যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ইলন মাস্কের ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি’ (ডিওজিই) এর কর্মী ছাঁটাই ও সরকারি ব্যয় হ্রাস কর্মসূচির শিকার হলেন শত শত আবহাওয়া পূর্বাভাসকারী এবং ‘ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এনওএএ) এর কর্মীরা।

বিপুলসংখ্যক এসব কর্মীকে গতকাল বৃহস্পতিবার বরখাস্ত করা হয় বলে জানান আইনপ্রণেতা ও আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা।

চাকরি হারানো কেন্দ্রীয় সরকারের এ কর্মীদের মধ্যে অনেক আবহাওয়াবিদও রয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে জাতীয় আবহাওয়া সেবা বিভাগের বিভিন্ন কার্যালয় থেকে স্থানীয় আবহাওয়া নিয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন তাঁরা।

এনওএএতে দৃশ্যত দুই দফায় কর্মী ছাঁটাই কার্যকর হচ্ছে। একটি দফায় থাকছেন ৫০০ জন ও আরেকটিতে ৮০০ জন। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মুখ্য বিজ্ঞানী ক্রেগ ম্যাকলিন কিছু সূত্রের কাছ থেকে এ তথ্য পেয়েছেন বলে জানান। ছাঁটাইয়ের শিকার হওয়া কর্মীদের এ সংখ্যা এনওএএ–এর মোট জনবলের প্রায় ১০ শতাংশ।

প্রথম দফায় প্রবেশনাধীনে থাকা কর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে জানিয়ে ম্যাকলিন বলেন, জাতীয় আবহাওয়া সেবা বিভাগে প্রায় ৩৭৫ প্রবেশনাধীন কর্মী রয়েছেন। এ বিভাগ থেকে দৈনন্দিন আবহাওয়া ও দুর্যোগ-সংক্রান্ত পূর্বাভাস দেওয়া হয়ে থাকে।

এনওএএতে দৃশ্যত দুই দফায় কর্মী ছাঁটাই কার্যকর হচ্ছে। একটি দফায় থাকছেন ৫০০ জন ও আরেকটিতে ৮০০ জন। প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মুখ্য বিজ্ঞানী ক্রেগ ম্যাকলিন কিছু সূত্রের কাছ থেকে এ তথ্য পেয়েছেন বলে জানান। ছাঁটাইয়ের শিকার হওয়া কর্মীদের এ সংখ্যা এনওএএর মোট জনবলের প্রায় ১০ শতাংশ।

ধনকুবের মাস্ক ও তাঁর বিভাগ ডিওজিই–এর নেওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের আকার (জনবল ও খরচ) ছোট করার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ওই কর্মীদের চাকরিচ্যুত করা হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফেডারেল সরকারের জনবলকে মাথাভারী ও বিশৃঙ্খল বলে আখ্যায়িত করেছেন। ইতিমধ্যে সরকারি হাজার হাজার প্রবেশনারি কর্মী চাকরিচ্যুত হয়েছেন।

কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য গ্রেস মেং গতকাল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতীয় আবহাওয়া সেবা (এনডব্লিউএস) বিভাগের আবহাওয়া পূর্বাভাসকারীদেরসহ ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) শত শত কর্মীকে আজ কোনো যৌক্তিক কারণ ছাড়া বরখাস্তের নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এটি অন্যায্য।’

গ্রেস মেং বলেন, ‘এই কর্মীরা নিবেদিতপ্রাণ, পরিশ্রমী মার্কিন নাগরিক। তাঁদের প্রচেষ্টা দেশজুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়ানক প্রভাব থেকে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সহায়তা করে।’

প্রতিনিধি পরিষদে ক্যালিফোর্নিয়ার ডেমোক্র্যাট দলীয় সদস্য জ্যারেড হাফম্যানও বলেন, ‘এনওএএর শত শত বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞকে চাকরি থেকে বিদায় জানানো হয়েছে।’

