সোনারগাঁয়ে নিখোঁজের পর মাদরাসাছাত্র ইব্রাহিম মিয়াকে (৯) হত্যার ঘটনার রহস্য উৎঘাটন করেছে সোনারগাঁ থানা পুলিশ। ইব্রাহিম মিয়াকে তারই আপন বড় ভাই দশম শ্রেণি ছাত্র সাব্বির হোসেন (১৫) খুন করেছে। মূলত সাব্বির হোসেন মোবাইল ফোনে ফ্রি ফায়ার গেমস আসক্ত ছিল। 

ছোট ভাই ইব্রাহিম ফোন নিয়ে খেলা করায় ক্ষিপ্ত হয়ে সাব্বির হোসেন তাকে বাড়ির পাশের লিচু বাগানে নিয়ে নিহতের পায়জামা গলায় পেচিয়ে ফাঁস দিয়ে হত্যা করে। 

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী।

গত শুক্রবার বিকেলে ইব্রাহীম নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর বাড়ির পাশের লিচু বাগানে তার লাশ পাওয়া যায়। নিহত ইব্রাহিম মিয়া সোনারগাঁ পৌরসভার জয়রামপুর গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে। হত্যার ঘটনায় বাবা মহব্বত আলী বাদী হয়ে একটি মামলা করেন।

ওসি মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, আসামি সাব্বির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে নারায়ণগঞ্জের আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে সে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে ছোট ভাইকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়। 

তিনি আরও বলেন, বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাইয়ের খুনের বিষয়টি দুঃখজনক। আমাদের প্রতিটি পরিবারের সন্তানদের প্রতি নজর দেওয়া উচিত। তারা যেন মোবাইল আসক্ত হয়ে না পড়ে।
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ

এছাড়াও পড়ুন:

অন্যের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়া সোহাগ এখন নিজেই বিপন্ন

পাড়া-মহল্লার মানুষের কাছে বিপদের বন্ধু হিসেবে পরিচিত সোহাগ আলম (৪৬)। চেনা-অচেনা মানুষের যে কোনো বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। দু’হাত ভরে দান করতেন। রাজধানীর পুরান ঢাকার এই বাসিন্দা চাকরি করতেন একটি হজ ট্রাভেলিং এজেন্সিতে। সারাদিন পরিশ্রম শেষে সংসারে তাঁর মায়ের কাছে ফিরতেন সোহাগ। এগুলো এখন তাঁর কাছে রূপকথার মতো। দুই বছর আগে তাঁর এমন সচ্ছল ও প্রাণোচ্ছল জীবন হঠাৎ থমকে যায়। একটি সড়ক দুর্ঘটনা বদলে দেয় তাঁর জীবনের চিত্রপট। সর্বস্বান্ত করে দিয়েছে সোহাগকে। 
পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে অফিসের কাজ শেষে রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন সোহাগ। হঠাৎ পেছন থেকে তাঁর রিকশাকে ধাক্কা দেয় একটি পাজেরো গাড়ি। ছিটকে পড়ে গিয়ে কোমর, ডান পা ও স্পাইনাল কর্ডে আঘাত পান তিনি। কিছুদিন পর রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল থেকে স্পাইনাল কর্ডে অস্ত্রোপচার করান। কিছুটা সুস্থ হলেও কয়েক মাসের মধ্যে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, কিডনি ও লিভারের সমস্যা। মেরুদণ্ডের সমস্যা আরও জটিল হতে থাকে। দেশ ও বিদেশের বড় বড় চিকিৎসক দেখানো শুরু করেন। ভারতের মুম্বাই ও চেন্নাই এবং সিঙ্গাপুরেও চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি। ব্যয়বহুল এসব চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের পরও সুস্থ হতে পারেননি। চিকিৎসায় শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি সোহাগ। গত দুই বছরে চিকিৎসার পেছনে ১ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। সাড়ে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি করেছেন গাজীপুরের ১২ শতক জমি। পাশাপাশি নিজের পুরো জীবনের সঞ্চয় ও আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় এতদিন চিকিৎসার খরচ চালিয়ে এসেছেন। বর্তমানে তাঁর ১০ লাখ টাকার বেশি ঋণ। বিগত দুই বছর কোনো আয়-রোজগার নেই। দেশের একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের জন্য প্রায় ২০ লাখ টাকা প্রয়োজন হলেও নিরুপায় তিনি। 
সরেজমিন দেখা যায়, পুরোনো একটি বাড়ির দোতলায় জীর্ণশীর্ণ বিছানায় শুয়ে আছেন তিনি। কোমর ও পায়ের ব্যথায় মাঝে মাঝে চিৎকার করছেন। অবস্থা এতটাই খারাপ, কয়েক 
কদমের বেশি হাঁটতে পারেন না। জীবনসঙ্গী না থাকায় তাঁর দেখাশোনা করেন বৃদ্ধ মা ও ছোট বোন। বোনের বিয়ে হলেও ভাইয়ের সেবা করার জন্য বেশির ভাগ সময় এ বাড়িতেই থাকেন। অভাব-অনটনে দৈনন্দিক খাবারেও টান পড়েছে। আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের 
সহায়তা এবং ধারদেনা করে চলছে খাবার ও ওষুধের খরচ। 

সোহাগ আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার পর হাঁটাচলা করতে পারি না। সারাদিন বিছানায় শুয়ে থাকি। চিকিৎসার জন্য অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছি, অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। কিন্তু স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারিনি। এখন নিঃস্ব হয়ে গেছি। আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে আর কত টাকা নেওয়া যায়? আমি এখন নিরুপায়। 
সোহাগ আলমের ছোট বোন ফারহানা আলম সাথী বলেন, ভাই ছিল খুবই পরোপকারী ও পরিশ্রমী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষটির দুর্ঘটনার পর অন্ধকার নেমে আসে সংসারে। নিজেদের যা কিছু ছিল, সব বিক্রি করা শেষ। ধারদেনা করে চলছি দীর্ঘদিন। তিনি তাঁর ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য সহায়তার আবেদন জানান। 
সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা– ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, হিসাবের নাম ফারহানা আলম সাথী, ১৩৬১৫১০০৮৩০৬৭, নয়াবাজার শাখা। ০১৬৭৪০০১৮৩৭ (বিকাশ+ রকেট), ০১৭১৮৩৩২৫৬৮ (নগদ)। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