শেখ হাসিনাকে ৩১ বার ফাঁসি দিলেও বিচার শেষ হবে না: বুলু
Published: 28th, February 2025 GMT
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের সাথে বেঈমানি করেছে। তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একইভাবে বাঙ্গালী জাতির সাথে দেশের সাথে বেঈমানি করেছে। এদেশের হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে, এদেশের রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম করেছে। এদেশের ২৭ হাজার কোটি টাকা নিয়ে ভারতে পালিয়েছে। তার বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। হাসিনা যে পরিমাণ নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে তাকে যদি ৩১ বারও ফাঁসি দেওয়া হয়; তাও তার বিচার শেষ হবে না।
আজ শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনা ডা.
স্বাধীনতা সংগ্রামে জিয়াউর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করে বুলু বলেন, শেখ মুজিব পাকিস্তানীদের কাছে জমাই আদরে আত্মসমর্পণ করে আত্মগোপন করেছিলেন। তখন এই বাঙ্গালী জাতিকে দিক নির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান সকল সেনা বাহিনীর সদস্যদের বলেছিলেন, আমরা আজ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম। আর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়।
বুলু চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়ে বলেন, শেখ পরিবারের কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকে এমন প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারেন, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দিব।
সম্মেলনে উপজেলা বিএনপি আহবায়ক মো. আতিকুল আলম শাওনকে সভাপতি, মো. কাজী আশরাদ কে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট চান্দিনা উপজেলা বিএনপি এবং পৌর বিএনপির আহবায়ক এবিএম সিরাজুল ইসলামকে সভাপতি ও সদস্য সচিব সাবেক পৌর মেয়র মো. আলমগীর খাঁনকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্য বিশিষ্ট পৌর বিএনপি’র কমিটি গঠন করা হয়।
চান্দিনা উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. আতিকুল আলম শাওন এর সভাপতিত্বে প্রধান বক্তার বক্তৃতা করেন বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন কেন্দ্রীয় বিএনপি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) হাজী মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি আহবায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার।
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন- উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া, পৌর বিএনপি সভাপতি এবিএম সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. আলমগীর খাঁন, উপজেলা যুবদল আহবায়ক মাও. আবুল খায়ের। এসময় উপজেলা বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল সহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, প্রায় ৬ বছর পর চান্দিনা উপজেলা বিএনপি’র সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। প্রায় ১০ সহস্রাধিক নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ ছিল চান্দিনা ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠসহ আশপাশের সড়কগুলো। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে অনানুষ্ঠানিক ভাবে গঠিত হয়েছিল চান্দিনা উপজেলা ও পৌর বিএনপি’র কমিটি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ প র ব এনপ সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়া সোহাগ এখন নিজেই বিপন্ন
পাড়া-মহল্লার মানুষের কাছে বিপদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত সোহাগ আলম (৪৬)। চেনা-অচেনা মানুষের যে কোনো বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। দু’হাত ভরে দান করতেন। রাজধানীর পুরান ঢাকার এই বাসিন্দা চাকরি করতেন একটি হজ ট্রাভেলিং এজেন্সিতে। সারাদিন পরিশ্রম শেষে সংসারে তাঁর মায়ের কাছে ফিরতেন সোহাগ। এগুলো এখন তাঁর কাছে রূপকথার মতো। দুই বছর আগে তাঁর এমন সচ্ছল ও প্রাণোচ্ছল জীবন হঠাৎ থমকে যায়। একটি সড়ক দুর্ঘটনা বদলে দেয় তাঁর জীবনের চিত্রপট। সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে সোহাগকে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অফিসের কাজ শেষে রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন সোহাগ। হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর রিকশাকে ধাক্কা দেয় একটি পাজেরো গাড়ি। ছিটকে পড়ে গিয়ে কোমর, ডান পা ও স্পাইনাল কর্ডে আঘাত পান তিনি। কিছুদিন পর রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে স্পাইনাল কর্ডে অস্ত্রোপচার করান। কিছুটা সুস্থ হলেও কয়েক মাসের মধ্যে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যা। মেরুদণ্ডের সমস্যা আরও জটিল হতে থাকে। দেশ ও বিদেশের বড় বড় চিকিৎসক দেখানো শুরু করেন। ভারতের মুম্বাই ও চেন্নাই এবং সিঙ্গাপুরেও চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। ব্যয়বহুল এসব চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের পরও সুস্থ হতে পারেননি। চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি সোহাগ। গত দুই বছরে চিকিৎসার পেছনে ১ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। সাড়ে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন গাজীপুরের ১২ শতক জমি। পাশাপাশি নিজের পুরো জীবনের সঞ্চয় ও আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় এতদিন চিকিৎসার খরচ চালিয়ে এসেছেন। বর্তমানে তাঁর ১০ লাখ টাকার বেশি ঋণ। বিগত দুই বছর কোনো আয়-রোজগার নেই। দেশের একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন হলেও নিরুপায় তিনি।
সরেজমিন দেখা যায়, পুরোনো একটি বাড়ির দোতলায় জীর্ণশীর্ণ বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি। কোমর ও পায়ের ব্যথায় মাঝে মাঝে চিৎকার করছেন। অবস্থা এতটাই খারাপ, কয়েক
কদমের বেশি হাঁটতে পারেন না। জীবনসঙ্গী না থাকায় তাঁর দেখাশোনা করেন বৃদ্ধ মা ও ছোট বোন। বোনের বিয়ে হলেও ভাইয়ের সেবা করার জন্য বেশির ভাগ সময় এ বাড়িতেই থাকেন। অভাব-অনটনে দৈনন্দিক খাবারেও টান পড়েছে। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের
সহায়তা এবং ধারদেনা করে চলছে খাবার ও ওষুধের খরচ।
সোহাগ আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার পর হাঁটাচলা করতে পারি না। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকি। চিকিৎসার জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছি, অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারিনি। এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে আর কত টাকা নেওয়া যায়? আমি এখন নিরুপায়।
সোহাগ আলমের ছোট বোন ফারহানা আলম সাথী বলেন, ভাই ছিল খুবই পরোপকারী ও পরিশ্রমী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটির দুর্ঘটনার পর অন্ধকার নেমে আসে সংসারে। নিজেদের যা কিছু ছিল, সব বিক্রি করা শেষ। ধারদেনা করে চলছি দীর্ঘদিন। তিনি তাঁর ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তার আবেদন জানান।
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা– ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, হিসাবের নাম ফারহানা আলম সাথী, ১৩৬১৫১০০৮৩০৬৭, নয়াবাজার শাখা। ০১৬৭৪০০১৮৩৭ (বিকাশ+ রকেট), ০১৭১৮৩৩২৫৬৮ (নগদ)।