সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে জাতি শক্তিশালী হয় না: কাদের গনি চৌধুরী
Published: 28th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকলে জাতি শক্তিশালী হয় না। বাংলাদেশে হিন্দু-মুসলমান সবারই সমান অধিকার রয়েছে। প্রতিটি নাগরিক এ দেশের মালিক। বিগত সরকার আমাদের মালিকানা কুক্ষিগত করেছিল। আমরা নাগরিকরা আমাদের মালিকানা ফেরত চাই।
শুক্রবার দুপুরে নরসিংদীর মাধবদীতে ড্রিম হলিডে পার্কে সাহা ফাউন্ডেশনের ষষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাহা সম্প্রদায় শুধু এ দেশে নয়, গোটা পৃথিবীতেই অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত এক সম্প্রদায়ের নাম। এ দেশেও তাদের অবদান সর্বমহলে স্বীকৃত। যারা ক্ষমতায় থেকে এ দেশে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে বারবার সংখ্যালঘু নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের মুখোশ উন্মোচন করে গেছেন এই প্রিয়া সাহা। আমি আজ এ অনুষ্ঠানে সেই প্রিয়া সাহাকে শ্রদ্ধা জানাই।
এ সাংবাদিক নেতা বলেন, দেশ ও জাতি গঠনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অপরিহার্য। একটি দেশে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করতে পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে যদি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না থাকে তাহলে তারা কখনোই একটি শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হতে পারে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির অভাবে সেই জাতির ভেতরে অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এতে করে সমাজ ও দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হলে সমাজ ব্যবস্থা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। চারিদিকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ফলে অনিবার্যভাবেই যুদ্ধ ও সংঘাত দেখা দেয়। মানুষে মানুষে আস্থার অভাব দেখা দেয়, অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার পথ বন্ধ হয়ে যায়।দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। এমন কি কখনো কখনো দেশের সার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে পড়ে। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আমাদের সচেতন হতে হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে বাস করে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান। এটি আমাদের গৌরব যে আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার।
কাদের গনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশিরা খুব সচেতনভাবেই বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতা আমাদের আদর্শ। ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১, ৯০ ও ২০২৪ সালে এ জাতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সই রেখেছে। তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর একতাকে চিরভাস্বর করেছে। মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, খাসিয়া, সাঁওতাল নির্বিশেষে সবাই এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকটি উৎসবে বাঙালি জাতি এক হয়ে যায়। পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা, বড়দিন, বুদ্ধপূর্ণিমা, বৈসাবি আর জাতীয় দিবসগুলোতে সাম্প্রদায়িক পরিচয় ভুলে এক জাতি হিসেবে সকলে সমান অংশগ্রহণ করে। এটাই আমাদের ঐতিহ্য। এ ঐতিহ্য রক্ষা করতে হবে।
সাহা ফাউন্ডেশনের সভাপতি মলয় কুমার সাহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, ড্রিম হলিডে পার্কের কর্ণধার ও সাহা ফাউন্ডেশনের প্রধান উপদেষ্টা প্রবীর সাহাসহ সংগঠনের নেতারা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
বেরোবি শিক্ষকের কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও ফলাফল জালিয়াতির অভিযোগে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. তানজিউল ইসলাম জীবন এবং পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. রশীদুল ইসলামের কুশপুত্তলিকায় জুতাপেটা করেছে শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সড়কে এসব শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে এই প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষ্ণচূড়া সড়কে অভিযুক্ত শিক্ষকদের কুশপুত্তলিকা তৈরি করে তাতে জুতার মালা পরানো হয়েছে। তাতে লেখা হয়েছে- আমি নারীলোভী নিপীড়নকারী শিক্ষক। শিক্ষার্থীরা তাতে জুতাপেটা করছে।
কর্মসূচিতে বেরোবি শিক্ষার্থী রহমত আলী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও রেজাল্ট টেম্পারিংসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। তবে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এসব নিপীড়নের চর্চা বন্ধ করতে বিশেষ সেল গঠনের দাবি জানাচ্ছি।
আশিকুর রহমান বলেন, আমাদের দাবি একটাই অপকর্মের সাথে যে সকল শিক্ষক জড়িত তদন্ত সাপেক্ষে তাদের যেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক এ ধরনের ন্যাক্কারজনক কাজ করতে সাহস না পায়।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তানজিউল ইসলাম ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক রশিদুল ইসলামের স্ক্রিনশট, অডিও রেকর্ড ফাঁস হওয়ার পর যৌন হয়রানির বিষয়টি সামনে এসেছে।