আমি আমার অভিনয় দক্ষতা দেখাচ্ছি, শরীর নয়: প্রভা
Published: 28th, February 2025 GMT
টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভা। দুই দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে মনকাড়া অনেক কাজ উপহার দিয়েছেন। পর্দায় তার সাবলীল উপস্থিত এখনো মুগ্ধ করে দর্শকদের। নানা কারণে কাজ অনেকটা কম করছেন এই অভিনেত্রী। তবে এই সময়ে রিলস দেখে তার সবচেয়ে বেশি সময় কাটে বলে জানিয়েছেন প্রভা।
কয়েক দিন আগে রাইজিংবিডিকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন সাদিয়া জাহান প্রভা। এ আলাপচারিতার শুরুতে এই অভিনেত্রী বলেন, “কোভিডের সময়ে আমি বেশ কিছু প্ল্যাটফর্মে জয়েন করি। যেমন— টিকটক, তারপর রিলস তৈরি করা। তখন আমি দেখি, সেখানে আমার নামে অনেক ভুয়া অ্যাকাউন্ট। কারণ আমার কোনো অ্যাকাউন্ট ছিল না। সেসব আইডিতে আমার ছবি জুম করে করে ব্যবহার করা হয়েছে। আমি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে আসছি। কারণ আমি অভিনয় করতে পারি। নিজেকে খোলামেলাভাবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি না এবং এটা করতেও চাই না।”
শুটিং সেটের কিছু ব্যাপার প্রভাকে দারুণভাবে আহত করে। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “দেখা যায়, শুটিং সেটে কোনো ক্রু সদস্যের বন্ধু এসেছে। তার আবার ইউটিউব চ্যানেল আছে। নাটকের শুটিংয়ে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকে। আমাকে কোন ফ্রেমে কতটুকু নেবে তা নিয়ে পরিচালকদের প্রতি আমার ভরসা আছে। কারণ তারা আমার পরিবার। কিন্তু ওই যে ক্রুর বন্ধু দূর থেকে ভিডিও ধারণ করল, সে এটি তার ইউটিউবে প্রকাশ করেছে। এমনকি সেই ভিডিও অনেক মানুষ দেখেছে। এই ব্যাপারগুলো আমাকে ভীষণ ট্রিগার করতে ছিল।”
আরো পড়ুন:
প্রথম প্রেমিককে প্রাক্তন মনে করি না, সে আমার শত্রু: প্রভা
আমি ভালোবাসলে সেরাটা দিয়েই ভালোবাসি: প্রভা
পোশাকে যাতে অশালীন না লাগে সে বিষয়ে ভীষণ সতর্ক প্রভা। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “একটা সময়ে আমি আমার মেকআপ ম্যানকে বলতাম, আমার মেকআপ দেখতে হবে না। তুমি দেখ, আমার ওড়না ঠিক আছে কিনা, আমার শাড়ি ঠিক আছে কিনা। কারণ এসব আমাকে ভীষণভাবে বিরক্ত করত।”
শুটিং সেটে গ্রিন রুমের বিষয়টি টেনে প্রভা বলেন, “শুটিং সেটে অনেক পরিচালক আমাকে সহযোগিতা করেছেন। গেস্ট আসুক, তাদের স্বাগত জানাই। তারা যেন ছবি না তুলেন। ছবি সেটা পরিবেশ অনুযায়ী তোলা যেতে পারে। আমরা গ্রিন রুমে সবাইকে আসার অনুমতি দিই না। কারণ শট দিয়ে আসলাম, দেখা গেল একটা কামিজ পরে আছি। কিংবা স্কার্ফ খুলে রাখলাম। আমাদের সহশিল্পী নারী নাকি পুরুষ সেটা কিন্তু ওই সময়ে মাথায় থাকে না। আর উনারাও বিরক্ত হন না। কারণ আমরা সবাই কাজ করছি। আর ওই সময়ে বাইরের মানুষ যারা থাকেন, তারা ফ্যান্টাসির মধ্যে থাকেন। উনারা কী যেন মনে করেন। ভাবেন হয়তো, শুটিং তো আসলে কিছুই না। আমরা যাই, খাই, বাতাস নিই— অনেকটা এরকম। আমার এক বন্ধু বলেছিল, ‘তোদের কাজটা তো অনেক আরামের।”
শরীর নয়, ক্যামেরায় অভিনয় দক্ষতা প্রদর্শন করেন প্রভা। কিন্তু সেটে বাইরের মানুষের কর্মকাণ্ড ভীষণ বিরক্ত করে তাকে। এ বিষয়ে প্রভা বলেন, “যা হোক, গ্রিন রুমটা প্রাইভেট জায়গা। শট দিয়ে আমরা সেখানে বিশ্রাম নিই, কখনো শুয়ে থাকি। এ অবস্থায় বাইরের একজন মানুষ এসে যদি ছবি তুলে এবং তার ছবি তোলার ফ্রেমটা সঠিক না। যারা ক্যামেরাম্যান তারা কিন্তু জানেন আমাদের কতটুকু ফ্রেমবন্দি করবেন। কিন্তু বাইরের মানুষটি তা জানেন না। উনার উদ্দেশ্য হয়তো খারাপ না অথবা উনার উদ্দেশ্যে অসৎ। উনারা চিন্তাই করেন না, এই মেয়েটা একটা বাসার মেয়ে। মেয়েটারও তো একটা পরিবার আছে। আমি কাজ করছি, আমি আমার অভিনয় দক্ষতা দেখাচ্ছি। আমি আমার শরীর দেখাচ্ছি না। আমি যত ম্যাচিউর হচ্ছি, এসব আমাকে তত বেশি বিরক্ত করছে।”
