ভারতে তুষারধসে বরফের নিচে আটকা ৪১ শ্রমিক
Published: 28th, February 2025 GMT
ভারতের উত্তরাখন্ডের চামোলিতে ভয়াবহ তুষারধসের ফলে বরফের নিচে আটকা পড়েন ৫৭ জন শ্রমিক। তাদের মধ্য থেকে ১৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বরফের নিচে আটকে রয়েছেন ৪১ জন। ওই শ্রমিকেরা সড়ক নির্মাণের কাজ করছিলেন।
চামোলি জেলার বদ্রিনাথ শহরের মানা এলাকায় শ্রমিকদের একটি শিবিরের ওপর ওই তুষারধস হয়। এই এলাকার পাশেই তিব্বত সীমান্ত। সীমান্ত সড়ক সংস্থা বিআরও এর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সিআর মীনা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলে তিন থেকে চারটি অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে, তবে প্রবল তুষারপাতের কারণে সেখানে উদ্ধার কাজে বেগ পেতে হচ্ছে।
উত্তরাখণ্ড পুলিশের মহাপরিচালক দীপম শেঠ জানিয়েছেন, উদ্ধার অভিযানে ৬০-৬৫ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, গত দুই ঘণ্টা ধরে উদ্ধার কাজ চলছে। প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো প্রতিকূল আবহাওয়া। প্রবল তুষারপাত ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে রাস্তা সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। আমরা বরফ কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে রাস্তা পরিষ্কার করার চেষ্টা করছি।
তুষারধসের পরপরই রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, জেলা প্রশাসন, ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ ও বিআরও এর বিশেষ দল উদ্ধারকাজ করছেন।
চামোলির জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সন্দীপ তিওয়ারি বলেন, প্রবল বৃষ্টি ও তুষারপাতের কারণে হেলিকপ্টার পরিষেবা মোতায়েন করাও সম্ভব হচ্ছে না। পরিস্থিতি অত্যন্ত কঠিন।
এদিকে আবহাওয়া দপ্তর থেকে উত্তরাখন্ডসহ বেশ কয়েকটি পাহাড়ি অঞ্চলে কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ২০ সেন্টিমিটার প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রবল
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রোকারেজ হাউসের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরিতে ছাড়
শেয়ারবাজারের ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়ে ২০২৪ সালের বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন তৈরির সুযোগ দিচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। স্থায়ী সমাধানের জন্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আলাদাভাবে নিজস্ব রূপরেখা বিএসইসিকে জানাতে হবে। তার ভিত্তিতে ‘কেস-টু-কেস’ সিদ্ধান্ত জানাবে সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার বিএসইসির সঙ্গে শীর্ষ ২০ ব্রোকারেজ হাউসের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। লোকসানের বিপরীতে পর্যাপ্ত প্রভিশন না রেখে আর্থিক হিসাব তৈরিতে ছাড় গত ডিসেম্বরে শেষ হয়। ফলে ব্রোকারেজ হাউসগুলো বার্ষিক আর্থিক হিসাব প্রস্তুত করতে পারছিল না। এমন প্রেক্ষাপটে ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর অনুরোধে বৈঠকটি হয়।
বিএসইসির হিসাবে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক মিলে মোট ৩৬ হাজার মার্জিন অ্যাকাউন্টে মূলধনি লোকসান রয়েছে, যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকা। এর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি রেখেছে। অনেক ব্রোকারেজ হাউসে মার্জিন ঋণের অ্যাকাউন্টে ‘নেগেটিভ ইক্যুয়িটি’ রয়েছে। এছাড়া প্রচুর ‘আনরিয়ালাইজড লস’ বা সম্ভাব্য ক্ষতি রয়েছে।
নেগেটিভ ইক্যুয়িটি হলো নিজস্ব মূলধনের বাইরে মার্জিন ঋণ নিয়ে কেনা শেয়ারের দাম যখন এতই কমে যায় যে, সব শেয়ার বিক্রি করেও ঋণের অর্থ আদায়ে ঘাটতি থাকে। শেয়ারে আনরিয়েলাইজড লস হলো– বিনিয়োগের পর বিক্রির আগে বাজারমূল্য কমে যাওয়ায় সম্ভাব্য ক্ষতি। এমন ক্ষতির বিপরীতে মুনাফা থেকে লোকসানের সমপরিমাণ অর্থ মূলধন হিসেবে সংরক্ষণ করতে হয়, যা করতে পারছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। ২০১০ সালের ডিসেম্বরে শেয়ারবাজার ধসে মূলত ‘নেগেটিভ ইক্যুয়িটি’ তৈরি হয়েছে। ঋণে কেনা শেয়ারের বাজারমূল্য ঋণের তুলনায় ১২৫ শতাংশে নামলে ‘ফোর্স সেল’ করে ঋণ আদায় করার আইনি বাধ্যবাধকতা আছে। তবে দরপতন ঠেকানোর নাম করে ২০১১ সাল থেকে বিএসইসি ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংককে ফোর্স সেল করতে বাধা দেয়। এজন্য প্রভিশন সংরক্ষণে ছাড় দিয়ে আসছিল। নতুন কমিশন আর ছাড় দিচ্ছিল না।
এ সংকট সমাধানে আলোচনার অনুরোধ জানিয়ে গত সোমবার ডিএসইর ব্রোকারদের সংগঠন ডিবিএর পক্ষ থেকে বিএসইসিকে চিঠি দেওয়া হয়। জানতে চাইলে আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ডিবিএর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও আইডিএলসি সিকিউরিটিজের এমডি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। দ্রুততম সময়ে আলোচনায় সাড়া দেওয়ায় বিএসইসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন সমকালকে বলেন, শেয়ারবাজারে ‘নেগেটিভ ইক্যুয়িটি’ সমস্যাটি গত এক যুগেরও বেশি সময়ের, যা ‘ক্যান্সারে’ রূপ নিয়েছে। বিএসইসি বলেছে, এটি বয়ে বেড়ানোর সুযোগ নেই। ব্রোকাররাও তা যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সমাধান করতে সম্মত হয়েছে। কমিশন প্রত্যেকের কাছ থেকে পৃথক পরিকল্পনা চেয়েছে। পরিকল্পনা জানানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়নি। তবে চলতি প্রান্তিকের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই।