সংস্কার ও ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের বিচার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মুজিবুর রহমান। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিগত তিনটি নির্বাচন প্রমাণ করেছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হতে পারে না। জালেম পালিয়েছে, জুলুম এখনো পালায় নাই। দেশের মানুষের ওপর যারা জুলুম করেছে, তাদের আগে বিচার হতে হবে। বিচারের আগে নির্বাচন হবে না। সংস্কার ও বিচারের পরেই নির্বাচন হবে, তার আগে কোনো নির্বাচন হবে না। সংস্কার ও ফ্যাসিস্টের বিচার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।’

জামায়াতের সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘ছাত্র-জনতার হাজারো প্রাণের বিনিময়ে আমরা আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। দেশের ১৮ কোটি মানুষ আজ শান্তিতে নিশ্বাস নিতে পারছে। চব্বিশের স্বাধীনতায় যাঁরা জীবন দিয়েছেন, তাঁদের রক্তের দাগ শুকানোর আগেই আরেক দল নির্বাচন চাচ্ছে। মনে রাখবেন নির্বাচনের জন্য নয়, রাষ্ট্রের সংস্কারের জন্য চব্বিশের আন্দোলন হয়েছিল। রাষ্ট্রে শান্তি ফেরাতে আল্লাহর আইন বাংলার মাটিতে বাস্তবায়ন করা হবে, ইনশা আল্লাহ। মনে রাখতে হবে জালিম পালিয়েছে, কিন্তু তাদের দোসররা আজও সংশোধন হয়নি। তাই বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্পষ্ট বক্তব্য, আগে সংস্কার পরে নির্বাচন হবে।’

স্বাধীনতাযুদ্ধের পর আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করার কথা উল্লেখ করে মুজিবুর রহমান আরও বলেন, নিজেদের অপকর্মের কারণে জনরোষে পড়ে ফ্যাসিস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেছেন, যারা আল্লাহর আইন অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করে না, তারা কাফের, ফাসেক ও জালেম। তাই আগামীতে ইসলামপন্থীদের পক্ষে থাকতে হবে। স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়া। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে একদলীয় শাসন কায়েম করেছিল আওয়ামী লীগ। শুধু তা–ই নয়, চারটি সংবাদপত্র রেখে বাকিগুলো বন্ধ করে দিয়েছিল তারা।

উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কুমিল্লা উত্তর জেলা জামায়াতের আমির আব্দুল মতিন, বুড়িচং-ব্রাহ্মণপাড়া সংসদীয় আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী মোবারক হোসেন, উত্তর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির আলমগীর সরকার, সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আনিসুর রহমান।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র রহম ন আল ল হ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি, আরও তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশন

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে আজ বুধবার অনশন শুরু করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। এদিকে কুয়েট উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে শতাধিক আহত হন। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবি জানান। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সোমবার বিকেল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
দুপুর ১২টার দিক ক্যাম্পাসের মহুয়া মঞ্চে অনশন শুরু করেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ৮ নেতা-কর্মী। তাঁরা হলেন, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহবায়ক তৌহিদ সিয়াম, মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল, চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস আনজুম, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম ইমন ও জিয়াউদ্দিন আয়ান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ হোসেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী কাজী মেহরাব তুর্য।

আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল বলেন, ‘আমরা মনে করি, এই উপাচার্য তাঁর পদের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন। তাঁর আর এক মুহূর্ত ওই পদে থাকার অধিকার নেই। অবিলম্বে তাঁকে পদত্যাগ করতে হবে।’

তৌহিদ সিয়াম বলেন, ‘এই কুয়েট রিলেটেড ইস্যুতে সারা বাংলাদেশে যদি একজন ছাত্রেরও কিছু হয়, যদি কুয়েটের উপাচার্য পদত্যাগ না করেন, তাহলে আমরা মনে করি ছাত্র উপদেষ্টাদের গদিতে থাকার দরকার নেই। তাঁরা অপারগতা স্বীকার করে পদত্যাগ করুক।’

প্রতীকী অনশনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের ফটকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি, আরও তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশন
  • লক্ষ্মীপুরে শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় সাংবাদিক কারাগারে
  • দোকানে বসেছিলেন যুবদলকর্মী ইব্রাহিম, তিন অটোরিকশায় এসে বুকে-মাথায় গুলি
  • দোকানে বসেছিলেন যুবদলকর্মী ইব্রাহিম, তিনটি অটোরিকশায় এসে বুকে-মাথায় গুলি
  • লক্ষ্মীপুরে হত্যা মামলায় সাংবাদিক রুবেল গ্রেপ্তার