ঘোড়াঘাটে মাজারে ভাঙচুর-আগুন তৌহিদি জনতার
Published: 28th, February 2025 GMT
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিরাহিমপুর গুচ্ছগ্রামে অবস্থিত রহিম ভান্ডারী বাবার মাজারে ভাঙচুরের পর পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ তৌহিদি জনতা। এসময় মাজারের খাদেম এবং বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত ভক্তরা মাজার থেকে পালিয়ে যায়।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৫টায় তৌহিদি জনতা ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দিয়ে মাজারে প্রবেশ করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এসময় আগত অতিথিদের বিশ্রামাগার, হালকায়ে জিকির মঞ্চ, প্যান্ডেল, বিভিন্ন স্থাপনা ও ধর্মের নামে গান বাজনা ও খাবার আয়োজনের বিভিন্ন সামগ্রী ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় তৌহিদি জনতা।
স্থানীয় জনতা অভিযোগ করে বলেন, “কথিত পীরের এই মাজারে অসামাজিক কার্যকলাপ, জিকিরের নামে নারী-পুরুষ একত্র হয়ে গান-বাজনা ও ভণ্ডামি করে থাকে। এগুলিকে কোনভাবেই ইসলাম পছন্দ সমর্থন করে না।”
তারা আরও বলেন, “এই অনৈতিক কাজ বন্ধের দাবিতে আমরা এর আগে বিক্ষোভ মিছিল ও গণ সমাবেশ করেছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ওসিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছি। কিন্তু কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমরা এ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ইসলাম ও ধর্মের নামে কোনো ধরনের নোংরামি আমরা ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা কোনভাবেই বরদাস্ত করব না।”
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন হাকিমপুর-ঘোড়াঘাট সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আ.
তিনি বলেন, “ঘটনাস্থল এখনও উত্তেজিত রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করছি।”
ঢাকা/মোসলেম/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভিডিওতে যেভাবে এসেছে তা সঠিক নয়: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আরাকান আর্মির উপস্থিতি ভিডিওতে যেভাবে দেখানো হয়েছে তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, আরাকান আর্মি যুদ্ধ করতেছে অনেকদিন যাবত। এদের অনেকে এই পারে (বাংলাদেশ অংশে) বিয়েও করেছে। এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে যে হারে ভিডিওতে এসেছে সেটি ঠিক নয়। টিকটকের ভিডিও অনেকভাবে করা যায়। কিন্তু সব যে সত্যি তাও না। আবার সব যে মিথ্যা তাও না।
আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরের সার্কিট হাউজে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের সীমান্ত পুরোপুরি রক্ষিত আছে ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আরাকান বর্ডার ইজ ডিফিকাল্ট বর্ডার। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখি কিন্তু ওদের বর্ডার তো আরাকান আর্মি দখল করে আছে। এখন মিয়ানমার থেকে কিছু আমদানি-রপ্তানি করতে হলে মিয়ানমার সরকারকে ট্যাক্স দিতে হয়। আবার আরাকান আর্মিও পয়সা নেয়। এক্ষেত্রে একটি সমস্যা আছে। এটা আপনাদের বুঝতে হবে। সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ ও পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন সন্ত্রাসী তৎপরতা প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমি পাহাড়ে তিনবার চাকরি করেছি। ক্যাম্প কমান্ডার ছিলাম, সিইও ছিলাম এবং বিগ্রেড কমান্ডার ছিলাম। পাহাড়ের অশান্ত অবস্থা তো আপনারা দেখেননি। ওই তুলনা করতে গেলে পাহাড় পুরোটা শান্ত। ছোটখাটো অপহরণ তো সমতলেও হচ্ছে। খালি পাহাড়কে কেন দোষ দেন। পাহাড় আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থায় আছে। অনেক শান্ত আছে।
তিনি বলেন, আমি বাঘাইহাটে ছিলাম। বাঘাইহাটে ল্যান্ডমাইন দিয়ে সৈন্যবোঝাই পিকআপ উড়াই দিছে। সে সময় খবরগুলো আসেওনি। ওই এলাকায় যাতায়াতের সুবিধাও ছিল না। এখন পাহাড়ের অবস্থা এত ভালো ওই রাস্তা দিয়ে আপনারা সাজেক চলে যাচ্ছেন। পর্যটকরা সাজেক চলে যাচ্ছে।
চট্টগ্রামের রাউজানে খুনোখুনি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এখানে কীভাবে কী করা যায় তা আলোচনায় উঠে এসেছে। অনেক সময় সন্ত্রাসীরা অপকর্ম করে পাহাড়ের দিকে চলে যায়। তখন এক সাংবাদিক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরছে। জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যদি এলাকায় থাকে এখনই রেঞ্জ ডিআইজিকে নির্দেশ দিয়ে গেলাম। তাদের বিষয়ে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়।
যৌথ বাহিনীর অভিযান কমে গেছে কিনা জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযান কোনো অবস্থায় কমেনি। অভিযানের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। যে ঘটনা ঘটে সত্যটা আপনারা অবশ্যই প্রকাশ করে দিবেন। এতে আমাদের কাজ করতে সুবিধা হয়। অনেকে ঘটনার সত্যটা প্রকাশ করে না। তদন্ত করে দেখা যায়, ঘটনাটা সত্য না। এতে অসুবিধা হয়। পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশের সাংবাদিকরা এই সুবিধাটা নেয়। জানেন যে তারা মিথ্যা সংবাদ বেশি পরিবেশন করে। আপনাদের সত্য সংবাদ পরিবেশনের সুনাম আছে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সভায় চট্টগ্রাম বিভাগের সকল জেলা প্রশাসক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা অংশ নেন।