অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনীর মঞ্চ। এক তরুণ দুই পা ওপরে তুলে পায়ের পাতার ওপর তুলে নিয়েছেন একটি ড্রাম (ব্যারেল)। ওই ড্রামের ওপর দাঁড়িয়ে কসরত দেখাচ্ছে ৯ বছরের আলিফ। দর্শকদের শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা; কখন যেন আলিফ পড়ে যায়। ড্রামে দাঁড়িয়েই দর্শকদের প্রতি উড়ন্ত চুমু দিয়ে আলিফ শেষ করে প্রদর্শনী। দর্শকেরাও হাততালি দিয়ে তাকে অভিবাদন জানান।

নওগাঁ শহরের এ-টিম মাঠে বুধবার সন্ধ্যায় এই অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হয়ে এই মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী চলে রাত সাড়ে নয়টা পর্যন্ত। ভাষার মাসজুড়ে বহুভাষিক উৎসবের অংশ হিসেবে শিল্পকলা একাডেমির নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের আয়োজনে ও নওগাঁ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পকলা একাডেমির ২৬ সদস্যের একটি দল প্রদর্শনীতে অংশ নেয়। শিল্পীরা একে একে প্রদর্শন করেন গ্রুপ সাইকেল, রিং ড্যান্স, রোলার ব্যালান্স, ল্যাডার ব্যালান্স, দিয়াবো, ব্যারেল ব্যালান্স, পাইপ ব্যালান্স, হাই সাইকেল, ফায়ার অ্যান্ড র্যাম্পসহ ১৪ ধরনের অ্যাক্রোবেটিক পরিবেশনা।

আলিফের বাড়ি লালমনিরহাট জেলা শহরে। সে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির তালিকাভুক্ত অ্যাক্রোব্যাট শিশুশিল্পী। তাঁর মা শিউলী বেগম সার্কাস দলের শিল্পী; বাবা শফিকুল ইসলাম নির্মাণশ্রমিক। আলিফ চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। ছোটবেলা থেকেই মায়ের কাছ থেকেই সে ও তার বড় দুই বোন বিভিন্ন শারীরিক কসরত শিখেছে। আলিফ তিন বছর আগে নীলফামারী শিল্পকলা একাডেমিতে অ্যাক্রোবেটিক শিল্পের ওপর একটি কর্মশালায় অংশ নেয়। পরে সেখান থেকে বাছাই করে তাকে শিল্পকলা একাডেমির অধীন রাজবাড়ী অ্যাক্রোব্যাট প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।

নওগাঁয় আসা অ্যাক্রোব্যাট দলের সমন্বয়কারী ও রাজবাড়ী অ্যাক্রোব্যাট সেন্টারের প্রশিক্ষক জালাল উদ্দিন জানান, অ্যাক্রোবেটিক সেন্টারে আবাসিক থেকে এক বছর ধরে আলিফ প্রশিক্ষণ নিয়েছে। বর্তমানে সে শিল্পকলা একাডেমির তালিকাভুক্ত শিল্পী। শিল্পকলা একাডেমির কাছ থেকে বিশেষ শিল্পী ভাতা পায় সে। কোনো প্রদর্শনীতে তাকে প্রয়োজন পড়লে বাড়ি থেকে ডেকে আনা হয়।

একটি প্রদর্শনীতে অংশ নিলে আলিফ সম্মানী হিসেবে ১ হাজার টাকা ও খাবার বাবদ ৭০০ টাকা পায়। কোনো কোনো মাসে তিন থেকে চারটি প্রদর্শনী হয়। আবার কোনো মাসে প্রদর্শনী থাকে না। প্রদর্শনী শেষে কথা হয় আলিফের সঙ্গে। সে জানায়, প্রদর্শনী থেকে ভাতা বাবদ যে টাকা পায়, তাতে লেখাপড়ার খরচ চলে যায়। সংসারের খরচ চালানোর জন্য মায়ের হাতেও সে টাকা দেয়।

