এবার ছাঁটাই হলেন শত শত আবহাওয়া বিজ্ঞানী ও গবেষক
Published: 28th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্কের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সির (ডিওজিই) কর্মী ছাঁটাই ও সরকারি ব্যয় হ্রাস কর্মসূচির শিকার হলেন শত শত আবহাওয়া পূর্বাভাসকারী এবং ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) কর্মীরা। বিপুল সংখ্যক এসব কর্মীকে বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করা হয় বলে জানান আইনপ্রণেতা ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।
চাকরি হারানো কেন্দ্রীয় সরকারের এই কর্মীদের মধ্যে অনেক আবহাওয়াবিদও রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জাতীয় আবহাওয়া সেবা বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয় থেকে স্থানীয় আবহাওয়া নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন তারা।
এনওএএতে দৃশ্যত দুই দফায় কর্মী ছাঁটাই কার্যকর হচ্ছে। একটি দফায় থাকছেন ৫০০ জন ও আরেকটিতে ৮০০ জন। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মুখ্য বিজ্ঞানী ক্রেগ ম্যাকলিন কিছু সূত্রের কাছ থেকে এ তথ্য পেয়েছেন বলে জানান। ছাঁটাইয়ের শিকার হওয়া কর্মীদের এ সংখ্যা এনওএএর মোট জনবলের প্রায় ১০ শতাংশ।
প্রথম দফায় প্রবেশনাধীনে থাকা কর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে জানিয়ে ম্যাকলিন বলেন, জাতীয় আবহাওয়া সেবা বিভাগে প্রায় ৩৭৫ প্রবেশনাধীন কর্মী রয়েছেন। এ বিভাগ থেকে দৈনন্দিন আবহাওয়া ও দুর্যোগ-সংক্রান্ত পূর্বাভাস দেওয়া হয়ে থাকে।
ধনকুবের মাস্ক ও তাঁর বিভাগ ডিওজিইএর নেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের আকার (জনবল ও খরচ) ছোট করার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ওই কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে।
এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ বেশ কিছু ফেডারেল সংস্থায় নবনিযুক্ত কর্মীদের ব্যাপক হারে ছাঁটাইয়ে ট্রাম্পের নির্দেশ বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ফেডারেল জজ উইলিয়াম আলসাপ স্থগিতে সাময়িক আদেশ দিয়েছেন। এক শুনানির সময় তিনি বলেছেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ নয় এমন শিক্ষানবিশ কর্মীদের চিহ্নিত করে ছাঁটাইয়ের জন্য গত ২০ জানুয়ারি ও ১৪ ফেব্রুয়ারি মেইলের মাধ্যমে নির্দেশনা দিয়েছে ইউএস অফিস অব পারসোনেল ম্যানেজমেন্ট (ওপিএম)। তবে ফেডারেল সংস্থার কোনো কর্মীকে, বিশেষত এক বছরের কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন শিক্ষানবিশ কর্মীদের ছাঁটাইয়ের আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার নেই তাদের। তাই ওই মেইল তৎক্ষণাৎ বাতিল করার আদেশ দেন তিনি।
শুক্রবার নাগাদ প্রায় ৫ হাজার ৪০০ শিক্ষানবিশ কর্মীকে ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, এই ব্যাপক ছাঁটাই কর্মসূচি সরকারি কার্যক্রমে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কেননা, জাতীয় উদ্যান, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, প্রবীণদের জন্য সেবা কার্যক্রমসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে লোকবল কমে যাওয়ায় সংকট সৃষ্টি করতে পারে।
অন্যদিকে, ক্রমবর্ধমান চীন-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য দ্বন্দ্বের অংশ হিসেবে চীনের ওপর নতুন করে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প। ফেব্রুয়ারির শুরুতেই চীন থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার ট্রাম্প আরও জানান, কানাডা ও মেক্সিকোর পাশাপাশি চীনের ওপরও নতুন করে ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে। খবর রয়টার্স ও সিএনএনের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে বিমান
এয়ারক্রাফটের রক্ষণাবেক্ষণ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে প্রবেশ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারের। ফলে অর্থ সাশ্রয়ের আলো দেখছে বিমান কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বোয়িং-৭৩৭ মডেলের মতো আধুনিক মানের একটি এয়ারক্রাফটের ডি-চেক এবং ফুয়েল ট্যাংকের সংযোজনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে দক্ষ বিমান কর্মীরা বলে বিমান সংশ্লিষ্টরা জানান।
