রাজধানীতে অভিযানে চার দিনে গ্রেপ্তার ছাড়াল ১ হাজার, ডেভিল হান্টে মোট গ্রেপ্তার ১২ হাজার
Published: 28th, February 2025 GMT
জননিরাপত্তা বিধান ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে গত বুধবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে আরও ২২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে গত রোববার দিবাগত রাত ১২টা থেকে রাজধানীতে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে ১ হাজার ২১ জন গ্রেপ্তার হলো। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় যৌথ বাহিনীর বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ সারা দেশে আরও ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত গত ২০ দিনে মোট ১১ হাজার ৯২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ পুলিশ সদর দপ্তর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সাঁড়াশি অভিযান সম্পর্কে ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীতে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বৃদ্ধি পাওয়ায় গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। অভিযানের অংশ হিসেবে ডিএমপির ৫০টি থানা ৬৫টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করছে। পাশাপাশি ৫৫০টি টহল দল দায়িত্ব পালন করেছে।
ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল মধ্যরাত পর্যন্ত গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ডাকাত সন্দেহে ১৫ জন, ছিনতাইকারী সন্দেহে ২৪ জন, চাঁদাবাজ সন্দেহে ৫ জন, চোর সন্দেহে ১২ জন, মাদক কারবারি সন্দেহে ২৭ জন ও পরোয়ানাভুক্ত ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানে তাঁদের কাছ থেকে বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত ছয়টি চাকু, দুটি সুইচ গিয়ার, একটি দা, একটি চাপাতি, দুটি কুড়াল, তিনটি পাইপ, একটি মাইক্রোবাস, চারটি মুঠোফোন ও ৬২ হাজার ২৯০ টাকা উদ্ধার করা হয়।
এ ছাড়া উদ্ধার করা মাদকের মধ্যে রয়েছে ৩৭ কেজি ৬৪৫ গ্রাম গাঁজা, ২৩৮ পিস ইয়াবা ও ২০ গ্রাম হেরোইন। সর্বশেষ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৪৯টি মামলা করা হয়েছে।
জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির টহল দলের পাশাপাশি মহানগরীর বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ স্থানে ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) ১৪টি, অ্যান্টিটেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) ১২টি এবং ডিএমপির সঙ্গে র্যাবের ১০টি টহল দল দায়িত্ব পালন করছে। এ ছাড়া ডিএমপির সঙ্গে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএন ২০টি তল্লাশিচৌকি পরিচালনা করেছে।
ডেভিল হান্ট
পুলিশ সদর দপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ বিকেল পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় অপারেশন ডেভিল হান্টে সারা দেশে ৬১৮ জনকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে দুটি টিপ ছুরি, একটি লোহার রড, একটি দেশীয় বন্দুক, দুটি ছুরি, চারটি চাকু ও একটি গুলি। একই সময়ে ডেভিল হান্টের বাইরে সারা দেশে বিভিন্ন মামলায় ৭৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের বাড়িতে সন্ত্রাসী আক্রমণের শিকার হন ১৫-১৬ শিক্ষার্থী। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে এক সভায় অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা ওই রাতে মোজাম্মেল হকের বাড়িতে ডাকাতির খবর পেয়ে তা প্রতিহত করতে গিয়েছিলেন। তখন তাঁদের ওপর হামলা করা হয়। এ ঘটনায় আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আরও পড়ুনসাঁড়াশি অভিযানে ঢাকায় ২৪৮ জন আর ডেভিল হান্টে ৬৩৯ জন গ্রেপ্তার২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর ড এমপ র স
এছাড়াও পড়ুন:
যৌথ অভিযানে এক সপ্তাহে গ্রেপ্তার ২৮০, জানাল আইএসপিআর
ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গত এক সপ্তাহে ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গত ২০-২৬ মার্চ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদাতিক ডিভিশন ও স্বতন্ত্র ব্রিগেডের অধীন ইউনিটগুলো অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সমন্বয়ে এসব অভিযান চালায়। শুক্রবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইএসপিআর জানায়, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দেশব্যাপী পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে চলেছে সেনাবাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় যৌথ অভিযানে তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, একাধিক মামলার আসামি, ডাকাত দলের সদস্য, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী, ভেজাল খাবার প্রস্তুতকারী, কিশোর গ্যাং সদস্য, জুলাই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এবং মাদক কারবারিসহ ২৮০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তাদের কাছ থেকে ১০টি অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র, ১৪৩টি বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ, ককটেল, মাদকদ্রব্য, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত দেশি-বিদেশি অস্ত্র, পাসপোর্ট, চোরাই মোবাইল ফোন, ট্যাব, সিমকার্ড, স্বর্ণালংকার, ট্রলার, মোটরসাইকেল, ট্রাক, ড্রেজার, ভেকু, এক্সক্যাভেটর, ডাম্পার ও নগদ অর্থ উদ্ধার করা হয়। আটক ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ এবং আইনি কার্যক্রম সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নির্বিঘ্নে সড়কে যান চলাচল নিশ্চিত এবং টিকিট কালোবাজারি রোধে সেনাবাহিনী বিশেষ টহলের ব্যবস্থা করেছে। কোনো সন্দেহজনক কার্যকলাপের বিষয়ে নিকটস্থ সেনা ক্যাম্পে তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।