আলিফ বলে, ‘কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য এলা অল্প কিছু প্রশিক্ষণ নিছি। আরও ভালোভাবে খ্যালা ট্রেলিং লিতে চাই। ভালো ট্রেলিং প্যালে হামরাও চীন, রাশিয়া, কোরিয়া ও জাপানের খ্যালোয়ারের মতন পুরস্কার পামু। শুধু দ্যাশে লয়, বিদ্যাশেও পুরস্কার চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এক ড ম র শ ল পকল

এছাড়াও পড়ুন:

আশা করি অন্তবর্তী সরকার জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকের এ দিনে আমরা আশা করব, যেই দায়িত্ব নিয়েছেন সেই দায়িত্বে সবাই সফল হবেন এবং বিশেষ করে অন্তবর্তী সরকার জনগণের কাছে তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবে। তিনি বলেন, আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকেও অবশ্যই সেই প্রতিশ্রুতি পালন করব বলে শপথ নিয়েছি।

ঈদের দিন আজ সোমবার সকালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

ফ্যাসিবাদ সরকারের শাসনামলের থেকে ‘এবার ঈদ আনন্দময় পরিবেশে হচ্ছে’ বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশি মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি। দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন, সেই দোয়া চেয়েছি।

গত ১৫ বছরের ঈদের সঙ্গে এবারকার ঈদের কি পার্থক্যটা কি- জানতে চাইলে তিনি বলেন, অনেক পার্থক্য। এবার আমরা মুক্ত পরিবেশে একটা আনন্দময় পরিবেশে আমরা ঈদ পালন করছি।

আজ সকাল সাড়ে ১১টায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান শেরে বাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে এসে তার কবরে ফুল দেন এবং দোয়া করেন। এ সময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন- আহমেদ আজম খান, আমান উল্লাহ আমান, মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কবির রিজভী, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মীর সরফত আলী সপু, রফিকুল ইসলাম, সাইফুল আলম নিরব, মীর নেওয়াজ আলী, রফিক শিকদার, এসএম জাহাঙ্গীর, আমিনুল হকসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়া ও তারেকের ঈদ শুভেচ্ছা

জিয়াউর রহমানের কবর জিয়ারতের পরে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদেন বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যদের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের (গণমাধ্যম) সবাইকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি… ঈদ মোবারক… আপনাদের মাধ্যমে আমরা পুরো দেশবাসীর কাছে ঈদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি… ঈদ মোবারক।

তিনি বলেন, আজকে আমরা জিয়াউর রহমানের মাজার জিয়ারত করতে এসেছিলাম। আমরা পরম করুণাময় আল্লাহতালার কাছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি। আমরা একইসঙ্গে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কনিষ্ট পুত্র আরাফাত রহমান কোকোর আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, একইসঙ্গে বিগত গণতান্ত্রিক আন্দোলনগুলোতে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদেরও আত্মর মাগফেরাত কামনা করেছি। বিশেষ করে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা এদেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি এবং গণতন্ত্রের জন্য বিগগ ১৫ বছর ও জুলাই-আগস্টে যারা শহীদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেছি।”

ফখরুল বলেন, আজকের এই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনে প্রত্যেকটি বাংলাদেশি মানুষ যেন আনন্দের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য আল্লাহর কাছে আমরা দোয়া করেছি। দোয়া চেয়েছি আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে দ্রুত আমাদের কাছে ফিরে আসেন এবং আমাদের নেতা তারেক রহমান তিনি যেন অতি শিগগিরই আমাদের মাঝে ফিরে আসেন সেই দোয়া চেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আমরা যে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করেছি, মানুষের ভোটের অধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছি, মানুষের ভাতের অধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছি, মানবাধিকারের জন্য যে সংগ্রাম করেছে, সেই সংগ্রাম যেন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে সেজন্য পরম আল্লাহর কাছে দোয়া করেছি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