রাজধানীর হাতিরঝিলে দিনদুপুরে অস্ত্র ঠেকিয়ে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের একটি ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই দৃশ্যটি শুটিংয়ের (অভিনয়) দৃশ্য বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানিয়েছে।

আজ শুক্রবার ডিএমপির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীর হাতিরঝিলে ওভারপাসের নিচে ‘অস্ত্র ঠেকিয়ে’ চার যুবকের মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে, সেটি প্রকৃত কোনো ছিনতাইয়ের ঘটনা নয়। এটি একটি সতর্কতামূলক ভিডিও তৈরির শুটিংয়ের দৃশ্য। কয়েকজন কনটেন্ট ক্রিয়েটর রাজধানীতে পাঠাওচালকদের নির্জন স্থানে অবস্থানকালে ছিনতাইয়ের ব্যাপারে সতর্ক করার উদ্দেশ্যে সচেতনতামূলক একটি ভিডিও নির্মাণ করেন। তার অংশ হিসেবে, গত বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে হাতিরঝিলের ২ নম্বর ব্রিজের মহানগর পূর্ব পাশের এলাকায় দৃশ্যটি ধারণ করা হয়। ভিডিও তৈরিতে যে পিস্তল ব্যবহার করা হয়েছে, সেটিও একটি খেলনা পিস্তল। জনসচেতনতামূলক ভিডিওটি তৈরি করে ফেসবুকে পোস্ট করলে পরবর্তী সময় কেউ কেউ সেই ভিডিওর খণ্ডিত অংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছিনতাইয়ের ঘটনা হিসেবে ছড়িয়ে দেন।

ডিএমপির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পূর্ণাঙ্গ ও প্রকৃত ঘটনা সম্পর্কে না জেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ধরনের খণ্ডিত ভিডিও বা সংবাদ প্রচারে জনমনে শঙ্কা ও নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকৃত ঘটনা যাচাই না করে এ ধরনের খণ্ডিত ভিডিও বা সংবাদ প্রচারে সতর্ক থাকার জন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে।

ওই ভিডিওর সূত্র ধরে যোগাযোগ করা হয় ইয়াসিন অপূর্ব নামের একজন কনটেন্ট ক্রিয়েটরের (আধেয় নির্মাতা) সঙ্গে। তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা তিনজন মিলে নিয়মিত কনটেন্ট তৈরি করে থাকেন। তার মধ্যে সচেতনতামূলক কনটেন্টও রয়েছে। দেশে সম্প্রতি ছিনতাই, চুরির ঘটনা আলোচিত হওয়ায় তাঁরা বিভিন্ন সচেতনতামূলক ভিডিও তৈরি করছিলেন। সেগুলো মধ্যে একটি ছিল বাইক ছিনতাইয়ের শুটিং চলাকালে তাঁদের মধ্যে একজন ভিডিওর ছোট একটি ক্লিপ টিকটকে প্রকাশ করেন। এরপর সেটা ভাইরাল হয়।

ইয়াসিন প্রথম আলোকে বলেন, এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় তাঁরা নানা প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। কিন্তু এটা শুধুই সচেতনতার জন্য তৈরি করা। এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি আরও বলেন, রাইড শেয়ারিংয়ে যাঁরা মোটরসাইকেল চালান, তাঁদের জন্য এই ভিডিও তৈরি করা হয়েছিল।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কনট ন ট ড এমপ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষি পরিবারের বউ হয়ে এসেছিলেন, হয়েছেন দেশসেরা কৃষক

চৈত্রের দুপুরে খর রোদে যেন আরও শীর্ণ হয়েছে ফরিদপুর শহরের কুমার নদ। তাপ উঠে আসছে মাটি থেকেও। শহরের অম্বিকাপুরের আলো–হাওয়ায় পল্লিকবি জসীমউদ্‌দীনের কলমে উঠে এসেছিল ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’, ‘সোজন বাদিয়ার ঘাট’–এর মতো সাহিত্যগাথা। ২ এপ্রিল দুপুরে প্রখর রোদের ভেতর গিয়ে দেখা গেল, পল্লিকবির বাড়ির কাছে অম্বিকাপুরের গোবিন্দপুরে যেন আরেক ‘নক্সী কাঁথার মাঠ’ বানিয়েছেন কৃষক সাহিদা বেগম।

