Samakal:
2025-04-01@19:15:05 GMT

ম্যাক্সওয়েল বনাম আফগানিস্তান

Published: 28th, February 2025 GMT

ম্যাক্সওয়েল বনাম আফগানিস্তান

ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে, প্রচণ্ড গরমে চোট সঙ্গী করে এক পায়ে ভর দিয়ে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের সেই মহাকাব্যিক ইনিংসের গল্প তো সবারই জানা। ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর মুম্বাইয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপে আফগানদের ছুড়ে দেওয়া ২৯২ রানের টার্গেটে ৯১ রানে ৭ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। এই অবস্থায় আফগানিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা ছিল শতভাগ! 

কিন্তু হার না মানা ২০১ রানের অবিশ্বাস্য ইনিংসে ম্যাক্সওয়েল ক্রিকেটীয় রূপকথার গল্পই লেখেননি, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে অস্ট্রেলিয়াকে এনে দিয়েছেন ঐতিহাসিক জয়। ক্রিকেট ইতিহাসে অন্যতম সেরা ইনিংসের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এই আসরেও আলোচনায় ম্যাক্সি। সেই ম্যাচের পর শুক্রবার আবারও ওয়ানডেতে মুখোমুখি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তান। লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সবার চোখ ম্যাক্সওয়েলের দিকে।

আলোচিত সেই ম্যাচের পর সাদা বলের ক্রিকেটে মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া- আফগানিস্তান। গত বছরের ১২ জুন কিংস্টনে টি২০ বিশ্বকাপে অসিদের ২১ রানে হারিয়ে আফগানরা খেলেছিল সেমিফাইনালে। তবে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার বড় সুযোগ আফগানদের। যদিও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে চারবারের দেখায় একবারও বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের পর্যুদস্ত করতে পারেননি রশিদ খান-মোহাম্মদ নবিরা।

তবে বুধবার ক্রিকেটের অন্যতম পরাশক্তি ইংল্যান্ডকে হারানোয় আফগানরা এখন আরও আত্মবিশ্বাসী। দেড় বছরের মধ্যে দুটি বড় আসরে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর দলটির কোচ জোনাথন ট্রট তো রীতিমতো হুমকি দিয়ে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়াকে। আফগানিস্তানকে হালকা করে দেখার দিন শেষ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি, ‘আগে হয়তো সূচিতে এই ম্যাচটি দেখে লোকে ভাবত, ঐতিহ্যবাহী কোনো টেস্ট দলের সঙ্গে খেলার চেয়ে এটি সহজ হবে। তবে এই সংস্করণে, এমন কন্ডিশনে, আমার এখন আর তা মনে হয় না। আমি যা দেখি, আমাদের প্রতিটি ম্যাচই হবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং প্রতিটি ম্যাচেই আমরা জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে নামি। অস্ট্রেলিয়াও আমাদের হালকাভাবে নেবে না।’

লড়াইটা অস্ট্রেলিয়া-আফগানিস্তানের হলেও ঘুরেফিরে আসছে ম্যাক্সওয়েলের নাম। ইংলিশদের বিপক্ষে জয়ের পর আফগান অধিনায়ক হাসমতউল্লাহ শাহিদিকে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে ২০২৩ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়া ম্যাচের কথা, ‘আপনি কি মনে করেন, আমরা এখানে এসেছি শুধু ম্যাক্সওয়েলের বিপক্ষে খেলতে? আমরা পুরো অস্ট্রেলিয়া দল নিয়েই পরিকল্পনা করছি। আমি জানি, তিনি (ম্যাক্সওয়েল) ২০২৩ বিশ্বকাপে অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন, তবে সেটা এখন অতীত। সেই ম্যাচের পর আমরা কিন্তু তাদের হারিয়েছি (টি২০ বিশ্বকাপে)। আমরা সর্বদা সব প্রতিপক্ষকে নিয়েই ভাবি, ব্যক্তিগত কাউকে নিয়ে পরিকল্পনা করি না। আমরা চেষ্টা করব, পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলতে। শুধু ম্যাক্সওয়েলের বিপক্ষে নয়, আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলব।’

লাহোরে দুটি ম্যাচেই ৩০০-এর ওপরে স্কোর হয়েছে। এই ভেন্যুতে ইংল্যান্ডের ৩৫১ রান তাড়া করে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৩২৫ রান করে ৮ রানে জিতেছে আফগানিস্তান। তাই আজকের ম্যাচেও রান উৎসব হবে বলে ধারণা সবার। গ্রুপ ‘বি’র এই ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টানা দুই হারে ইংল্যান্ড বিদায় নেওয়ায় দুই টিকিটের দাবিদার এখন অস্ট্রেলিয়া, আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান ৩ পয়েন্ট অস্ট্রেলিয়া ও প্রোটিয়াদের। ২ পয়েন্ট পাওয়া আফগানরা আজ জিতলে চলে যাবে সেমিফাইনালে। সে ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়াকে তাকিয়ে থাকতে হবে দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচের দিকে। আর যদি অস্ট্রেলিয়া জিতে যায়, তাহলে ইংল্যান্ডের পর আফগানদের বিদায়ঘণ্টা বাজবে। অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা চলে যাবে সেমিফাইনালে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ ল ন ম য ক সওয় ল ম য ক সওয় ল র আফগ ন স ত ন স ম ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

যে কারণে ছয় মাসে ৫১ কোটি টাকা লোকসান করল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল

রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের আয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে। আয় কমলেও তার বিপরীতে খরচ কমেনি। ফলে ছয় মাসে হোটেলটি অর্ধশত কোটি টাকারও বেশি লোকসান করেছে। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় হোটেলটির লোকসান বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। হোটেলটির চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের অর্ধবার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক হোটেল চেইন ইন্টারকন্টিনেন্টালের মূল মালিকানা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সার্ভিসেস লিমিটেড (বিএসএল)। ১৯৮৪ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত এই কোম্পানিটি বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন। গত সপ্তাহে বিডি সার্ভিসেস চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই–ডিসেম্বর) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই আর্থিক প্রতিবেদন থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের আয়, ব্যয় ও লোকসানের তথ্য পাওয়া গেছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই–ডিসেম্বরে কোম্পানিটি আয় করেছে ৬৭ কোটি টাকা। তার বিপরীতে সব ধরনের খরচ ও কর বাদ দেওয়ার পর ডিসেম্বর শেষে হোটেলটির লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৫১ কোটি টাকা। এ লোকসানের পেছনে বড় কারণ আয় কমে যাওয়া ও ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধি। ২০২৩ সালের জুলাই–ডিসেম্বরে হোটেলটি আয় করেছিল ৯০ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে পাঁচ তারকা এই হোটেলের আয় ২৩ কোটি টাকা বা প্রায় ২৬ শতাংশ কমে গেছে। আয় কমলেও হোটেলটির খরচ খুব বেশি কমেনি। এ কারণে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে হোটেলটি।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের জুলাইয়ে শুরু হওয়া কোটাবিরোধী আন্দোলন থেকে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আগস্টে সরকার বদল ও তার পরবর্তী রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে হোটেল ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাতে দুই মাসের বেশি সময় তারকা হোটেলগুলোর বড় অংশই ছিল অতিথিশূন্য। জুলাই আন্দোলনে শাহবাগ এলাকা রূপ নিয়েছিল অন্যতম আন্দোলনকেন্দ্রে। এ কারণে আন্দোলনের পুরোটা সময়জুড়ে দেশি–বিদেশি পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছিল শাহবাগ এলাকায় অবস্থিত ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল। এ সময় নানা অনুষ্ঠান আয়োজনও প্রায় বন্ধ ছিল হোটেলটিতে। যার ধাক্কা লেগেছে হোটেলটির আয়ে। সরকার বদলের পর সেপ্টেম্বর–অক্টোবর থেকে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরতে শুরু করে। এ কারণে অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যবসা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই–ডিসেম্বরের ৬৭ কোটি টাকা আয়ের বিপরীতে হোটেলটির পরিচালন ও প্রশাসনিক ব্যয় ছিল ১২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে পরিচালন খরচ ছিল ৩৩ কোটি টাকা, হোটেলের প্রশাসনিক খরচ ছিল প্রায় ২২ কোটি টাকা। আর হোটেলের মালিকানা প্রতিষ্ঠান বিডি সার্ভিসেসের প্রশাসনিক খরচ ছিল প্রায় ৭১ কোটি টাকা, যার বড় অংশই হোটেল পুনঃসংস্কারে নেওয়া ঋণের সুদ বাবদ ব্যয়।

হোটেলসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে এসে ব্যাংকঋণের সুদ বেড়ে যাওয়ায় হোটেলটির সুদ বাবদ খরচও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেড়েছে। সেই তুলনায় আয় বাড়েনি। ফলে লোকসানের পাল্লা ভারী হয়েছে।

আর্থিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের জুলাই–সেপ্টেম্বরে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল ২৩ কোটি টাকার ব্যবসা করেছিল। অথচ ওই তিন মাসে হোটেলটির পরিচালন ও প্রশাসনিক খরচ বাবদ ব্যয় করতে হয় ৫৭ কোটি টাকা। ফলে ওই তিন মাসেই হোটেলটি ৩০ কোটি টাকা লোকসান করে। তার বিপরীতে অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিকে এসে আগের প্রান্তিকের চেয়ে হোটেলটির আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪৪ কোটি টাকায়। তার বিপরীতে ওই প্রান্তিকে পরিচালন ও প্রশাসনিক খরচ বাবদ ব্যয় করতে হয় ৬৭ কোটি টাকা। গত অক্টোবর–ডিসেম্বর প্রান্তিক শেষে লোকসান দাঁড়ায় ১৮ কোটি টাকা। আর ছয় মাসের হিসাবে এই লোকসান দাঁড়ায় প্রায় ৫১ কোটি টাকায়।

হোটেল ব্যবসা ছাড়া ইন্টারকন্টিনেন্টালের সংলগ্ন এলাকায় ব্যাংকসহ বিভিন্ন অফিসভাড়া বাবদ আয়ও রয়েছে বিএসএলের। গত বছরের জুলাই–ডিসেম্বরে এ খাত থেকে বিএসএল আয় করেছে প্রায় ৪ কোটি টাকা। ২০২৩ সালের একই সময়ে এ খাত থেকে কোম্পানিটির আয় ছিল পৌনে ৪ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যাংক আমানতের সুদ বাবদও আয় বেড়েছে কোম্পানিটির। এই খাত থেকে গত জুলাই–ডিসেম্বরে কোম্পানিটি আয় করেছে ৪ কোটি টাকার বেশি। ২০২৩ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ৩ কোটি টাকা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হোটেলটির এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, জুলাই–আগস্টের ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালে হোটেল ব্যবসায় বড় ধরনের ধাক্কা লাগে। তাই জুলাই–সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে, পরের তিন মাসে ব্যবসা কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আগের তিন মাসের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বড় লোকসান হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণের অর্থছাড় নিয়ে আলোচনায় ঢাকায় আসছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল
  • ঈদের ছুটিতে ২ দিনে ঢাকা ছেড়েছেন প্রায় ৪১ লাখ সিমধারী
  • যে কারণে ছয় মাসে ৫১ কোটি টাকা লোকসান করল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল