‘চোখ বুজলে পাঁচ জনের লাশ চোখে ভাসে’
Published: 28th, February 2025 GMT
গত বছরের ২৯ ফেব্রুয়ারি বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে ৪৬ জন মারা যান। এর মধ্যে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একই পরিবারের ৫ জন রয়েছেন।
তারা হলেন- ইতালি প্রবাসী সৈয়দ মোবারক কাউসার, তার স্ত্রী স্বপ্না আক্তার, ছেলে সৈয়দ আব্দুল্লাহ, মেয়ে সৈয়দা ফাতেমা তুজ জোহরা ও সৈয়দা আমেনা আক্তার নুর। এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবি জানিয়েছে নিহতের স্বজনেরা।
মোবারক কাউসারের ভাই আমীর হামজা হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘এক বছর হয়ে গেল বিচার পেলাম না। কোনো আউটপুট নেই। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলো, তারা আবার জামিনও পেয়েছেন।’’
গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ড ‘ন্যাচারাল ডিজাস্টার’ ছিল না অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘‘ওটা ছিল মানবসৃষ্ট। ৪৬টা প্রাণ ঝরে গেল। কিন্তু, এখনো তদন্তই শেষ হলো না। কবে হবে, সেটাও কেউ বলতে পারছে না।’’
আমীর হামজা বলেন, ‘‘আমার ভাই ইতালি থাকতেন। ওই ঘটনার মাসখানেক আগে দেশে এসেছিলেন। মার্চে আবার চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার ফ্যামিলি নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, যাওয়া আর হলো না। সবাই চলে গেছে না ফেরার দেশে।’’
সেই দিনের ঘটনার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘২৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ভাই ফোন দিয়ে বলে, কাল সকাল চলে আসিস। একসঙ্গে লাঞ্চ করব। এর কিছুক্ষণ পরেই আগুন লাগার খবর পাই। প্রথমে খুব একটা গুরুত্ব দিইনি। রাত ১২টার দিকে ভাবীর বোনের মেয়ে (মোবারক কাউসারের বাসায় থাকত) ফোন দিয়ে বলে, মামা তারা সবাই রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়েছিল, এখনো কেউ বাসায় ফেরেনি। তাদের মোবাইল নম্বরও বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে বেইলি রোডে যাই। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে। সেখানে গিয়ে ভাই, ভাবী, ভাতিজা ও এক ভাতিজির লাশ পাই। শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে গিয়ে পাই আরেক ভাতিজির লাশ। এখনো চোখ বুজলে পাঁচ জনের লাশ চোখে ভাসে।’’
আমির হামজা বলেন, ‘‘চার ভাই-বোনের মধ্যে শুধু আমি দেশে থাকি। বড় ভাই, মেঝ ভাই (মোবারক কাউসার) আর বোন দেশের বাইরে থাকেন। এর মধ্যে, মেঝ ভাইয়ের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল বাপ-ছেলের মতো। তিনি সবার কেয়ার করতেন, সাপোর্ট করতেন। তার কর্মকাণ্ডের কারণে তাকে ভুলতে পারি না।’’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে এরকম হবে এটা কল্পনাতেও ভাবিনি। আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার হয়ে গেছে। আর যেন এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সেজন্য দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হওয়ার দরকার। না হলে পরবর্তীতে এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটবে। নতুন সরকার আসছে। তাদের প্রতি অনুরোধ, সুষ্ঠু বিচারটা করবেন।’’
এদিকে, সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মোবারক হোসেনের মা। আমীর হামজা বলেন, ‘‘ওই ঘটনার পর থেকে মা অনেক সময় অ্যাবসেন্স থাকেন। অ্যাবনরমাল হয়ে গেছেন অনেকটা।’’
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে আগুন লাগে। এ ঘটনায় ৪৬ জন মারা যান। জীবিত উদ্ধার করা হয় ৭৫ জনকে। নিহতদের মধ্যে ২০ জন পুরুষ, ১৮ জন নারী ও ৮ শিশু। এ ঘটনায় রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেছেন। থানা পুলিশের পর মামলার তদন্ত করছে সিআইডি।
ঢাকা/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঈদের সকালে রোগী, নার্স ও ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে টিম খোরশেদ’র শুভেচ্ছা বিনিময়
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঈদের দিন সকালে নারায়ণগঞ্জের ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ও সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে ঈদের দিন ভর্তি থাকা রোগী,নার্স ও পরিবার পরিজনের বন্ধন ছেড়ে নাগরিক সেবায় নিয়োজিত ট্রাফিক পুলিশদের মাঝে পুষ্টিকর প্রাত:রাস (নাস্তা-দুধ, জুস, বিস্কুট ও কেকের বক্স) বিতরণ করে মানবিক সংগঠন টিম খোরশেদ।
ঈদের নামাজ শেষে টিম খোরশেদ এর স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ প্রথমে হাসপাতালের রোগী ও নার্স ও পরে রাস্তায় কর্মরত ট্রাফিক পুলিশদের মাঝে নাস্তা বিতরণ করে।
টিম খোরশেদ এর দলনেতা সাবেক সিটি করপোরেশন কাউন্সিলর মাকছুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ জানান, আমরা আসলে দূর্গত মানুষ ও নাগরিক সেবায় নিয়োজিতদের ঈদের আনন্দে অংশ নিয়ে হাসি ফুটানোর জন্যই আমাদের সকল কার্যক্রম।