সাত মাসে বিদেশি ঋণ এসেছে ৩৯৪ কোটি ডলার, পরিশোধ হয়েছে ২৪২ কোটি ডলার
Published: 28th, February 2025 GMT
বিদেশি ঋণ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ঋণ বেশি ছাড় হচ্ছে, সেই তুলনায় কম পরিশোধ করতে হচ্ছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) দেশে মোট ৩৯৪ কোটি মার্কিন ডলারের সমপরিমাণ বিদেশি ঋণ এসেছে। এই সময়ে ঋণের সুদাসল পরিশোধ করতে হয়েছে প্রায় ২৪২ কোটি ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তৈরি জুলাই-জানুয়ারি মাসের বিদেশি ঋণ পরিস্থিতির হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে। অবশ্য অর্থবছরের শুরুর কয়েক মাস বিদেশি ঋণের অর্থ ছাড়ের চেয়ে পরিশোধ বেশি হয়েছিল।
গত সাত মাসে বিদেশি ঋণ সবচেয়ে বেশি এসেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে। জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সংস্থাটি দিয়েছে প্রায় ১১০ কোটি ডলার। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংক ৮৮ কোটি ডলার ও জাপান ৬৯ কোটি ডলার দিয়েছে।
ইআরডির ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে বিপুল পরিমাণ বিদেশি ঋণ ছাড় হওয়ায় গত সাত মাসের সার্বিক হিসাবে ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বেশ বেড়েছে। এই সময়ে প্রায় দেড় শ কোটি ডলার বিদেশি ঋণ ছাড় হয়েছে।
অন্যদিকে আলোচ্য সাত মাসে সরকারকে বিদেশি ঋণ বাবদ পরিশোধ করতে হয়েছে ২৪২ কোটি ডলার। এর মধ্যে আসল পরিশোধ হয়েছে ১৫৪ কোটি ডলার। আর সুদ বাবদ ৮৮ কোটি ডলার শোধ হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে একই সময়ে ১৮৫ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হয়েছিল।
তবে গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বিদেশি ঋণ ছাড় বাড়েনি। আগের অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সব মিলিয়ে ৪৪০ কোটি ডলারের বৈদেশিক সহায়তা পাওয়া গিয়েছিল। এবার একই সময়ে এর চেয়ে ৪৬ কোটি ডলার কম এসেছে।
এদিকে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি সংস্থা ও দেশের কাছ থেকে ঋণসহায়তা বাবদ খুব বেশি প্রতিশ্রুতি মিলছে না। গত জুলাই-জানুয়ারি সাত মাসে ২৩৫ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে উন্নয়ন-সহযোগীরা। গতবার একই সময়ে ৭১৭ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি পাওয়া গিয়েছিল।
বিদেশি ঋণ পরিশোধ নিয়ে অর্থনীতিবিদেরা শঙ্কা প্রকাশ করে আসছেন। কারণ, কয়েক বছর ধরেই বিদেশি ঋণ পরিশোধ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে ১১০ কোটি ডলার ঋণ পরিশোধ করেছিল বাংলাদেশ। পরের ১০ বছরে অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে তা বেড়ে ২০১ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা পৌনে তিন শ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। গত অর্থবছরের বিদেশি ঋণ পরিশোধ বাবদ ৩৩৬ কোটি ডলার দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এর মানে গত এক যুগের বিদেশি ঋণ পরিশোধ তিন গুণ হয়েছে।
কয়েক বছর ধরেই বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপ বাড়ছে। দুই বছর ধরে আরও বেশি বেড়েছে। বিদেশি ঋণ পরিশোধের এই চাপ শুরু হয়েছে এমন এক সময়ে, যখন দেশে দীর্ঘদিন ধরে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট চলছে। বিদেশি ঋণ পরিশোধের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের কারণে রিজার্ভ ও বাজেটে বাড়তি চাপ সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর শ ধ করত একই সময়
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিতীয় প্রান্তিকে মুনাফা বেড়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের
২০২৪-২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম। এই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মুনাফা অনেকটা বেড়েছে।
অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা শূন্য ৯ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৯ টাকা শূন্য ৬ পয়সা। অর্থাৎ এই সময়ে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ।
এ ছাড়া সামগ্রিকভাবে অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয়(ইপিএস) হয়েছে ২৭ টাকা ৮২ পয়সা; আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭ টাকা ৪৮ পয়সা। অর্থাৎ এই সময়ে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে ৫৯ দশমিক ২ শতাংশ।
একই সঙ্গে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহেও উন্নতি হয়েছে কোম্পানিটির। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে কোম্পানিটির এনওসিএফপিএস বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৮ দশমিক ৭৮ টাকা, যেখানে আগের বছর একই সময়ে তা ছিল ঋণাত্মক ৬০ টাকা ২৭ পয়সা। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যাচ্ছে, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের পরিচালন দক্ষতা বেড়েছে।
৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪৪ টাকা ৯৪ পয়সা; ৩০ জুন ২০২৪ তারিখে যা ছিল ২৩৪ টাকা ১২ পয়সা। এই পরিসংখ্যান থেকে বোঝা যায়, কোম্পানির সম্পদের ভিত্তি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১২ টাকা ৭৩ পয়সা। গত বছর একই সময়ে ইপিএস আয় হয়েছিল ৮ টাকা ৪২ পয়সা।
২০২৪ সালে কোম্পানিটি ১৭০ শতাংশ, ২০২৩ সালে ১৬০ শতাংশ, ২০২২ সালে ১৫০ শতাংশ, ২০২১ সালে ১৫০ শতাংশ ও ২০২০ সালে ১৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম।