‘গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ থেকে রাবির ২ প্রতিনিধির পদত্যাগ
Published: 28th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়কদের উদ্যোগে গঠিত ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) থেকে পদপ্রাপ্ত দুই প্রতিনিধি পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। কমিটিতে ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক আধিপত্যের প্রতিবাদে তারা পদত্যাগ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নিজ নিজ ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্ট করে এ ঘোষণা দেন তারা।
পদত্যাগ করা দুই সদস্য হলেন- সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী সজীব ও যুগ্ম সদস্যসচিব সালাহউদ্দিন আম্মার। তারা দু’জনই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ছিলেন।
গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাংশের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ করে নতুন ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’। এরপর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ২০৫ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। এতে ৬ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে মেহেদী সজীব এবং ১ নম্বর যুগ্ম সদস্যসচিব হিসেবে সালাহউদ্দিন আম্মারের নাম ঘোষণা করেন তিনি। নাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পদত্যাগের ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই দুই সমন্বয়ক।
ফেসবুক স্ট্যাটাসে মেহেদী সজীব লিখেছেন, “আজ ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ এর কেন্দ্রীয় কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আমার নাম বলা হয়েছে। গতকাল রাতেও এ নিয়ে আমি আমার স্ট্যান্ড ক্লিয়ার করেছি। এখনও বলছি। নতুন বন্দোবস্তের নামে ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক নয়া ফ্যাসিবাদী মনোভাবের যে উত্থান লক্ষ্য করা যাচ্ছে, তার প্রতিবাদেই আমি এই প্লাটফর্মে থাকতে রাজি না।’
তিনি আরও লিখেন, ‘আমার ইচ্ছা ব্যতীত এই দলে আমাকে সম্পৃক্ত করার জন্য নিন্দা জানাচ্ছি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্যই আমি আজ মেহেদী সজীব হিসেবে গড়ে উঠতে পেরেছি। আমার স্পষ্ট বার্তা হলো, ঢাকা ও ঢাবিকেন্দ্রিক ফ্যাসিবাদী মনোভাব থেকে যতদিন না এই দলের অংশীজনরা বেরিয়ে আসতে পারবে, বিকেন্দ্রীকরণের দিকে মনোনিবেশ করবে, ততদিন অবধি আমি তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের রাজনৈতিক বোঝাপড়ায় যাবো না। আর তাই আমি উক্ত পদ থেকে পদত্যাগ করলাম।’
পদত্যাগের বিষয়ে সালাহউদ্দিন আম্মার লিখেছেন, ‘আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের পালসটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাবি শিক্ষার্থীরা চাচ্ছে না এই ঢাবি আধিপত্যের পক্ষে থাকতে, তাই আমরাও চাচ্ছি না। শিক্ষার্থীরা না চাইলে আমরা কিছুই না।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাসব্যাপী নামাজ পড়া ৩২ কিশোরকে সাইকেল দিল মহানগর উত্তর বিএনপি
পবিত্র রমজান উপলক্ষে অভিনব কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। রোজার শুরুতে সংগঠনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়- মাসব্যাপী যে সকল শিশু-কিশোর মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন তাদের প্রত্যেককে বাইসাইকেল উপহার দেওয়া হবে। সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে শুক্রবার রাজধানীর রূপনগর-পল্লবী এলাকার ৩২ শিশু-কিশোরকে বাইসাইকেল উপহার তুলে দেয় সংগঠনটি। ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এই মহতি উদ্যোগের প্রশংসায় ভাসছে সংগঠনটি।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিগত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে চেটেপুটে খেয়েছে। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও শেখ পরিবারের কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তারা আগেই পালিয়ে গেছে। কারণ, বিদেশে তাদের বাড়িঘর আছে।
তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ মুক্ত দেশ গড়তে দেশের এই তরুণ-কিশোররা জীবন দিয়ে লড়েছে, রক্ত দিয়েছে, গুলির সামনে দাড়িয়েছে মুগ্ধ, আকরাম, আবু সাঈদরা। তাদের এই আত্মদান মহিমান্বিত। তরুণ-কিশোরদের আন্দোলনে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা।
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক বলেন, বাংলাদেশে যখনই কোন ক্রান্তিকাল এসেছে তখনই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় দলের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। শেখ হাসিনার নির্যাতনে দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে ফেরারি জীবনযাপন করেছে বিগত দিনে। মামলার কারণে বাবার লাশ পর্যন্ত দাফনে যেতে পারেনি তারা।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় গেছে। এতে দেশের মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরলেও এখনো আমাদের আন্দোলন শেষ হয়ে যায়নি। এখনো দেশের জনগণ ভোটাধিকার নিশ্চিত করা যায়নি।
আমিনুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু উপদেষ্টা নির্বাচন নিয়ে এখন নানান টালবাহানা শুরু করেছে। প্রধান উপদেষ্টা শুরুতে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের কথা বললেও এখন সেখান থেকে সরে এসে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। সরকারের মধ্যকার কিছু গোষ্ঠীর ক্ষমতার মোহে সংস্কার, ফ্যাসিবাদের বিচারের নামে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে।