চীনে ৪০ উইঘুরকে ফেরত পাঠাল থাইল্যান্ড
Published: 28th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
থাইল্যান্ড সরকার চীনে ৪০ জন উইঘুরকে ফেরত পাঠিয়েছে। চীনে ফেরত পাঠানোর ফলে তারা সম্ভাব্য নির্যাতন এবং এমনকি মৃত্যুর মুখোমুখি হতে পারে বলে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর সতর্কতা সত্ত্বেও এ পদক্ষেপ নিয়েছে থাই কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় থাইল্যান্ডের ব্যাপক সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে বিবিসি বলছে, ব্যাংককের একটি আটক কেন্দ্রে ১০ বছর ধরে আটক রাখার পর এই দলটিকে চীনের জিনজিয়াং অঞ্চলে ফেরত পাঠানো হয়েছে। চীনা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হলে উইঘুরদের ওপর নিপীড়ন এবং নির্যাতনের ঝুঁকি রয়েছে- এমন সতর্কতা সত্ত্বেও তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক এটিকে ‘আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও মানদণ্ডের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে অভিহিত করেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এক বিবৃতিতে রুবিও বলেন, ‘এই আইনটি সবচেয়ে অরক্ষিতদের সুরক্ষা সংক্রান্ত থাই জনগণের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের পরিপন্থি এবং মানবাধিকার রক্ষায় থাইল্যান্ডের প্রতিশ্রুতির সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ। উইঘুররা যেসব দেশে সুরক্ষা চায় সেসব দেশের সরকারকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন জাতিগত উইঘুরদের জোর করে চীনে ফেরত না পাঠায়। ’
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে থাইল্যান্ডের পুলিশ প্রধান নিশ্চিত করেন, ৪০ জন উইঘুরকে একটি চার্টার্ড বিমানে করে চীনে পাঠানো হয়েছে। মূলত চীনের প্রত্যন্ত পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলের তুর্কিভাষী মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুররা বেইজিংয়ের নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছে।
যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা এটিকে গণহত্যা হিসেবে অভিহিত করেছে। এমনকি জিনজিয়াংয়ে জাতিগত সংখ্যালঘুদের প্রতি বেইজিংয়ের আচরণ ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে বলেও ২০২২ সালে জানিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।
এনজে
.উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
স্মার্টফোনে দুই সপ্তাহ ইন্টারনেট ব্যবহার না করলে যে উপকার পাওয়া যায়
বর্তমান প্রযুক্তিনির্ভর যুগে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। অফিসের কাজ, পড়াশোনা, কেনাকাটা, বিনোদন, এমনকি সামাজিক যোগাযোগ—সব ক্ষেত্রেই স্মার্টফোন এখন অপরিহার্য। তবে সব সময় ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকার এই প্রবণতা আমাদের অজান্তেই মনের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার একদল গবেষক জানিয়েছেন, স্মার্টফোনে ইন্টারনেট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখলে মানসিক স্বাস্থ্যে উল্লেখযোগ্য ইতিবাচক পরিবর্তন হয়। গবেষণায় অংশ নেওয়া ৯১ শতাংশ ব্যক্তি স্মার্টফোনে সাময়িকভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার না করায় নিজেদের আগের তুলনায় আরও সুস্থ অনুভব করেছেন।
পিএনএএস নেক্সাস সাময়িকীতে প্রকাশিত ‘ব্লকিং মোবাইল ইন্টারনেট অন স্মার্টফোনস ইমপ্রুভস সাসটেইন্ড অ্যাটেনশন, মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড সাবজেকটিভ ওয়েল-বিয়িং’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, মাত্র দুই সপ্তাহ স্মার্টফোনে ইন্টারনেট বন্ধ রাখলেই ব্যবহারকারীদের মানসিক স্বাস্থ্য, মনোযোগের স্থায়িত্ব এবং জীবনমানে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হতে পারে। এ বিষয়ে গবেষকদলের সদস্য এবং ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট অস্টিনের মনোবিজ্ঞানী অ্যাড্রিয়ান এফ ওয়ার্ড বলেন, ‘আমরা দেখেছি, স্মার্টফোনে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার পর গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মানসিক স্বাস্থ্য, ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি এবং মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা অনেকটাই বেড়ে গেছে।’
