ভারত সুবিধা পাচ্ছে, এটা বুঝতে ‘রকেটবিজ্ঞানী হওয়ার প্রয়োজন নেই’
Published: 28th, February 2025 GMT
‘স্বাগতিক পাকিস্তান, কিন্তু ঘরের মাঠের সুবিধাটা পাচ্ছে ভারত’—সম্প্রতি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিশেষ সুবিধা পাওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের সূত্র ধরে কথাটা বলেছিলেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন। স্বাগতিক হয়েও গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলতে পাকিস্তানকে যেখানে আরব আমিরাতে ভ্রমণ করতে হয়েছে, সেখানে দুবাইয়ে থেকেই নিজেদের সব ম্যাচ খেলছে ভারত।
একই মাঠ ও কন্ডিশনে খেলতে পারা এবং ভ্রমণের ধকল এড়িয়ে ভারত যে আলাদা সুবিধা পাচ্ছে, সেদিকটায় ইঙ্গিত করেই কথাটা বলেছিলেন নাসের। এবার একই সুর শোনা গেল দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রেসি ফন ডার ডুসেনের মুখেও। তিনি বলেছেন, ভারত যে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে, সেটি বুঝতে ‘রকেটবিজ্ঞানী’ হওয়ার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ভারতের সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি এমনিতে স্পষ্ট, সে জন্য বিশেষ কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই।
দক্ষিণ আফ্রিকা যেমন এখনো জানে না সেমিফাইনাল বা ফাইনালে খেলার সুযোগ পেলে তারা কোথায় খেলবে—দুবাইয়ে, নাকি পাকিস্তানে! অন্যদিকে ভারত আগে থেকেই জানে, কোন মাঠে এবং কী ধরনের কন্ডিশনে তারা সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ খেলবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এ সুবিধা একমাত্র ভারত ছাড়া আর কেউই পাচ্ছে না।
আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফি: ‘পাকিস্তান স্বাগতিক, ঘরের মাঠের সুবিধা পাচ্ছে ভারত’২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্বাগতিক দেশ পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। পরে হাইব্রিড পদ্ধতিতে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয় এবং ভারতের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়। যে কারণ স্বাগতিক হয়েও পাকিস্তানকে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্য দুবাইয়ে যেতে হয়েছে।
রেসি ফন ডার ডুসেন.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ছয় লাখ শিশু স্থায়ী পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে
চারদিক ঘিরে মারণাস্ত্র নিয়ে প্রস্তুত ইসরায়েলের সেনারা। তাদের রাইফেল, ট্যাঙ্ক ও মর্টার তাক করা গাজার বাসিন্দাদের দিকে। উপত্যকার ২০ থেকে ২২ লাখ বাসিন্দার বের হওয়ার নেই পথ। ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানির মতো অতি প্রয়োজনীয় পণ্য। এর মধ্যেই থেকে থেকে চলছে বিমান হামলা। গাজার বাসিন্দারা মারা যাচ্ছেন। আর যারা আহত হচ্ছেন, হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা ছাড়াই তাদের প্রাণ যাচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে শুরু করে হাসপাতাল, ধর্মালয়– কিছুই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না।
গাজায় ইসরায়েলের অন্তহীন এ নৃশংসতায় সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছে শিশুরা। অনাহারে তারা হাড্ডিসার। একসময় যে শিশুটি স্কুলে যেত, যার সুন্দর পরিবার ছিল, মা-বাবা, ভাইবোন ছিলেন; সেই শিশুটি এখন খাবারের খোঁজে রাস্তায় ফিরছে। পায়ে জুতা নেই। অনাদরে উশকোখুশকো চুল। ছেঁড়া জামা। ক্ষুধার তাড়নায় তার শোক প্রকাশের ভাষা নেই।
অবরুদ্ধ গাজায় বাড়ছে রোগের প্রকোপ। ওষুধ নেই। হাসপাতাল গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইসরায়েলের বোমা। গাজা সিটি থেকে আলজাজিরার সাংবাদিক হানি মাহমুদ জানান, আহতরা চিকিৎসার অভাবে হাসপাতালে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, সেখানে অন্তত ৬ লাখ শিশু পঙ্গুত্বের ঝুঁকিতে। ওষুধের সরবরাহ বন্ধের কারণে পোলিও টিকা প্রবেশ করতে পারছে না, যা উপত্যকার অর্ধেক শিশুকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, পুষ্টি ও বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে গাজার শিশুরা নজিরবিহীন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে।
গত ২ মার্চ গাজায় ত্রাণের ট্রাক প্রবেশ আটকে দেয় ইসরায়েল। এরপর থেকে ক্রমেই পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অব্যাহত বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল মঙ্গলবার এক দিনে আরও ২৬ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫১ হাজার ২৬৬ জনে পৌঁছেছে। আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৬ হাজার ৯৯১। গত ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের পর এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৯০ জন নিহত ও ৪ হাজার ৯৫০ জন আহত হয়েছেন।
হামলার পাশাপাশি এখন উপত্যকার বাসিন্দাদের ধরে নিচ্ছে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের প্রিজনার্স সোসাইটি জানায়, গাজা থেকে আটক ৬০ ফিলিস্তিনির নাম প্রকাশ করেছে তারা।
সন্তান জন্মকালে স্ত্রীর পাশে থাকতে পারলেন না খলিল
যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনের সমর্থনে আন্দোলন করে গ্রেপ্তার হওয়া মাহমুদ খলিল সদ্য বাবা হলেও সন্তানের মুখ এখনও দেখতে পারেননি। সন্তান জন্মদানের সময় তাঁকে জামিন দিতে অস্বীকৃতি জানায় মার্কিন কর্তৃপক্ষ। ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন করায় আদালতের রায়ে মাহমুদ খলিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়নের প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছেন। এ অবস্থায় আটক কয়েক ফিলিস্তিন সমর্থক শিক্ষার্থী মার্কিন সিনেটরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
যুদ্ধ বন্ধে নতুন প্রস্তাব মিসর ও কাতারের
গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনার সঙ্গে যুক্ত এক ফিলিস্তিনি কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার বিবিসি জানায়, যুদ্ধ বন্ধ করতে নতুন প্রস্তাব পেশ করেছে কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতাকারীরা। নতুন এ প্রস্তাবে পাঁচ থেকে সাত বছরের স্থায়ী যুদ্ধবিরতির উল্লেখ রয়েছে। এ ছাড়া সেখানে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে সব ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তি, যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ও গাজা থেকে সম্পূর্ণরূপে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি ইসরায়েলের দেওয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব হামাস খারিজ করে দেওয়ার পর নতুন করে প্রস্তাব পেশ করল মিসর ও কাতার। এ প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করতে হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন নেতা কায়রোতে যাবেন বলে জানা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত নতুন প্রস্তাবের বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি ইসরায়েল।