ইসরায়েল গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালিয়েছে: জাতিসংঘ
Published: 28th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
দখলদার ইসরায়েল গাজায় যে ভয়াবহভাবে সামরিক অভিযান চালিয়েছে তা ধারাবাহিকভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করছে বলেছেন, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক। তিনি বলেন, এটি কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। ’
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলে গাজা, ইসরায়েল-অধিকৃত পশ্চিম তীর এবং পূর্ব জেরুজালেমের মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করে এ মন্তব্য করেন তিনি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশন (ওএইচসিএইচআর)- এর প্রতিবেদনে হামাসকে ৭ অক্টোবর থেকে গুরুতর লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তুর্ক বলেছেন, ‘হামাস ইসরাইলি ভূখণ্ডে নির্বিচারে প্রজেক্টাইল (ভূপৃষ্ঠ থেকে নিক্ষেপ করা মিসাইল বা রকেট) নিক্ষেপ করেছেন, যা যুদ্ধাপরাধের সামিল। ’
ইসরায়েলে পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ১২০০ মানুষ নিহত হন। আর ২৫০ জনেরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা।
ওইদিন থেকেই গাজায় প্রতিশোধমূলক হামলা চালায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। দীর্ঘ ১৫ মাসের এ হামলায় ৪৮ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন আর আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ।
এদিকে, ওএইচসিএইচআর-এর প্রতিবেদনের বিষয়ে নিজেদের মত জানাতে কোনও প্রতিনিধি পাঠায়নি ইসরায়েল। চিলির প্রতিনিধি বিষয়টিকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন।
ইসরায়েল অবশ্য বরাবরই গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে যুদ্ধাপরাধ এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে এসেছে। তাদের দাবি, তাদের অভিযান কেবল হামাস সদস্যদের লক্ষ্য করে এবং বেসামরিক ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
তুর্ক বলেছেন, ‘গাজায় ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা বিশাল – ঘর-বাড়ি থেকে শুরু করে হাসপাতাল, স্কুল পর্যন্ত। ’ ইসরাইলের আরোপিত বিধিনিষেধ একটি মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে বলেও জানান তুর্ক।
মানবাধিকার কমিশনের ৫৮তম কাউন্সিলে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে তুর্ক আরও কিছু গুরুতর উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছেন। প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে যে, হামাস গাজায় মানবিক আইনের অন্যান্য লঙ্ঘনও করতে পারে। এ ধরনের লঙ্ঘনের মধ্যে রয়েছে বেসামরিক নাগরিক এবং সামরিক কার্যক্রম একই স্থানে পরিচালনা করা।
এনজে
.উৎস: SunBD 24
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
খুলল ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয়
অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নসহ কয়েকটি দাবিতে সাংবাদিক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের মুখে গত ২০ জানুয়ারি অকস্মাৎ দৈনিক ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। প্রায় ৬৬ দিন পর ২৭ মার্চ ‘উদ্ভূত পরিস্থিতি’ নিয়ন্ত্রণে আসার কথা বলে প্রধান কার্যালয় ফের খুলে দেওয়া হয়।
তবে আন্দোলনকারী ৪৫ জন কর্মীর ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদের বোনাস পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অন্যরা বেতন-বোনাস পেয়েছেন।
জানা গেছে, বেতন বৈষম্য দূর করার পাশাপাশি অষ্টম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়নের দাবিতে ১৯ জানুয়ারি বিকেলে কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন শতাধিক সংবাদকর্মী। এর জেরেই পরদিন ভোরের কাগজের প্রধান কার্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। দুদিন পর আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৪২ কর্মীকে ছাঁটাই করা হয়। এরপরও তারা আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এতে একাত্মতা প্রকাশ করে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন।
আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৫ ফেব্রুয়ারি প্রকাশক সাবের হোসেন চৌধুরীর ব্যবসায়িক কার্যালয় কাকরাইলের এইচআর ভবন ঘেরাও করেন বছরের পর বছর বৈষম্যের শিকার সংবাদকর্মীরা। এক পর্যায়ে এইচআর ভবনের ভেতর থেকে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে ৮-১০ জন সংবাদকর্মী আহত হন। এরপরই সাবের হোসেন চৌধুরী ফোনে ডিইউজে সভাপতি মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন এবং ইউনিয়নের মধ্যস্থতায় বিষয়টি সুরাহার আশ্বাস দেন। নানা তালবাহানায় প্রায় দেড় মাস সময়ক্ষেপণের পর গত ২৬ মার্চ একটা সমঝোতায় আসেন ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দ ও এইচআর ভবনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
সিদ্ধান্ত হয়- পরদিন ২৭ মার্চ ছাঁটাইকৃত ৪২ জন তাদের পুরো টার্মিনেশন বেনিফিট বুঝে পাবেন। আর আন্দোলনে থাকা বাকি ৪৫ জনের চাকরি অব্যাহত থাকবে এবং তারা ২৭ মার্চ দুপুরের মধ্যে ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস পাবেন। কিন্তু কথা রাখেনি এইচআর ভবন। ছাঁটাইকৃত ৪২ জনকে পুরো টাকা দেওয়া হয়নি। যে হিসাব দেখে তারা সমঝোতায় রাজি হয়েছিলেন, দেওয়া হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম টাকা। অন্যদিকে ছাঁটাই না হওয়া ৪৫ জন কর্মী কোন টাকাই পাননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রেসকর্মী বলেন, ভোরের কাগজ কর্তৃপক্ষ আবারো আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ২৭ মার্চ দুপুরের মধ্যে ৩ মাসের বকেয়া বেতন ও ঈদ বোনাস দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা রক্ষা করেনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আমি কীভাবে ঈদ করবো? গ্রামের বাড়ি যে যাব সে উপায়ও নেই। বাড়িওয়ালা বলে দিয়েছেন, ৩ মাসের বকেয়া ভাড়া না দিয়ে কোথাও যাওয়া যাবে না। কী যে করবো কিছুই বুঝতে পারছি না। যারা আমাদের এই দুর্দশায় ফেলেছেন তাদের প্রতি ধিক্কার জানাই।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সাংবাদিক, কর্মকর্তা কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধ করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ভোরের কাগজের সংবাদকর্মীদের আন্দোলনের সঙ্গে মাঠে থাকবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