বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় জেলে কাটান ফিলিস্তিনি নাগরিক নায়েল বারগুতি। ৬৭ বছর বয়সী নায়েল ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি ছিলেন ৪৫ বছর। অবশেষে তাঁর মুক্তি মিলেছে। বৃহস্পতিবার তাঁকে মুক্তি দেয় ইসরায়েল। 

নায়েল ৪৫ বছরের কারা জীবনের মধ্যে কারাগারে একটানা কাটে ৩৪ বছর। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কারাগারে থাকা রাজনীতিবিদ হিসেবে ২০০৯ সালে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে তাঁর নাম উঠেছে। নায়েল বারগুতি ‘আবু আল-নুর’ নামে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মধ্যে পরিচিত। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ইসরায়েলের কারাগারে থাকা ব্যক্তিও তিনি।

রামাল্লার উত্তরে ফিলিস্তিনি গ্রাম কোবারে ১৯৫৭ সালের ২৩ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন নায়েল। ফিলিস্তিনে ব্রিটিশ ও ইসরায়েলি দখলদারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হওয়া ঐতিহ্যবাহী একটি পরিবারে জন্ম তাঁর। মাত্র ১০ বছর বয়সে ১৯৬৭ সালে গাজা উপত্যকা, পূর্ব জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের বাকি অংশের পাশাপাশি নিজ গ্রামে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সাক্ষী হয়েছিলেন তিনি। 

২০১১ সালে হামাস ‘গিলাদ শালিত’ বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে নায়েলকে মুক্ত করে এনেছিল। তবে সেই ছাড়া পাওয়া খুব বেশি দিনের জন্য হয়নি। ২০১৪ সালে তাঁকে আবার গ্রেপ্তার করে ইসরায়েল বাহিনী। 

তাঁর পরিবার বলেছে, এবার মুক্তি পেয়ে ফিলিস্তিনের বাইরে নির্বাসিত জীবন কাটাতে সম্মত হয়েছেন নায়েল। এ শর্তে ইসরায়েল তাঁকে আবার গ্রেপ্তার হওয়া থেকে মুক্ত থাকার কিছুটা স্বাধীনতা দিয়েছে। মিডল ইস্ট আই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

কাঁদতে কাঁদতে গাজার বাসিন্দা বললেন, ‘আমরা তো সব হারিয়েছি, ঈদটা কষ্টের’

ফিলিস্তিনের গাজায় রোববার পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় বিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে এ দিন ছিল না উৎসবের আমেজ। ঈদের দিনও সেখানে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মুসলিমদের কাছে খুশির এ দিনটিতেও গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি।

দীর্ঘ ১৭ মাস ধরে চলা হামলায় গাজায় আর কোনো মসজিদ অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। রোববার তাই উপত্যকাটির বাসিন্দাদের ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মসজিদের বাইরে। আগের দিনে গাজার যেসব শিশু নতুন পোশাক পরে আনন্দ করত, তারা এখন ক্ষুধায়-আতঙ্কে কাতর। ঈদ উপলক্ষে নেই তেমন রান্নার আয়োজন।

ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে গাজার ফিলিস্তিনিরা ঈদের সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদ্‌যাপন করতেন। তবে এখনকার চিত্র ভিন্ন। বহু গাজাবাসী তাঁদের পরিবারের সদস্যকে হারিয়েছেন। রোববার অনেককে দেখা যায় প্রিয়জনের কবরের পাশে। অনেকে হাজির হন হাসপাতালের মর্গে—শেষবারের মতো কাছের মানুষের মরদেহটি দেখতে।

ইসরায়েলের হামলায় গাজার বাসিন্দা আদেল আল-শায়ের তাঁর পরিবারের ২০ সদস্যকে হারিয়েছেন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ঈদের নামাজ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, ‘এই ঈদটা কষ্টের। আমরা আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে হারিয়েছি। আমাদের সন্তান, আমাদের জীবন, আমাদের ভবিষ্যৎ—সবকিছু... আমরা তো সব হারিয়েছি।’

ঈদের দিন স্বজনের কবরের পাশে গাজা নগরীর এক নারী

সম্পর্কিত নিবন্ধ