এই কর্মীরা নিবেদিতপ্রাণ, পরিশ্রমী মার্কিন নাগরিক। তাঁদের প্রচেষ্টা দেশজুড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ভয়ানক প্রভাব থেকে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সহায়তা করে।—গ্রেস মেং, প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য

উল্লেখ্য, বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রশাসন আরও বেশি করে কর্মী ছাঁটাইয়ের জন্য গত বুধবার কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে।

এমনিতেই ট্রাম্প–ঘনিষ্ঠ ইলন মাস্কের তথাকথিত ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিশিয়েন্সি কর্তৃক ছাঁটাই ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে কাটছাঁটের কারণে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীরা বিপর্যস্ত। এর মধ্যে আবার কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে নতুন একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। সেখানে জনবল উল্লেখযোগ্যসংখ্যক কমানো–সংক্রান্ত পরিকল্পনা আগামী ১৩ মার্চের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়। তবে নতুন ছাঁটাইয়ের সংখ্যা কত তা নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা হয়নি।

এখন পর্যন্ত মূলত শিক্ষানবিশ কর্মী, যাঁদের বর্তমান পদের মেয়াদ ফুরিয়ে আসছে ও চাকরির সুরক্ষাও কম, তাঁদের ছাঁটাইয়ের লক্ষ্যবস্তু করতে দেখা গেছে। পরবর্তী দফায় অভিজ্ঞ সরকারি কর্মচারীদের বিশালসংখ্যক কর্মীকে লক্ষ্য করে ছাঁটাই চালানো হবে।

এদিকে সরকারি কর্মীদের ব্যাপক হারে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বুধবার মার্কিন সিনেটের হলগুলোয় ফেডারেল কর্মীদের বিক্ষোভ হয়েছে।

৫০ বছরের মধ্যে সর্বাধিক কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা সিআইএরট্রাম্পের স্বেচ্ছা পদত্যাগ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন ৭৫ হাজার সরকারি কর্মীস্টারবাকসের ১১০০ কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘোষণা সিইওর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম দ র সরক র র কর ম র

এছাড়াও পড়ুন:

এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে বিমান

এয়ারক্রাফটের রক্ষণাবেক্ষণ ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে প্রবেশ করছে রাষ্ট্রায়ত্ত উড়োজাহাজ সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি ইঞ্জিনিয়ারের। ফলে অর্থ সাশ্রয়ের আলো দেখছে বিমান কর্তৃপক্ষ। এরইমধ্যে দীর্ঘ প্রচেষ্টার মাধ্যমে বোয়িং-৭৩৭ মডেলের মতো আধুনিক মানের একটি এয়ারক্রাফটের ডি-চেক এবং ফুয়েল ট্যাংকের সংযোজনসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হয়েছে দক্ষ বিমান কর্মীরা বলে বিমান সংশ্লিষ্টরা জানান। 

তারা বলেন, এরমধ্য দিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত এ উড়োজাহাজ সংস্থায় দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি সাশ্রয় হচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আধুনিক মানের যে কোনো ধরণের এয়ারক্রাফটের ইঞ্জিন রক্ষণাবেক্ষণসহ যাবতীয় কাজ সফল ভাবে করতে এখন আর প্রয়োজন হচ্ছে না বিদেশি কোনো ইঞ্জিনিয়ারের। এর ফলে মেরামতের জন্য এখন আর বিদেশে নিতে হবে না বিমানের কোনো এয়ারক্রাফট।  

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাদের দাবি, নিজস্ব সক্ষমতায় দেশেই এখন বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে দক্ষ জনবল রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে। সম্প্রতি জাতীয় পতাকাবাহী এ বিমান সংস্থাকে নিয়ে বর্তমান সরকারের উচ্চ মহলে নানা আলোচনা–সমালোচনা থাকলেও যাত্রী সেবার মান বিশ্বের নামি–দামি এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশ কম নয় বিমানের। উন্নত যাত্রীসেবা, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং ও এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে উঠেছে বিমানে। 