সাহিদা মাঠজুড়ে ফলিয়েছেন ‘কালো সোনা’ বলে পরিচিত পেঁয়াজের দানা। কদমের মতো সাদা কেশরের ফুল ফুটে আছে সেখানে। মৌমাছি কমেছে বলে আশপাশে রয়েছে হলদে রঙের ‘হরপা’ নামের একধরনের ফুল গাছ। ওই দিন দুপুরে চড়া রোদে মাঠে ফসলের তদারক করছিলেন সাহিদা। তিনি ফরিদপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জায়গায় উন্নত জাতের পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করে পরিচিতি পেয়েছেন।

সাহিদা বললেন, ‘পেঁয়াজের সাদা কদম শুকিয়ে গেলে ঝরে পড়ে কালো দানা কিংবা বা বীজ। এ বীজের দাম অনেক। ফুলগুলো বড় করতে হয় অনেক ধৈর্য নিয়ে।’ তিনি জানান, মাঠ থেকে তুলে নিয়ে শুকিয়ে মলন দিয়ে বের করতে হয় সেই কালো সোনা। এ কাজে ঝুঁকি অনেক। কারণ, কয়েক মাস ধরে মাঠে বড় করতে হয়। বৃষ্টিপাত, গরম—সবকিছু প্রভাব ফেলে উৎপাদনে। যদিও এখানে যত ঝুঁকি, তত লাভ।

পরিশ্রমী সাহিদা দেশসেরা নারী কৃষকদের একজন। ২০০৪ সালে মাত্র ২০ শতাংশ জায়গায় তিনি চাষাবাদ শুরু করেছিলেন। এ বছর তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ১০ হাজার শতাংশ জমিতে চাষাবাদ করেছেন।

প্রতিদিন সাহিদার কাজকর্ম শুরু হয় ভোরে। পরিবারের সদস্যসহ কৃষিশ্রমিকদের জন্য নিজে রান্না করেন। সকালের খাবার খেয়ে চলে যান খেতে। জমিতে কাজের তদারক করেন। সেখানেই বিকেল গড়ায়। কোনো এক ফাঁকে হয়তো বাসায় ফেরেন। কাজের চাপ থাকলে শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে বসে যান থালা হাতে, দুপুরের খাবার নিয়ে।কাজ শুরু করেন ভোরে

প্রতিদিন সাহিদার কাজকর্ম শুরু হয় ভোরে। পরিবারের সদস্যসহ কৃষিশ্রমিকদের জন্য নিজে রান্না করেন। সকালের খাবার খেয়ে চলে যান খেতে। জমিতে কাজের তদারক করেন। সেখানেই বিকেল গড়ায়। কোনো এক ফাঁকে হয়তো বাসায় ফেরেন। কাজের চাপ থাকলে শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে বসে যান থালা হাতে, দুপুরের খাবার নিয়ে।

অথচ শুরুটা ছিল অভাবের সংসারে একটু সচ্ছলতার প্রত্যাশায়। এখন পেঁয়াজ তোলার সময় সাহিদার ফসলের মাঠে কাজ করে তিন শর বেশি শ্রমিক। মৌসুম ছাড়াও রোজ থাকেন ৫০ থেকে ৬০ জন করে। তাই সাহিদাকে একজন উদ্যোক্তা হিসেবেও চেনে মানুষ।

নিজের ফসলের খেতে নারী কৃষক সাহিদা বেগম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষমতার প্রথম ১০০ দিনে ট্রাম্পের যত আলোচিত উক্তি
  • আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি গোলরক্ষক হুগো গাত্তি আর নেই
  • ‘বিসিবি আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দিয়েছে’
  • শিক্ষকদের বিচারক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ কতটা যৌক্তিক
  • প্রাণনাশের ভয় নিয়ে পালাতে হয়েছিল, দাবি হাথুরুসিংহের
  • খাল–নালায় পড়ে মৃত্যুর দায় নেয় না, তদন্তও করে না
  • ৩১ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
  • নোয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার বৃষ্টি 
  • নাটোরের শিশুর লাশ উদ্ধারের মামলায় পাঁচ কিশোর আটক
  • কৃষি পরিবারের বউ হয়ে এসেছিলেন, হয়েছেন দেশসেরা কৃষক