জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা-মারপিট ও ভাঙচুরের ঘটনার পর একটি এলাকার গ্রাহকেরা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। সেখানে দ্রুত ব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানানো হয়েছে। এ ছাড়া হামলা ও মারপিটে আহত ব্যক্তিদের দাবি, তাঁদের বিরুদ্ধে উল্টো মামলা দেওয়া হয়েছে। এ মামলার প্রধান আসামি ইন্টারনেট ব্যবসায়ী নুরনবী ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন। আজ শুক্রবার পাকুরদাড়িয়া গ্রামের মোড়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনজয়পুরহাটে ইন্টারনেট সেবার ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে হামলা-মারধর, আহত ১৫২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ইন্টারনেট ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পাকুরডারিয়া গ্রামের মোড়ে হামলা-মারপিট ও ভাঙচুরের ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে সাতজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নেন। তাঁদের মধ্যে দুটি ইউনিয়নের দুজন ছাত্রদলের নেতা রয়েছেন। এ নিয়ে গত বুধবার প্রথম আলো অনলাইন ও পরদিন বৃহস্পতিবার প্রথম আলোর ছাপা সংস্করণে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ইন্টারনেট ব্যবসায়ী নুরনবী ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, তিলকপুর নেটওয়ার্কের মালিক বেলাল হোসেনের কাছ থেকে তিনি চুক্তিতে ব্যান্ডউইথ নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছিলেন। হঠাৎ করেই বেলাল হোসেন তাঁর কাছে ব্যবসার অর্ধেক এবং পরে সম্পূর্ণ মালিকানা দাবি করেন। এতে তিনি রাজি হননি। এ কারণে বেলাল হোসেন তাঁর (নুরনবী ইসলাম) ওপর ওপর ক্ষিপ্ত হন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এলাকায় একটি ফুটবল টুর্নামেন্টে ফ্রি ইন্টারনেট সংযোগের ঘোষণা দিয়েছিলেন নুরনবী। এতে বেলাল হোসেন আপত্তি জানান। এসব ঘটনার জের ধরে বেলাল হোসেন ইন্টারনেট ব্রডব্যান্ডের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে নুরনবী গ্রাহকের চাপে সেবা নিশ্চিতে রাজশাহী থেকে অন্য একটি কোম্পানির ইন্টারনেট সংযোগ নিয়ে ব্যবসা করছিলেন। তবে তিনি বেলালের তার দিয়েই সংযোগ নিয়েছিলেন। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব বাধে। পরে নিজেই তার কিনে সংযোগ দিয়েছেন নুরনবী। তিনি বলেন, ‘এসব কারণে বেলাল আমার ইন্টারনেট ব্যবসা বন্ধ ও মামলার হুমকি দিচ্ছিলেন। এ নিয়ে মঙ্গলবার উভয়ের মধ্যে বৈঠকে বসার কথা ছিল। ওই দিন বসার আগেই বেলাল হোসেন আমাকে হুমকি দিয়ে আমার গলা চেপে ধরেন।’

ইন্টারনেট ব্যবসায়ী নুরনবী ইসলাম আরও বলেন, ‘আমার অনুপস্থিতিতে চন্দনদীঘি বাজারে গ্রামবাসীর সঙ্গে একটি বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে কোনো সমাধান হয়নি। বেলাল তাঁর দলবল নিয়ে তিলকপুর বাজারে ফেরার পথে পাকুরডারিয়া তিনমাথা মোড়ে এসে হামলা-মারপিট ও দোকান ভাঙচুর করেন। এ সময় গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। সেখানে বেলাল হোসেনের লোকজন তিনটি মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যান। এ ঘটনার সময় সেখানে ছিলাম না। বেলাল ও তাঁর লোকজন রায়কালী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহম্মেদকে কুপিয়ে জখম করেন। গ্রামবাসীর কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় বেলাল হোসেনের বড় ভাই বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় আমাকেসহ অন্যদের আসামি করা হয়েছে। এটি একটি মিথ্যা মামলা। ওই ঘটনার পর পাকুরদাড়িয়ার আশপাশের ৭০ জন গ্রাহকের ব্রডব্যান্ড  ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।’

অভিযোগের বিষয়ে ইন্টারনেট ব্যবসায়ী বেলাল হোসেন বলেন, ‘চন্দনদীঘি বাজারের সালিস থেকে ফেরার পথে পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা করা হয়েছে। এতে আমার ভাই তিলকপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ইমদাদুল হকসহ আমাদের ছয়জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আমার ভাই বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। তা ছাড়া আমি কোনো সময় ব্যবসার মালিকানা দাবি করিনি।’

দ্রুত ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগের দাবি জানিয়েছেন পাকুরদাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা। ওই গ্রামের সোহেল হোসেন বলেন, ‘দুই ব্যবসায়ীর দ্বন্দ্বে ঘটনায় হামলা-মারপিট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর আমাদের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করা হয়েছে। আমরা দ্রুত ইন্টারনেট সেবা চালুর দাবি জানাচ্ছি।’

ইন্টারনেট ব্যবসার দ্বন্দ্বে হামলা-মারপিটের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে নিশ্চিত করে আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিছুর রহমান বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ বন দ ব ইসল ম এ ঘটন ঘটন য় র ঘটন ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তৈরি ‘মুজিব বর্ষ ১০০’ পঞ্জিকার এখন অস্তিত্বই নেই

‘মুজিব বর্ষ ১০০’ নামে একটি বিশেষ পঞ্জিকা যৌথভাবে তৈরি করেছিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও কেন্দ্রীয় তহবিল। এতে ব্যয় করা হয়েছিল প্রায় তিন লাখ টাকা। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বানানো এই পঞ্জিকার প্রথম মাসের নাম ছিল ‘স্বাধীনতা’। আর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন (১৭ মার্চ) ছিল এই মাসের প্রথম দিন। ইংরেজি ক্যালেন্ডারের মতো এটিরও গণনা করার কথা ছিল ৩৬৫ দিন ধরে। ২০২০ সালের ১৬ মার্চ পঞ্জিকাটির উদ্বোধন করেছিলেন তখনকার সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে পঞ্জিকাটি শেষ পর্যন্ত আর আলোর মুখ দেখেনি।

এই পঞ্জিকায় ১২টি মাস আছে। তবে কোনো অধিবর্ষ (ইংরেজি লিপইয়ার) নেই। ১২ মাসের নাম দেওয়া হয়েছিল—স্বাধীনতা, শপথ, বেতারযুদ্ধ, যুদ্ধ, শোক, কৌশলযুদ্ধ, আকাশযুদ্ধ, জেলহত্যা, বিজয়, ফিরে আসা, নবযাত্রা ও ভাষা। ২০২০ সালের ১৬ মার্চ শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন শ্রমসচিব কে এম আলী আজম পঞ্জিকাটির মোড়ক উন্মোচন করে গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, পঞ্জিকায় বেশ কিছু সংস্কার প্রয়োজন। সব অংশীজনের মতামত নিয়ে ক্যালেন্ডারটি চূড়ান্ত করে এরপর সরকারি সব দপ্তরে রাখার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বানানো পঞ্জিকা

সম্পর্কিত নিবন্ধ