শুটিং সেটের এসব পরিবেশের কারণে কী কাজের সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে এই প্রভা বলেন, “কাজ কমিয়ে দেওয়ার অন্যতম কারণ আমি নিজে। আমার মনে হয়েছে, গতানুগতিক কাজ অনেক করেছি। আরো ভালো কোনো চরিত্র খুঁজছি, যেখানে নিজের ষোলআনা দিতে পারব। এখন নিয়মিত কাজ করতে চাই। কিন্তু কী আছে তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে। তবে অবশ্যই আমি কাজ করতে চাই। আমি শুটিং অনেক মিস করি।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচটি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কয়েক শত মৎস্য ঘের পানিতে ভেসে গেছে।
হঠাৎ করে বেড়িবাঁধ ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঈদের আনন্দ গ্রামবাসীর নিরানন্দে পরিণত হয়েছে। গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙন পয়েন্টে বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করলেও তা ব্যর্থ হয়।
সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা সাড়ে ৯টার দিকে আশাশুনি উপজেলার বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের বাসার কাছ থেকে প্রায় দেড়শত ফুট বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীরগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
আরো পড়ুন:
গঙ্গা পানি চুক্তি নবায়ন: ভারত যাচ্ছে বাংলাদেশের দল
সুনামগঞ্জে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ৪৫ ভাগ শেষ হয়নি
বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সকালে তারা ঈদের নামাজ আদায়ে ব্যস্ত ছিলেন। নামাজ শেষে জানতে পারেন, প্রায় দেড়শত ফুট বেড়িবাঁধ হঠাৎ করে খোলপেটুয়া নদীরগর্ভে ধসে পড়েছে। বিষয়টি গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার করে দ্রুত লোকজনকে ভাঙন পয়েন্টে যেতে বলা হয়। গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙন পয়েন্টে একটি বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণের চেষ্টা করে। দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টা চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। সাড়ে ১১টার দিকে প্রবল জোয়ারের তোড়ে বাধের অবশিষ্টাংশ ভেঙে গিয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করে।
স্থানীয়রা জানান, ইতোমধ্যে বিছট, বল্লবপুর, নয়াখালী, আনুলিয়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকেছে। শত শত মৎস্য খামার ভেসে গেছে। দ্রুততম সময়ে বাঁধ বাধতে না পারলে পার্শ্ববর্তী খাজরা ও বড়দল ইউনিয়নও প্লাবিত হতে পারে।
স্থানীয় আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস বলেন, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। বেড়িবাঁধের প্রায় দেড়শত ফুট নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে হয়েছে। পাউবোর লোকজন ঈদের ছুটিতে। তারা ফেরার চেষ্টা করছেন।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবে) বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, বেড়িবাঁধে ভাঙনের খবর পেয়ে কর্মকর্তাদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকেও জানানো হয়েছে।
ঢাকা/শাহীন/বকুল