ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ওমেন্স ক্রিকেট লিগে শুক্রবার দিনের একমাত্র ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে গুলশান ইয়ুথ ক্লাব ওমেন্স ক্রিকেট দলকে। আগে ব্যাটিং করে মোহামেডান ১৫৭ রানে গুটিয়ে গেলেও দারুণ বোলিং নৈপূণ্যে তারা গুলশানকে ইয়ুথ ক্লাবকে আটকে ফেলে ৬৭ রানে। 

৯০ রানে লিগের তৃতীয় জয় তুলে নিয়েছে মতিঝিল পাড়ার দলটি। তাদের জয়ের নায়ক অধিনায়ক সালমান খাতুন। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে জ্বলে উঠেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। প্রথমে ব্যাট হাতে ৭৮ বলে ৬ চারে ৫০ রান করেন। পরে বল হাতে ৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৮ রানে পেয়েছেন ৩ উইকেট।

টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে মোহামেডানের ব্যাটিং একদমই ভালো হয়নি। শুরু ছয় ব্যাটসম্যানের কেউই ত্রিশের ঘর পেরোতে পারেননি। সাতে নেমে সালমা দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলের পুঁজি বাড়ান। তাকে সঙ্গ দেন আয়েশা রহমান শুকতারা। ২৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া ইনিংসের শুরুতে দলটির বিদেশী ক্রিকেটার জেসিয়া আক্তার করেন ২২ রান। 

আরো পড়ুন:

বিবিএসের জরিপ
দেশের ৭০ শতাংশ নারী পুরুষ সঙ্গীর সহিংসতার শিকার

দরিদ্র নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান

গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের হয়ে বল হাতে ৩২ রানে ৩ উইকেট নেন হাবিবা ইসলাম পিংকি। 

জবাব দিতে নেমে মোহামেডানের বাঁহাতি পেসার ফারিহা তৃষ্ঞার তোপে এলোমেলো হয়ে যায় গুলশানের ব্যাটিং। ফারিহা ২২ রানে ৪ উইকেট নেন। এছাড়া সালমার ৩ এবং মেঘলা ও রুমানার ১ উইকেটে মোহামেডান অল্পতেই আটকে দেয় ক্লাবটিকে। রিতু মনি দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেন। 

চার ম্যাচে তিন জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে অবস্থান করছে মোহামেডান। গুলশান ইয়ুথ ক্লাবের এটি পঞ্চম ম্যাচে প্রথম হার। আট পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে শীর্ষে।

ঢাকা/ইয়াসিন  

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রিসের পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনির নিচে ঘুমিয়ে আছে ভয়ংকর আগ্নেয়গিরি

গ্রিসের জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ সান্তোরিনি। যেখানে সাদা-নীল বাড়ি, সূর্যাস্ত আর নীল সমুদ্রের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্যের টানে প্রতিবছর হাজার হাজার পর্যটক ভিড় করেন। কিন্তু অনেকের স্বপ্নের এই দ্বীপের নিচেই লুকিয়ে আছে এক ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি, যা আবারও ভয়াবহ বিস্ফোরণে ফেটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

প্রায় ৩ হাজার ৬০০ বছর আগে আগ্নেয়গিরির বিশাল এক বিস্ফোরণে সান্তোরিনি দ্বীপের বর্তমান আকৃতি তৈরি হয়। সেই বিস্ফোরণে দ্বীপের মাঝখান দেবে গিয়ে একটি বিশাল গর্ত বা কালডেরা সৃষ্টি হয়। এর পর এই অঞ্চলটিতে বড় আকারের ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি।

গত বছরের শুরুর দিক থেকে কয়েকবার ভূমিকম্পে দ্বীপটি কেঁপে ওঠায় নতুন করে সামনে এসেছে দ্বীপটির নিচে ঘুমিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা ও তার ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টি। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এ ধরনের ভূমিকম্প ভূগর্ভের ম্যাগমা চেম্বারে চাপ বাড়ার লক্ষণ হতে পারে।

ব্রিটেনের গবেষণা জাহাজ ‘আরআরএস ডিসকভারি’ থেকে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের একটি দল সান্তোরিনির সমুদ্রতলের আগ্নেয়গিরি ও হাইড্রো-থার্মাল ভেন্ট নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন এখন। চলমান এ গবেষণার নেতৃত্ব দিচ্ছেন ব্রিটেনের ন্যাশনাল ওসিওগ্রাফি সেন্টারের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইসাবেল ইয়ো। তিনি জানান, এই গবেষণার মূল উদ্দেশ্য হলো আগ্নেয়গিরির আচরণ বিশ্লেষণ করে কখন বড় বিস্ফোরণের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে তা বুঝতে পারা। সান্তোরিনি দ্বীপের ৭ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে সাগরের নিচে থাকা আরেকটি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি কলোম্বো নিয়েও পর্যবেক্ষণ করছেন তারা।

চলমান এই গবেষণায় রোবটের মাধ্যমে সাগরের ৩০০ মিটার নিচ থেকে গরম পানি, গ্যাস ও আগ্নেয় পাথরের নমুনা সংগ্রহ করছেন তারা। এ ছাড়া ভূকম্পন এবং ভেতরে থাকা জ্বলন্ত লাভার গতিবিধি বোঝার জন্য ভূতাত্ত্বিক মানচিত্রও তৈরি করছেন গবেষকরা। এই গবেষণা শেষে পাওয়া তথ্য গ্রিস সরকারকে সরবরাহ করা হবে। গ্রিসের সিভিল প্রটেকশন এজেন্সি এই গবেষণার ফল বিশ্লেষণ করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করছে। অধ্যাপক পারাস্কেভি নোমিকো– যিনি নিজে সান্তোরিনির বাসিন্দা এবং সরকারিভাবে জরুরি পরিকল্পনায় যুক্ত– বিবিসিকে বলেন, ‘এই গবেষণা আমাদের জানাবে, কোথায় কতটা ঝুঁকি এবং কোন এলাকায় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠলে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে।’

সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের ফলে সান্তোরিনির ১১ হাজার বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন। পর্যটন খাতেও এর প্রভাব পড়েছে। অনেকেই তাদের পূর্বনির্ধারিত ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। স্থানীয় ফটোগ্রাফার ইভা রেন্ডল বলেন, ‘আমার অনেক ক্লায়েন্ট তাদের শুটিং বাতিল করেছেন। আগে এপ্রিল থেকেই কাজ শুরু হতো; এবার মে পর্যন্ত কেউ আসেনি।’

তবে দ্বীপ ছেড়ে চলে যাওয়া অনেকেই জায়গাটির অতুলনীয় সৌন্দর্যের প্রেমে পড়ে আবার ফিরেও আসছেন। সান্তোরিনিতে বিয়ের ছবি তুলতে আসা এক নবদম্পতি বলেন, ‘আমরা ইচ্ছা করেই আগ্নেয়গিরির পাশে বিয়ে করতে চেয়েছি!’ এখন পর্যন্ত তাৎক্ষণিক বিস্ফোরণের আশঙ্কা না থাকলেও বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি ‘শুধু সময়ের ব্যাপার।’ বিবিসি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