ছুটির দিনেও ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর, ৩ বিভাগীয় শহরের অবস্থাও নাজুক
Published: 28th, February 2025 GMT
আজ শুক্রবার ছুটির দিনের সকালেও ঢাকার বায়ু অস্বাস্থ্যকর। ‘ছুটির দিনের সকালে’ বিশেষ করে উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো, এসব দিনে সাধারণত যানবাহন কম চলে এবং অনেক কলকারখানা বন্ধ থাকে। আর যানবাহন ও কলকারখানার দূষিত হাওয়া এ নগরীর বায়ুদূষণের বড় উৎস। এসব উৎস অনেকটা নিয়ন্ত্রিত থাকার পরও আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুমান ১৯৩। আর বিশ্বের ১২৩ নগরীর মধ্যে ঢাকা আজ দূষণে তৃতীয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ঠিক এ সময়ে বায়ুর মান ছিল ১৯১।
বায়ুদূষণে ঢাকার অবস্থান তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় এবং সতর্ক করে।
আজ আইকিউএয়ারের দেওয়া সতর্কবার্তায় ঢাকাবাসীর উদ্দেশে পরামর্শ, বাইরে বের হলে সুস্বাস্থ্যের জন্য অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। খোলা স্থানে ব্যায়াম করা যাবে না। আরও একটি পরামর্শ, ঘরের জানালা বন্ধ রাখতে হবে।
গত ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এক দিনও নির্মল বায়ু পাননি রাজধানীবাসী। চলতি মাসেরও একই হাল। এ মাসেও একটি দিনও ভালো বায়ু পেল না নগরবাসী।
ঢাকার চেয়ে সাধারণত দূষণ অনেক কম থাকে দেশের অন্য বিভাগীয় শহরে। কিন্তু আজ ছুটির দিনে সেসব শহরেও দূষণের মাত্রা মারাত্মক। আজ অন্য বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামে বায়ুর মান ১৫৭, রাজশাহীতে ১৮৮ ও খুলনায় ১৮১। অর্থাৎ তিন নগরীর বায়ুও আজ অস্বাস্থ্যকর।
বায়ুদূষণে আজ প্রথম স্থানে আছে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। এ শহরের স্কোর ১৯৯।
রাজধানী ও এর আশপাশের এলাকাগুলোর মধ্যে যেসব এলাকায় বায়ুর মান মারাত্মক দূষিত, সেগুলোর মধ্যে আছে মিরপুরের ইস্টার্ন হাউজিং(৪৫৯), সাভারের হেমায়েতপুর (৩০৬) ও পেয়ারাবাগ রেললাইন (২৮৯)।
রাজধানীর বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে আছে কলকারখানা ও যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো। দূষণ রোধে হাঁকডাক এবং নানা ধরনের প্রকল্পও কম হয়নি সরকারি স্তরে। কিন্তু দূষণ কমছে না।
দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। আবার গত জানুয়ারিতে দূষণের মান ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হিজরতের ৫টি শিক্ষা
সাহাবিদের হিজরতের ঘটনাবলি কেবল ইতিহাসের অংশ নয়, বরং তা মুমিন জীবনের জন্য পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। তাদের হিজরতের ঘটনা ও ত্যাগের আদর্শ থেকে কয়েকটি মৌলিক শিক্ষা উঠে আসে:
১. হিজরত প্রথমত আল্লাহর আদেশ পালনহিজরত কেবল কৌশলগত পরিকল্পনা ছিল না, বরং ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে আসা এক ইবাদতমূলক নির্দেশ। এই কারণে সাহাবিরা সবচেয়ে প্রিয় বস্তু—ঘরবাড়ি, সম্পদ, আত্মীয়স্বজন—সহজে ত্যাগ করতে পেরেছিলেন। (মুহাম্মদ সাইদ রমাদান আল-বুতি, ফিকহুস সিরাহ, পৃষ্ঠা: ১৫৬, দারুল ফিকর, দামেস্ক, ২০০৪)
২. ইমানের জন্য সর্বোচ্চ আত্মত্যাগহিজরত শেখায় যে একটি জাতির ভিত্তি স্থাপন এবং সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য চরম মূল্য দিতে হয়। সুহাইব তাঁর সব সম্পদ, আবু সালামা তাঁর পরিবার এবং বনু জাহশ (রা.) জন্মভূমি ত্যাগ করে এই মূল্য পরিশোধ করেছিলেন। এই ত্যাগ বিনা মূল্যে অর্জিত হয়নি।
আরও পড়ুনমদিনায় হিজরত: ইসলামের ৬টি মাইলফলক০২ জুলাই ২০২৫৩. ইমানের সম্পর্ক অন্য সব সম্পর্ক থেকে ঊর্ধ্বেওমর (রা.) আইয়াশকে যখন তার মায়ের দোহাইয়ের ফিতনা থেকে সতর্ক করেছিলেন, তা প্রমাণ করে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি আনুগত্যের বন্ধন অন্য সব জাগতিক সম্পর্ক (গোত্র, পরিবার, রক্ত) থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।
৪. ঐকান্তিক প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসাহিজরত মোটেই বিশৃঙ্খল ছিল না। ওমর (রা.)-এর পরিকল্পনা, কাফেলাবদ্ধ হয়ে যাত্রা এবং কৌশল অবলম্বন—সবই প্রমাণ করে যে আল্লাহর ওপর নির্ভরতার পাশাপাশি মানবীয় প্রচেষ্টা ও সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করাও আবশ্যক।
আরও পড়ুনমহানবী (সা.)–র হিজরত মদিনায় হলো যে কারণে২৯ জুন ২০২৫৫. আল্লাহর দয়ার বিশালতাএই ঘটনা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে ফিতনা ও দুর্বলতা মানুষের জীবনে আসতে পারে। কিন্তু যখন তারা মক্কায় বন্দী হয়ে নিজেদের পাপী মনে করছিলেন, তখন আল্লাহ তাআলা এই আয়াতটি নাজিল করে আশার দরজা খুলে দেন, ‘বলো, “হে আমার বান্দাগণ, যারা নিজেদের ওপর বাড়াবাড়ি করেছ (পাপ করেছ), তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।”’ (সুরা জুমার, আয়াত: ৫৩)
এই আয়াতটি ছিল তাঁদের জন্য এক ঐশী ক্ষমা ও নতুন সুযোগের বার্তা।
হিজরত কেবল একটি ঐতিহাসিক ঘটনা নয়; এটি একটি অক্ষয়–দর্শন—যেখানে ইমান, ধৈর্য এবং আত্মত্যাগের সমন্বয়ে একটি আদর্শ সমাজ গঠনের বীজ নিহিত ছিল। এই দর্শনই মুসলমানদের নতুন এক দিগন্তে পৌঁছে দেয়।
আরও পড়ুনআবিসিনিয়ায় নারী সাহাবিদের দ্বিতীয় হিজরত১৪ নভেম্বর ২০২৫