তারা বলেন, এরমধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত এ উড়োজাহাজ সংস্থায় দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি সাশ্রয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আধুনিক মানের যে কোনো ধরণের এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় কাজ সফল ভাবে করতে এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি কোনো ইঞ্জিনিয়ারের। এর ফলে মেরামতের জন্য এখন আর বিদেশে নিতে হবে না বিমানের কোনো এয়ারক্রাফট।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের দাবি, নিজস্ব সক্ষমতায় দেশেই এখন বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে দক্ষ জনবল রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। সম্প্রতি জাতীয় পতাকাবাহী এ বিমান সংস্থাকে নিয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চ মহলে নানা আলোচনা–সমালোচনা থাকলেও যাত্রী সেবার মান বিশ্বের নামি–দামি এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশ কম নয় বিমানের। উন্নত যাত্রীসেবা, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে উঠেছে বিমানে।
জানা যায়, বিমানের দুই যুগ পুরনো বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি উড়োজাহাজের (এস-২ এএফএম) ‘ডি-চেক পুরোপুরি সম্পন্ন করছে নিজেদের দক্ষ জনবল দ্বারা। নিজেদের এ ব্যাপক কর্মযজ্ঞ, প্রচেষ্টা আর অর্থ সাশ্রয়ের কথা জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, বিদেশের বদলে দেশেই এখন এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে বিপুল অর্থ সাশ্রয় করছে দক্ষ জনবল। এর আগে এয়ারক্রাফটের সি–চেক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে দক্ষ বিমান কর্মীরা।
এ ব্যাপারে বিমানের প্রকৌশল শাখার কয়েক কর্মকর্তা জানান, প্রায় পাঁচ মাস ধরে বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি–চেক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল একদল কর্মকর্তা–কর্মচারী। প্রায় ৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এয়ারক্রাফটের ডি–চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হন তারা। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তর নিজস্ব সক্ষমতায় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফটের এ চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে প্রায় ২ মিলিয়ন ইউএস ডলার সাশ্রয় হয়েছে বিমানের।
এ ব্যাপারে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. সাফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, দিনদিন দক্ষ জনবল বাড়ছে বিমানে। পাশাপাশি উন্নত হচ্ছে যাত্রীসেবার মান। নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণসহ এয়ারক্রাফটের যাবতীয় কাজ করছে বিমানের দক্ষ প্রকৌশল বিভাগ। শুধু তাই নয় ৭৩৭ আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের মতো ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজও। এরইমধ্যে এসব কাজের সফলতা অর্জন করছে বিমানের প্রকৌশল শাখার দক্ষ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা।
তিনি বলেন, এয়ারক্রাফটের ডি–চেকসহ যাবতীয় কাজ এখন বিমানের হ্যাঙ্গারেই করা সম্ভব হচ্ছে। এ কাজে বিমানে রয়েছে দক্ষ জনবল। উন্নত যাত্রী সেবায় বিশ্বের উন্নত এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশে কম নেই বিমানে।
বিমানের সিইও আরও বলেন, যাত্রীদের জন্য চলতি বছরই বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চালু করছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। এ টার্মিনাল চালুর শুরুতেই ২ বছর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিবে বিমান। এ লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বিমানে। এরইমধ্যে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতিসহ উন্নতমানের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বিদেশ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগ করা হচ্ছে দক্ষ জনবল।
বিমান কর্মকর্তারা বলেন, বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবারমান উন্নত হলে পর্যায়ক্রমে এ কাজ ফের পাবে বিমান। এ চিন্তা মাথায় রেখে কাজ করছে বিমান।