দেশের ৭০ ভাগ নারী জীবদ্দশায় একবার হলেও সহিংসতার শিকার হন
Published: 28th, February 2025 GMT
দেশের ৭০ ভাগ নারী তাঁদের জীবদ্দশায় অন্তত একবার হলেও শারীরিক, যৌন, মানসিক ও অর্থনৈতিক সহিংসতার শিকার হন। গত বছর (২০২৪) ৪৯ শতাংশ নারীর ওপর এ ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অন্য সদস্যদের তুলনায় স্বামীর মাধ্যমে বেশি নির্যাতনের শিকার হন নারীরা।
‘নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপ ২০২৪’–এ চিত্র উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ও জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ) যৌথভাবে এ জরিপ করে। গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জরিপের প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
এর আগে ২০১১ ও ২০১৫ সালে এ ধরনের জরিপ হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নারীর জীবদ্দশায় স্বামী বা জীবনসঙ্গীর মাধ্যমে সহিংসতার বিস্তৃতি এখনো ৭০ শতাংশ। অর্থাৎ এটি উচ্চমাত্রায় রয়েছে। তবে বিগত ১২ মাসে এই হার ৪১ শতাংশ। এই হার ২০১৫ সালে জীবদ্দশায় ছিল ৭৩ শতাংশ। নন-পার্টনার সহিংসতার চেয়ে জীবনসঙ্গী বা স্বামীর মাধ্যমে সহিংসতা (আইপিভি) বিস্তারের মাত্রা বেশি। জরিপটিতে, ‘জীবনসঙ্গী’ বলতে বর্তমান বা সাবেক স্বামী এবং ‘নন-পার্টনার’ বলতে বর্তমান বা সাবেক স্বামী ব্যতীত উত্তরদাতার ১৫ বছর বয়সের পর হতে জীবনের যেকোনো সময়ে সংস্পর্শে আসা যেকোনো ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।
জরিপে দেখা যায় যে নারীদের অন্য কারও তুলনায় স্বামীদের কাছ থেকে শারীরিক সহিংসতার শিকার হওয়ার আশঙ্কা তিনগুণ বেশি এবং যৌন সহিংসতার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা ১৪ গুণ বেশি। এতে প্রতীয়মান যে বৈবাহিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে শারীরিক ও যৌন সহিংসতার ঝুঁকি অত্যধিক বেশি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্যোগপ্রবণ এলাকার নারীরা তাঁদের জীবদ্দশায় এবং বিগত ১২ মাসে, অদুর্যোগপ্রবণ এলাকার নারীদের তুলনায় জীবনসঙ্গী বা স্বামীর মাধ্যমে বেশি মাত্রায় সহিংসতার সম্মুখীন হন।
জীবনসঙ্গী বা স্বামীর মাধ্যমে সহিংসতার মাত্রা বেশি হলেও সহিংসতার শিকার নারীদের প্রায় ৬৪ শতাংশ তাঁদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কথা কাউকে কখনো বলেননি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পরিবারের সুনাম রক্ষা করার আকাঙ্ক্ষা, সন্তানদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগ এবং এ ধরনের সহিংসতাকে ‘স্বাভাবিক’ বলে মনে করার প্রবণতাসহ বিভিন্ন কারণ থেকে মূলত এই নীরবতা।
গতকালের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে অংশ নেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব আলেয়া আক্তার। এ ছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউএনএফপিএর ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবে, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার ক্লিনটন পবকে। অনুষ্ঠানটির সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
নারীর প্রতি সহিংসতা জরিপের মূল ফলাফল উপস্থাপন করেন বিবিএসের প্রকল্প পরিচালক ইফতেখাইরুল করিম।
এই খানাভিত্তিক জরিপে শহর, গ্রাম, দুর্যোগপ্রবণ, বস্তি এলাকাসহ ২৭ হাজার ৪৭৬ নারীর সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ বনসঙ গ
এছাড়াও পড়ুন:
গতিশীল ও প্রাণবন্ত পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠায় সবার সহযোগিতা চায় বিএমবিএ
বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) ২০তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) মঙ্গলবার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএমবিএ-এর সভাপতি মাজেদা খাতুন। এছাড়া, প্রথম সহ-সভাপতি মোঃ রিয়াদ মতিন; মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান এফসিএস, দ্বিতীয় সহ-সভাপতি; সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম এফসিএমএ; কোষাধ্যক্ষ ইফতেখার আলমসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা ও সাধারণ সদস্যরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভাটি পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হয়। সভায় ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ সমাপ্ত বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরনী উপস্থিত সদস্যদের কাছে উপস্থাপন করা হয়। কোষাধ্যক্ষ জনাব ইফতেখার আলম আর্থিক বিবরনীর উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন এবং আলোচনা শেষে আর্থিক বিবরনীর উপর সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। পরবর্তীতে উপস্থাপিত বার্ষিক প্রতিবেদন ও নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরনী সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত ও অনুমোদিত হয়।
বিএমবিএ-এর সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম ২০২৪ সালের কার্যক্রম ও অর্জনের বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি, অ্যাসোসিয়েশনের ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় এবং সদস্যদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়। সভায় পুঁজিবাজারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি উন্মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে সদস্যরা মতামত প্রদান করেন।
সভাপতি মাজেদা খাতুন বলেন, বিএমবিএ পুঁজিবাজারের স্বার্থ ও সুরক্ষার জন্য সমস্ত স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্বের মাধ্যমে কাজ করতে হবে। সভা শেষে বিএমবিএ নেতৃবৃন্দ একটি গতিশীল ও প্রাণবন্ত পুঁজিবাজার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকল সদস্য ও স্টেকহোল্ডারদের সহযোগিতার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
এসকেএস