আরও পড়ুনস্মার্টফোনে আড়ি পাতা যেভাবে বুঝবেন, যেভাবে ঠেকাবেন১২ অক্টোবর ২০২৪গবেষণা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার ৪৬৭ জন ব্যক্তিকে ‘ইন্টারভেনশন’ ও ‘কন্ট্রোল’ নামের আলাদা দুটি গ্রুপে বিভক্ত করা হয়। ইন্টারভেনশন গ্রুপের অংশগ্রহণকারীদের স্মার্টফোনে একটি বিশেষ অ্যাপ ইনস্টল করা হয়, যা দুই সপ্তাহের জন্য তাঁদের মোবাইল ইন্টারনেট (ওয়াই-ফাই ও মোবাইল ডেটা) সম্পূর্ণ বন্ধ রাখে। তবে ফোনকল, মেসেজ এবং ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে, কন্ট্রোল গ্রুপের সদস্যদের প্রথম দুই সপ্তাহ স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারে পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়। এরপর তাঁদেরও একই ধরনের ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়। এরপর গবেষকেরা অংশগ্রহণকারীদের স্থায়ী মনোযোগ, মানসিক স্বাস্থ্য এবং ব্যক্তিগত সন্তুষ্টি পর্যালোচনা করেন। গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রেখেছিলেন, তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য, জীবনমান এবং মনোযোগের স্থায়িত্বে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনে দৈনন্দিন ইন্টারনেট ডেটার খরচ কমাবেন যেভাবে২৯ অক্টোবর ২০২৪গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল এসেছে মনোযোগ উন্নতির ক্ষেত্রে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, স্মার্টফোনে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা অংশগ্রহণকারীরা স্থায়ী মনোযোগ পরীক্ষায় ভালো করেছেন। তাঁদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেন তাঁদের বয়স ১০ বছর কমে গেছে। এ থেকে বোঝা যায়, স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার মস্তিষ্কের মনোযোগ ধরে রাখার সক্ষমতা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। শুধু তা–ই নয়, স্মার্টফোনে ইন্টারনেট বন্ধ রাখলে উদ্বেগ ও বিষণ্নতার লক্ষণও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসে।
আরও পড়ুনস্মার্টফোনের কার্যক্ষমতা ভালো রাখার ৭ উপায়২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গবেষকদের মতে, স্ক্রিন টাইম কমে যাওয়ায় অংশগ্রহণকারীরা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী নানা কাজে যুক্ত হন। এমনকি এই ইতিবাচক প্রভাব অনেক ক্ষেত্রে কিছু বিষণ্নতা প্রতিরোধী ওষুধের চেয়েও বেশি কার্যকর ছিল। গবেষণায় দেখা গেছে, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখা অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের জীবনের প্রতি আরও সন্তুষ্ট ও সুখী অনুভব করেছেন। তাঁরা আগের তুলনায় ভালো মেজাজে ছিলেন এবং নেতিবাচক অনুভূতি কম প্রকাশ করেছেন। গবেষকেরা মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডিজিটাল বিভ্রান্তি থেকে দূরে থাকায় মানসিক উন্নতি হয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখায় অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি যোগাযোগে বেশি সময় ব্যয় করেছেন। এতে তাঁদের সামাজিক বন্ধন আরও দৃঢ় হয়েছে। তাঁরা শারীরিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়েছেন, যেমন অবসর সময়ে ব্যায়াম করেছেন, যা মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ভূমিকা রেখেছে। প্রকৃতির সান্নিধ্যে বেশি সময় কাটানো, স্ক্রিন টাইম কমানো এবং ঘুমের মান উন্নত হওয়া তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
আরও পড়ুনস্মার্টফোনে ম্যালওয়্যার থাকার ৬ লক্ষণ১১ নভেম্বর ২০২৪