গণবরখাস্তের বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনা আটকে দিলেন বিচারক
Published: 28th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এজেন্সিগুলোতে সম্প্রতি নিয়োগ পাওয়া হাজারো কর্মচারীকে গণবরখাস্ত করার বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনা সাময়িকভাবে আটকে দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়ার এক ফেডারেল বিচারক।
এ-সংক্রান্ত বিষয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোর ডিস্ট্রিক্ট জজ উইলিয়াম আলসুপ শুনানিকালে বলেন, কোনো কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করতে ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষমতা অফিস অব পার্সোনেল ম্যানেজমেন্টের (ওপিএম) নেই।
এমনকি প্রবেশনারি কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করতেও ওপিএম নির্দেশ দিতে পারে না বলে বলে মত দিয়েছেন বিচারক। প্রবেশনারি কর্মচারীদের চাকরির বয়স সাধারণত এক বছরের কম হয়ে থাকে।
রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর উপদেষ্টা ধনকুবের ইলন মাস্ক কর্মচারী ছাঁটাইসহ ফেডারেল আমলাতন্ত্রকে সংকুচিত করতে একটি অভূতপূর্ব প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এ কাজের জন্য ট্রাম্প গঠন করেছেন সরকারি দক্ষতা বিভাগ। এই বিভাগের প্রধান মাস্ক।
ফেডারেল এজেন্সিগুলোর জন্য মানবসম্পদ বিভাগ হিসেবে কাজ করে ওপিএম। বিচারক আলসুপ ওপিএমকে ২০ জানুয়ারির একটি স্মারক এবং ১৪ ফেব্রুয়ারির একটি ই-মেইল প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই স্মারক ও ই-মেইলে ফেডারেল এজেন্সিগুলোকে সংস্থার কার্যক্রমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়—এমন প্রবেশনারি কর্মচারীদের চিহ্নিত করতে এবং তাঁদের বরখাস্ত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিচারক আলসুপ বলেছেন, তিনি সরাসরি প্রতিরক্ষা দপ্তরসহ অন্য ফেডারেল সংস্থাগুলোকে কর্মচারীদের বরখাস্ত না করার বিষয়ে আদেশ দিতে পারছেন না। কারণ, বেশ কয়েকটি ইউনিয়নসহ অলাভজনক গোষ্ঠীর করা মামলার বিবাদী তারা নয়।
উল্লেখ্য, ট্রাম্প প্রশাসনের নির্দেশনায় প্রতিরক্ষা দপ্তর আজ শুক্রবার ৫ হাজার ৪০০ প্রবেশনারি কর্মচারীকে বরখাস্ত করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিচারক আলসুপ বলেছেন, দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া ফেডারেল কর্মচারীদের গণবরখাস্তের বিষয়টি বিভিন্ন পরিষেবায় ব্যাপক ক্ষতির কারণ হবে।
ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময় নিয়োগ পেয়েছিলেন বিচারক আলসুপ। তিনি বলেছেন, প্রবেশনারি কর্মচারীরা মার্কিন সরকারের প্রাণশক্তি। তাঁরা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর শুরুর দিকের স্তরে কাজে যুক্ত হন। তাঁরা কাজের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে কাঠামোর ওপরের স্তরে ওঠেন। এভাবেই মার্কিন সরকারের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে হোয়াইট হাউস ও যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু তারা তাৎক্ষণিকভাবে এ অনুরোধে সাড়া দেয়নি।
বিচারক আলসুপের রুলিংয়ের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সর্ববৃহৎ ফেডারেল কর্মচারী ইউনিয়ন এএফজিইর প্রেসিডেন্ট এভারেট কেলি। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিচারকের এই রুলিং ফেডারেল কর্মচারীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক বিজয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বল ছ ন র জন য ত করত
এছাড়াও পড়ুন:
দোহায় পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা
আর্থনা সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছেছেন ।
প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইটটি সোমবার (২১ এপ্রিল) কাতারের স্থানীয় সময় রাত ৯টা ৪০ মিনিটে দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। প্রধান উপদেষ্টাকে বিমান বন্দরে অভ্যর্থনা জানান কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আর্থনা শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘আমাদের উত্তরাধিকার গড়ে তোলা: স্থায়িত্ব, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যবাহী জ্ঞান’।
সরকারপ্রধানের চার দিনের এ সফরের বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোমবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আর্থনা সম্মেলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি এ সফরে কাতারের সঙ্গে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। ২৪ এপ্রিল মধ্যরাতের পর তার দেশে ফেরার সূচি রয়েছে।
সফরে জ্বালানি উপদেষ্টার যাওয়ার তুলে ধরে প্রেস সচিব বলেন, “কাতারের সঙ্গে আমাদের এলএনজি নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। ভিসা সংক্রান্ত ইস্যু নিয়ে আলাপ করবেন। এছাড়া অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়েও আলাপ হবে। কাতারের উদ্যোক্তাদের নিয়ে ২৩ এপ্রিল বাণিজ্য সম্মেলন হবে, আশা করি সাড়া পাব।”
কাতারে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আড়াই ঘণ্টার একটি সম্মেলন হবে, এমন তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সম্মেলনে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে সম্পৃক্ত অনেকেই অংশ নেবেন। আশা করি ফলপ্রসূ বৈঠক হবে। আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত রোহিঙ্গা সম্মেলনের প্রাক-প্রস্তুতি বৈঠক এটি।”
কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইলে প্রেস সচিব বলেন, “এ পরিকল্পনা আমাদের অনেক দিন ধরেই আছে। এ বিষয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে কথা বলছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। যাতে করে দেশটির বাজার আমাদের জন্য উন্মুক্ত হয়। আরো শ্রমিক বাংলাদেশ থেকে নেয়, সে বিষয়ে আমরা দেখছি।”
“একইভাবে অন্যান্য যেসব দেশে আমাদের ভাই-বোনেরা কাজ পেতে পারেন তা নিয়ে কাজ করছি।”শ্রমবাজারগুলোতে আরো ভালো বেতনে, বেশি সংখ্যক কর্মী যাতে যেতে পারেন সেটা সরকারের অগ্রাধিকার বলে তুলে ধরেন তিনি।
দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো চার নারী ক্রীড়াবিদ সরকার প্রধানের সফরসঙ্গী হয়েছেন। এই চার জন হলেন- ফুটবলার আফিদা খন্দকার ও শাহেদা আখতার রিপা এবং ক্রিকেটার সুমাইয়া আখতার ও শারমিন সুলতানা।
তথ্যসূত্র: বাসস
ঢাকা/ইভা