বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে জাতি শক্তিশালী হয় না। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান সবারই সমান অধিকার রয়েছে। প্রতিটি নাগরিক এ দেশের মালিক। বিগত সরকার আমাদের মালিকানা কুক্ষিগত করেছিল। আমরা নাগরিকরা আমাদের মালিকানা ফেরত চাই।

শুক্রবার দুপুরে নরসিংদীর মাধবদীতে ড্রিম হলিডে পার্কে সাহা ফাউন্ডেশনের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাহা সম্প্রদায় শুধু এ দেশে নয়, গোটা পৃথিবীতেই অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত এক সম্প্রদায়ের নাম। এ দেশেও তাদের অবদান সর্বমহলে স্বীকৃত। যারা ক্ষমতায় থেকে এ দেশে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে বারবার সংখ্যালঘু নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে গেছেন এই প্রিয়া সাহা। আমি আজ এ অনুষ্ঠানে সেই প্রিয়া সাহাকে শ্রদ্ধা জানাই।

এ সাংবাদিক নেতা বলেন, দেশ ও জাতি গঠনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অপরিহার্য। একটি দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করতে পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকে তাহলে তারা কখনোই একটি শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হতে পারে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির অভাবে সেই জাতির ভেতরে অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এতে করে সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হলে সমাজ ব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ফলে অনিবার্যভাবেই যুদ্ধ ও সংঘাত দেখা দেয়। মানুষে মানুষে আস্থার অভাব দেখা দেয়, অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার পথ বন্ধ হয়ে যায়।দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এমন কি কখনো কখনো দেশের সার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে পড়ে। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের সচেতন হতে হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে বাস করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান। এটি আমাদের গৌরব যে আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। 

কাদের গনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশিরা খুব সচেতনভাবেই বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতা আমাদের আদর্শ। ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১, ৯০ ও ২০২৪ সালে এ জাতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সই রেখেছে। তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর একতাকে চিরভাস্বর করেছে। মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, খাসিয়া, সাঁওতাল নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকটি উৎসবে বাঙালি জাতি এক হয়ে যায়। পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা, বড়দিন, বুদ্ধপূর্ণিমা, বৈসাবি আর জাতীয় দিবসগুলোতে সাম্প্রদায়িক পরিচয় ভুলে এক জাতি হিসেবে সকলে সমান অংশগ্রহণ করে। এটাই আমাদের ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে।

সাহা ফাউন্ডেশনের সভাপতি মলয় কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, ড্রিম হলিডে পার্কের কর্ণধার ও সাহা ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা প্রবীর সাহাসহ সংগঠনের নেতারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

রাঙামাটি কারাগারে কারাবন্দিদের ঈদ উদযাপন

ঈদের দিন পরিবারের সঙ্গে আনন্দ উদযাপনের সুযোগ সবার থাকে না; বিশেষ করে কারাগারে বন্দিদের। বিষয়টি ভেবে বন্দিদের জন্য বিশেষ আয়োজন করেছে রাঙামাটি কারা কর্তৃপক্ষ। কারাবন্দিরা যেন ঈদে নিজেদের মধ্যে আনন্দ ভাগ করে নিতে পারেন সেজন্য ঈদের বিশেষ নামাজ, উন্নতমানের খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা রেখেছেন কারা কর্তৃপক্ষ।  

কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, সকাল সাড়ে আটটায় কারাবন্দিরা কারাগারের মধ্যেই আদায় করছেন ঈদের নামাজ। এরপর সবাই একসঙ্গে বসে ঈদের সেমাই খেয়েছেন। বন্দিদের জন্য  দুপুর ও রাতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের খাবারের আয়োজন। 

ঈদের এই বিশেষ দিনে বন্দিরা যাতে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারে এ জন্য কারা কর্তৃপক্ষ স্বজনদের সুযোগ দিয়েছেন। যারা দেখা করতে এসেছেন তাদের ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। এমন আয়োজনে খুশি স্বজনরাও।

কারাবন্দির সাথে দেখা করতে আসা স্বজন নূর মোহাম্মদ জানান, খুব সুন্দর আয়োজন করেছে এবার জেল কর্তৃপক্ষ। গত বছরও আমি এসেছিলাম আত্মীয়র সাথে দেখা করতে, কিন্তু এবারের আয়োজন ভিন্ন মনে হয়েছে। তারা আমাদের ফুল ও মিষ্টি দিয়ে বরণ করেছে। আমি আত্মীয়র সাথে কথা বলেছি, তিনি জানিয়েছেন জেলের পরিবেশ ভালো, সবাই মিলে ঈদের নামাজ শেষে সেমাই খেয়েছেন। দুপুর ও রাতে ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারাগারে এ ধরনের পরিবেশ সত্যি খুব  ভালো লাগছে।

রাঙামাটি কারাগারের জেল সুপার দিদারুল আলম বলেন, ‘‘স্বজনহীন কারাবন্দিদের মাঝে আনন্দ ছড়িয়ে দিতে কারা কর্তৃপক্ষ এমন আয়োজন করেছে। আমরা চাই জেলের বিষয়ে মানুষের গতানুগতিক যে ধারণা, সেটা পরিবর্তন হোক।’’

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কারাবন্দি ও স্বজনদের নিয়ে ভিন্ন কিছু আয়োজনের নির্দেশনা দিয়েছেন বলেই এমন আয়োজন সম্ভব হয়েছে বলে জানান দিদারুল আলম। 

শংকর//

সম্পর্কিত নিবন্ধ