সিআরবির বড় বড় গাছ কেন মরে যাচ্ছে, যা জানা গেল
Published: 28th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত সিআরবি এলাকার বড় বড় গর্জন ও শিরীষগাছগুলো আস্তে আস্তে তাঁদের প্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলছে। ১০ বছর ধরে গাছগুলোর ডালপালায় মড়ক লেগেছে। কোনো রোগ কিংবা ছত্রাকের আক্রমণে নয়, বয়স ও কংক্রিটের আস্তরণের কারণে গাছগুলো মৃত্যুপথযাত্রী। সম্প্রতি বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) অনুসন্ধান ও গবেষণায় এসব তথ্য উঠে আসে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবি এলাকাটি চট্টগ্রামের সবুজ ও উন্মুক্ত এলাকার মধ্যে অন্যতম। এ এলাকায় শিরীষ, গর্জন, সোনালুসহ নানা প্রজাতির গাছপালা রয়েছে। এসব ছায়াদানকারী গাছগুলোর টানে সারা দিন নগরের নানা এলাকার মানুষ ছুটে যান সিআরবিতে। বড় গাছগুলোর বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছরের কম নয়। দুই বছর আগে এই গাছগুলো কেটে সেখানে হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিলেন চট্টগ্রামের মানুষ। প্রতিবাদের মুখে ওই প্রকল্পও বাতিল হয়।
তবে এখানকার বড় গাছগুলোতে মড়ক লেগেছে কয়েক বছর আগে থেকে। গাছের ডালপালা শুকিয়ে ভেঙে পড়ছিল। এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য তখনই একবার বন বিভাগের লোকজন সিআরবি এলাকা পরিদর্শন করেছিলেন। বর্তমানে গাছগুলোর ডালপালায় মড়ক আরও বেশি হয়েছে। সম্প্রতি রীতু পারভীন নামের এক পরিবেশকর্মী বিষয়টি পুনরায় বন বিভাগের নজরে আনেন। এরপর বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) বন রক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো.
অনুসন্ধান দলের প্রধান বিএফআরআইয়ের বন রক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. আহসানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের আইল্যান্ডের মাঝখানে থাকা গর্জন ও শিরীষগাছগুলোর ডালপালা মারা যাচ্ছে। এর কয়েকটি কারণের মধ্যে গাছগুলোর বয়স একটা কারণ। এ ছাড়া গাছের গোড়া চারদিক থেকে কংক্রিটের আস্তরণে ঢাকা। ফলে শিকড় বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পানি–আলো–বাতাস কম পাচ্ছে। এমনিতে গাছগুলোর বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছর, তাই আস্তে আস্তে জীবনশক্তি ক্ষয় হচ্ছে।
সিআরবিতে সড়ক বিভাজকের প্রস্থ আনুমানিক দুই মিটার। বিভাজকে আটটি গর্জনগাছ ও একটি সোনালুগাছ পাওয়া যায়। এ ছাড়া রাস্তার পাশের ফুটপাতে ছয়টি গর্জনগাছ দেখা গেছে। রাস্তার অপর পাশে শতবর্ষী একটি শিরীষগাছ রয়েছে, যার আয়ুষ্কাল প্রায় শেষ পর্যায়ে। গর্জনগাছগুলোর বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছর। গাছগুলোর গড় উচ্চতা ২৫ থেকে ৩৫ মিটার এবং বেড় ২৫০ থেকে ৩০০ সেন্টিমিটার।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেশির ভাগ গর্জনগাছের আগা ও ডালপালা শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। গাছের পাতা হলুদ হয়ে ঝরে পড়েছে। কিছু গাছের বাকল শুকিয়ে গেছে। আক্রান্ত গাছের শিকড়ে পচন দেখা গেছে।
গবেষক দল সূত্রে জানা গেছে, গাছগুলোর গোড়ার মাটি ও আক্রান্ত ডালের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয়েছে। গাছের মৃত অংশে এবং মাটিতে কোনো রোগ সৃষ্টিকারী প্যাথোজেনিক ছত্রাকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। কয়েক প্রজাতির সাধারণ পরিবেশগত ছত্রাক শনাক্ত করা হয়েছে, যা মূলত মৃত বা ক্ষতিগ্রস্ত গাছে জন্মায়। এসব ছত্রাক পরিবেশে বাস্তু, পানি ও মাটিতে সচরাচর এমনিতেই পাওয়া যায়, যা গর্জন ও শিরীষগাছের জন্য ক্ষতিকর নয়। আক্রান্ত গাছগুলোতে কোনো ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা যায়নি বলেও গবেষকেরা জানান।
গোড়ার চারপাশে কংক্রিটের আস্তরণ। ডালপালা শুকিয়ে ভেঙে পড়েছে গাছটির। আজ সকালে সিআরবিতেউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র রহম ন স আরব
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের জামাতে বায়তুল মোকাররমে মুসল্লিদের ঢল
যথাযথ মর্যাদায় ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে সারাদেশে উদযাপিত হচ্ছে মুসলমানদের বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর।
সোমবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল ৭টায় ঈদের প্রথম জামাত ও সকাল ৮টায় দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের ঢল নামে।
বায়তুল মোকাররমে ঈদ জামাতে নাশকতা ঠেকাতে পল্টন মোড়সহ মসজিদের আশেপাশে ব্যাপক পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিনে সকাল সাড়ে ৬টার মধ্যেই বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের উপস্থিতিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। পুলিশি তল্লাশি শেষে মুসল্লিরা প্রথম জামাতে অংশ নেন।
এদিকে বায়তুল মোকাররমে ঈদের আরও তিনটি জামাত পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদের নামাজের প্রথম জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মুহিবুল্লাহিল বাকী। মুকাব্বির ছিলেন মসজিদের অবসরপ্রাপ্ত মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান।
দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেন বায়তুল মোকাররমের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির মসজিদের প্রধান খাদেম মো. নাসিরউল্লাহ।
সকাল ৯টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে তৃতীয় জামাত। এতে ইমামতি করেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস মাওলানা মুফতি ওয়ালিউর রহমান খান। মুকাব্বির জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আবদুল হাদী।
সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে চতুর্থ জামাত। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুবাদ ও সংকলন বিভাগের সম্পাদক মুশতাক আহমদ। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম মো. আলাউদ্দীন।
সকাল পৌনে ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত। ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ। মুকাব্বির থাকবেন জাতীয় মসজিদের খাদেম মো. আক্তার মিয়া।
প্রসঙ্গত, পাঁচটি জামাতের কোনোটিতেই নির্দিষ্ট ইমাম উপস্থিত না থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মাওলানা মো. জাকির হোসেনকে রাখা হয়েছে।
ঢাকা/এনটি//