শৈলকুপায় জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই ভাইয়ের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সফিকুল ইসলাম ওরফে সুফি শেখ নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। 

শুক্রবার সকালে উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বন্দেখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হামলাকারীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে এলাকাবাসী। 

আহতরা হলেন– মো.

সামছুল (৩৫), ফিরোজ (৩৫) ও সবুজ (২৫)। তারা সবাই উপজেলার বন্দেখালী গ্রামের বাসিন্দা। 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বন্দেখালী গ্রামের মোবারোক জোয়ার্দ্দারের ছেলে শাকেন জোয়ার্দ্দার ও ইদ্রিস আলী ওরফে ইদুর মধ্যে বাড়ির জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ বিরোধকে কেন্দ্র করে শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে শাকেনের বাড়ির কলাগাছ কেটে জমি দখলের চেষ্টা করেন ইদু। একপর্যায়ে দুই ভাই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে একে অপরের ওপর হামলা চালান। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে ছুটে যান প্রতিবেশী সুফি শেখ। ঘটনার সময় ইদুর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন তিনি।

স্বজনরা তাঁকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুপুর ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু ঘটে। ঘটনার পর ইদু পালানোর সময় তাঁকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন এলাকাবাসী। 

শাকেন জোয়ার্দ্দারের মেয়ে সাবিনা খাতুন জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রায়ই তাঁর চাচা ইদু তাদের ওপর চড়াও হন। শুক্রবারও তিনি একই ঘটনা ঘটাতে আসেন। এ সময় চাচার আক্রমণ থামাতে গিয়ে প্রতিবেশী সুফি শেখ ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তাঁর মৃত্যু হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুম খান বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। 


 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

৩১ বার ফাঁসি দেওয়া হলেও শেখ হাসিনার বিচার শেষ হবে না: বরকতউল্লা বুলু

নিরীহ মানুষকে হত্যা ও গুমে জড়িত শেখ হাসিনার বিচার এই বাংলার মাটিতে হবেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু। তিনি বলেছেন, ‘তবে শেখ হাসিনা যে পরিমাণ নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে, তাকে যদি ৩১ বারও ফাঁসি দেওয়া হয়, তা–ও তার বিচার শেষ হবে না।’

শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনায় উপজেলা ও পৌর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। উপজেলার ডা. ফিরোজা পাইলট বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সম্মেলনে বরকতউল্লা বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছেন। তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনাও একইভাবে বাঙালি জাতির সঙ্গে, দেশের মানুষের সঙ্গে বেইমানি করেছে। এ দেশের হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে নির্বিচার হত্যা করেছে, এ দেশের রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে গুম করেছে।’

বরকতউল্লা আরও বলেন, ‘একাত্তরে শেখ মুজিব পাকিস্তানিদের কাছে জামাই আদরে আত্মসমর্পণ করে আত্মগোপন করেছিলেন। তখন এই বাঙালি জাতিকে দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ ছিল না। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামে শহীদ প্রেসিডেন্ট মেজর জিয়াউর রহমান সকল সেনাবাহিনীর সদস্যদের বলেছিলেন “আমরা আজ থেকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলাম”। আর এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে মহান স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হয়। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জেড ফোর্স গঠন করে দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের নেতৃত্ব্ দিয়ে দেশকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন।’

জিয়াউর রহমানকে বাদ দিয়ে শেখ পরিবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বদলে দিয়েছে অভিযোগ করে বরকতউল্লা আরও বলেন, ‘যে কারণে আওয়ামী লীগকে এখন আর কেউ বিশ্বাস করেন না। একাত্তরে শেখ পরিবারের কেউ যদি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে থাকে, এমন প্রমাণ যদি কেউ দিতে পারেন, তাহলে আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব।’

উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আতিকুল আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনের প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আক্তারুজ্জামান সরকার।

সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আতিকুল আলমকে সভাপতি ও মো. কাজী আশরাদকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট চান্দিনা উপজেলা বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক এ বি এম সিরাজুল ইসলামকে সভাপতি ও সদস্যসচিব মো. আলমগীর খানকে সাধারণ সম্পাদক করে ১০১ সদস্যবিশিষ্ট চান্দিনা পৌর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়। আগামী দুই বছর এই কমিটি দায়িত্ব পালন করবে।

প্রায় ছয় বছর পর চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে অনানুষ্ঠানিকভাবে গঠিত হয়েছিল চান্দিনা উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