জানা যায়, বিমানের দুই যুগ পুরনো বোয়িং-৭৩৭ মডেলের একটি উড়োজাহাজের (এস-২ এএফএম) ‘ডি-চেক পুরোপুরি সম্পন্ন করছে নিজেদের দক্ষ জনবল দ্বারা। নিজেদের এ ব্যাপক কর্মযজ্ঞ, প্রচেষ্টা আর অর্থ সাশ্রয়ের কথা জানায় বিমান কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন, বিদেশের বদলে দেশেই এখন এয়ারক্রাফটের ডি-চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে বিপুল অর্থ সাশ্রয় করছে দক্ষ জনবল। এর আগে এয়ারক্রাফটের সি–চেক সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করে দক্ষ বিমান কর্মীরা। 

এ ব্যাপারে বিমানের প্রকৌশল শাখার কয়েক কর্মকর্তা জানান, প্রায় পাঁচ মাস ধরে বোয়িং ৭৩৭ এর মতো আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের ডি–চেক কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল একদল কর্মকর্তা–কর্মচারী। প্রায় ৫ মাস অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে এয়ারক্রাফটের ডি–চেক সফলভাবে সম্পন্ন করতে সক্ষম হন তারা। বিমানের ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট পরিদপ্তর নিজস্ব সক্ষমতায় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফটের এ চেক সফলভাবে সম্পন্ন করে প্রায় ২ মিলিয়ন ইউএস ডলার সাশ্রয় হয়েছে বিমানের। 

এ ব্যাপারে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও ড. মো. সাফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, দিনদিন দক্ষ জনবল বাড়ছে বিমানে। পাশাপাশি উন্নত হচ্ছে যাত্রীসেবার মান। নিজস্ব জনবলের মাধ্যমে রক্ষণাবেক্ষণসহ এয়ারক্রাফটের যাবতীয় কাজ করছে বিমানের দক্ষ প্রকৌশল বিভাগ। শুধু তাই নয় ৭৩৭ আধুনিক মানের এয়ারক্রাফটের মতো ইঞ্জিনের রক্ষণাবেক্ষণের কাজও। এরইমধ্যে এসব কাজের সফলতা অর্জন করছে বিমানের প্রকৌশল শাখার দক্ষ কর্মকর্তা–কর্মচারীরা। 

তিনি বলেন, এয়ারক্রাফটের ডি–চেকসহ যাবতীয় কাজ এখন বিমানের হ্যাঙ্গারেই করা সম্ভব হচ্ছে। এ কাজে বিমানে রয়েছে দক্ষ জনবল। উন্নত যাত্রী সেবায় বিশ্বের উন্নত এয়ারলাইন্সের চেয়ে কোনো অংশে কম নেই বিমানে। 

বিমানের সিইও আরও বলেন, যাত্রীদের জন্য চলতি বছরই বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ চালু করছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল। এ টার্মিনাল চালুর শুরুতেই ২ বছর গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবা দিবে বিমান। এ লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে বিমানে। এরইমধ্যে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং যন্ত্রপাতিসহ উন্নতমানের বিভিন্ন ইকুইপমেন্ট বিদেশ থেকে ক্রয় করা হয়েছে। পাশাপাশি নিয়োগ করা হচ্ছে দক্ষ জনবল।

বিমান কর্মকর্তারা বলেন, বিমানবন্দর থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং সেবারমান উন্নত হলে পর্যায়ক্রমে এ কাজ ফের পাবে বিমান। এ চিন্তা মাথায় রেখে কাজ করছে বিমান।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্র্যাক নেবে ডেপুটি ম্যানেজার, স্নাতক পাসে আবেদন
  • এয়ারক্রাফট রক্ষণাবেক্ষণে সর্বোচ্চ সক্ষমতার যুগে বিমান
  • আরএফএল গ্রুপে বড় নিয়োগ, পদ ২০০
  • বেসরকারি ব্যাংক নেবে অফিসার, স্নাতক পাসে আবেদন