মজুমদার (৪৫) নামে সিএনজি চালিত অটোরিকশার এক চালককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে লালমাই উপজেলার পেরুল এলাকার এমআর সিএনজি ফিলিং স্টেশনের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ওমর ফারুক জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের লুধুয়া এলাকার আবদুল বারেক মজুমদারের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে কুমিল্লা নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লাঙ্গলকোটের লুধুয়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন নিহত ওমর ফারুকের স্বজন ও স্থানীয় সিএনজি চালকরা।

নিহত ওমরের খালাতো ভাই বাকের মজুমদার বলেন, শুক্রবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে লাকসাম বাইপাস এলাকা থেকে সিএনজি গ্যাস নেওয়ার জন্য ওমর ফারুক ভাই রওনা দেয়। এসময় মুদাফফরগঞ্জ সড়কের মাথায় এক অটোরিকশার সঙ্গে সামান্য ধাক্কা লাগে। এতে ওই অটোরিকশা চালক ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে আটকে রাখে। পরে আমি দেখে ঝগড়া মেটানোর চেষ্টা করি এবং তাকে স্ট্যান্ডে গিয়ে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলতে বলি। কিন্তু ওই অটোচালক তা না শুনে মোবাইল ফোনে লোকজন ডেকে এনে ওমর ফারুককে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে লাকসামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

এদিকে ওমর ফারুকের মরদেহ নিয়ে আসার পর কুমিল্লা নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের লুধুয়া এলাকায় সড়ক অবরোধ করেন ফারুকের স্বজন, এলাকাবাসী ও অন্যান্য সিএনজি চালকরা। এ সময় তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। এতে সড়কের দুই পাশে দুই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং পুনরায় সড়কে যান চলাচল শুরু হয়।

লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম রাতে সমকালকে জানান, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে জহির নামে একজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে ওমর ফারুককে পিটিয়ে আহত করা হয়। পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।  জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান পরিচালনা করছে বলে তিনি জানান।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