পবিত্র রমজান মাস শুরু হওয়ার আগেই দিনাজপুরের হিলি বাজার থেকে উধাও বোতলজাত সয়াবিন তেল। পরিস্থিতি এমন যে পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানেও মিলছে না বোতলজাত তেল। ক্রেতারা বলছেন, খোলা তেলের দাম বেশি এবং ভেজাল হওয়াটা স্বাভাবিক।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কোম্পানি বোতলজাত তেল না দেওয়ায় খোলা তেল বাধ্য হয়ে বিক্রি করছেন তারা।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে হিলির বাজার ঘুরে দেখা যায়, দোকানগুলোতে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। তবে, ছোট-বড় ড্রামে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে খোলা সয়াবিন তেল। এসব খোলা তেল পলিথিনের মাধ্যমে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে প্রতি লিটার ৭৬ টাকা। এক লিটার বোতলজাত তেলের দাম ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা। বোতলজাত তেল না পেয়ে খোলা তেল কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা।
আরো পড়ুন:
রমজানে স্বাভাবিক থাকবে আদা-রসুন ও পেঁয়াজের দাম
‘টমেটো এখন পাখিদের খাদ্য’
ড্রাম থেকে তুলে ক্রেতার কাছে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন দোকানদার
হিলি মসলা বাজারে দুলাল হোসেন নামের একজন ক্রেতা বলেন, “গোটা বাজার ঘুরলাম, কোনো দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল পেলাম না। বাধ্য হয়ে খোলা তেল কিনলাম। রমজান মাস আসছে, খাঁটি ভোজ্য তেলের দরকার। সব দোকানে খোলা তেল।”
মিজানুর রহমান নামের অপর ক্রেতা বলেন, “বেশি লাভের আশায় দোকানদারেরা বোতলের তেল ঢেলে খোলা হিসাবে বিক্রি করছেন। আমার মনে হয়, এসব তেলে ভেজাল মেশানো হচ্ছে। প্রশাসনের উচিত, এখন থেকে বাজার মনিটরিং শুরু করা। অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে তাদের কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
হিলি বাজারে মুদি ব্যবসায়ী অলক কুমার বলেন, “কোম্পানি থেকে আমাদের বোতল তেল দেওয়া হচ্ছে না। তারা খোলা তেল দিচ্ছে। আমরা ৭৬ টাকা লিটার হিসেবে খোলা তেল বিক্রি করছি। বোতলে তেল ৭৩ থেকে ৭৫ টাকা লিটার বিক্রি করেছি।”
ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব তলজ ত ত ল ব যবস য় করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
দীর্ঘদিন আত্মগোপনে, চাঁদরাতে বাড়িতে গিয়ে গণপিটুনির শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ছিলেন আত্মগোপনে। কিন্তু পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করার জন্য গ্রামের বাড়িতে আসেন। গ্রামের বাড়িতে এসেই স্থানীয়দের হাতে গণপিটুনির শিকার হলেন এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।
রোববার রাতে ওই স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গণপিটুনি দেয় স্থানীয়রা। পরে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় স্থানীয় একটি প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
গণপিটুনির শিকার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার নাম মো. জসিম উদ্দিন জিসান (৩৬)। তিনি সাতকানিয়া উপজেলার কেঁওচিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কান্তার পাড়ার আহমদ নবীর ছেলে। এ ছাড়াও তিনি উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. জসিম উদ্দিন জিসান আত্মগোপনে থাকলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন। তিনি বিভিন্ন সময় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিপক্ষে পোস্ট দিতেন। ফলে স্থানীয়রা তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। সর্বশেষ রোববার ঈদ উদযাপনের জন্য তিনি গ্রামের বাড়িতে আসেন। তার আসার খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাকে আটক করে গণপিটুনি দেয়।
বর্তমানে তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
আরও জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে উপজেলার কেরানিহাট চত্বরে মিছিল করেছিল ছাত্র-জনতা। সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কেঁওচিয়া ইউনিয়নের জনার কেঁওচিয়া গ্রামের গুরা মিয়া বাড়ির মৃত ছিদ্দিকুর রহমানের ছেলে মো. তসলিম বাদী হয়ে সাতকানিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় জিসান ৫৮ নম্বর এজহারভুক্ত আসামি।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, ৫ আগষ্টের পর থেকে জিসান ঘরে ছিল না। চাঁদ রাতে পরিবারের সদস্যদের জামা-কাপড় দিতে গেলে এলাকার লোকজন তাকে ধরে পিটুনি দেয়। খবর পেয়ে আমিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গেলে তার স্বজনরা চিকিৎসার জন্য তাকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে জেনেছি। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ বা মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।