রমজান মাসে একটি ওমরাহ করলে একটি হজ আদায়ের সমান সওয়াব হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বরাতে একটি হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজান মাসে ওমরাহ করা আমার সঙ্গে হজ আদায় করার সমতুল্য। (বুখারি: ১৮৬৩)
রোজা রাখা
রমজান মাসে রোজা বা সিয়াম পালন করা ফরজ। মহান আল্লাহ বলেছেন, সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে, যারা এই মাসটিতে পাবে তারা যেন এই মাসে সিয়াম পালন করে। (সুরা বাকারা: ১৮৫)
সিয়াম পালনের ফজিলত সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ (সা.
রমজানে ওমরাহ পালনের সময়ে রোজা রাখার তাৎপর্য অনেক।
আরও পড়ুনপাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেভাবে এল০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩সময়মতো নামাজ
সিয়াম পালনের সঙ্গে সঙ্গে সময়মতো নামাজ আদায় করার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হয়।
ওমরাহ পালন করার সুবাদে মক্কায় পবিত্র কাবা শরিফে বা মদিনার মসজিদে নববীতে অবস্থান করে বিশাল জামাতে সময়মতো নামাজ পড়তে পারবেন। কোরআনে বলা হয়েছে, নির্ধারিত সময়ে সালাত কায়েম করা মোমিনদের জন্য অবশ্য কর্তব্য (সুরা নিসা: ১০৩)
আরও পড়ুনরোজার প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩কোরআন পাঠ ও অন্যকে শেখানো
আল কোরআনে আছে, রমজান মাসে কোরআন নাজিল করা হয়েছে মানুষের জন্য পথপ্রদর্শকরূপে এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনা ও সত্যাসত্যের পার্থক্য নির্ণয়কারী হিসেবে। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৫)।
রমজান মাসে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। তাই এ মাসের অন্যতম আমল সঠিকভাবে কোরআন শেখা। কোরআন শিক্ষা করা ফরজ। কেননা কোরআনে বলা হয়েছে, ‘পড়ো তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন (সুরা আলাক: ১)।’
রমজান মাস অপরকে কোরআন শেখানোর উত্তম সময়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কোরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয় (বুখারি: ৫০২৭)।
ওমরাহ পালন করার সুবাদে মক্কায় পবিত্র কাবা শরিফে বা মদিনার মসজিদে নববিতে অবস্থান করে কোরআন তিলাওয়াত করা, শুদ্ধ ভাবে শেখা, অপরকে শেখানো যায়।
আরও পড়ুনইসলামের সহজ ইতিহাস২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩তওবা ও ইস্তিগফারতওবা শব্দের আভিধানিক অর্থ ‘ফিরে আসা’। এর অন্তর্নিহিত অর্থ গুনাহের কাজ আর না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া। তওবা করলে আল্লাহ খুশি হন।
আল-কোরআনে আছে, ‘হে মোমিনগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো, বিশুদ্ধ তওবা; তাহলে তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের মন্দ কাজগুলো মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের দাখিল করাবেন জান্নাতে যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত।’ (সুরা আত-তাহরীম: ৮)
রমজান মাসে মক্কা মদিনায় অবস্থান করার সময় তওবা ইস্তিগফার করার বেশি বেশি সুযোগ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুনসুরা ইয়াসিনের সার কথা১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩তাকওয়া অর্জনতাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপকাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে। আর রমজান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম। কোরআনে আছে, ‘হে মোমিনগণ! তোমাদের জন্য সিয়ামের বিধান দেওয়া হল, যেমন বিধান তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর দেওয়া হয়েছিল। যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।’ (সুরা আল বাকারা: ১৮৩)
এসব ফজিলত লাভের জন্য আমাদের সচেষ্ট হওয়ার সুযোগ আছে। যার ওপর ফরজ হয়েছে তিনি কালবিলম্ব না করে রমজানে ওমরাহ এবং হজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে পারেন।
আরও পড়ুনসুরা গাশিয়ায় কিয়ামতের কথা০৯ মার্চ ২০২৩আরও কিছু আমলতারাবির নামাজ পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। মক্কার মসজিদুল হারামে বা মসজিদে নববিতে ইমামের সুললিত কণ্ঠে কোরআন তিলাওয়াত শুনবেন ও তারাবির নামাজ আদায় করবেন, অন্য রকম অনুভূতি হবে।
আল্লাহ বলেছেন, ‘স্মরণ করো, তোমাদের প্রতিপালক ঘোষণা করেন, তোমরা কৃতজ্ঞ হলে তোমাদেরকে বাড়িয়ে দেব আর অকৃতজ্ঞ হলে অবশ্যই আমার শাস্তি হবে কঠোর।’ (সুরা ইবরাহীম: ৭)। রমজান মাসে আল্লাহর বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করার আমল করা যায়।
এমনিতেই তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার মধ্যে বিরাট সাওয়াব ও মর্যাদা রয়েছে। রমজানের এর ফজিলত আরও বেশি। এ সময় সাহরি খাওয়ার জন্য উঠতে হয় বলে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার সুযোগও বেশি।
আরও পড়ুনরমজান মাসে ওমরাহ পালন১১ মার্চ ২০২৩এ মাসে গরিব–মিসকিনদের প্রতি সহানুভূতিশীলতার সঙ্গে দান–খয়রাত করা ভালো। হিসাব করে এ মাসে জাকাত দেওয়া উত্তম।
ইতিকাফ অর্থ ‘অবস্থান করা’, অর্থাৎ মানুষদের থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কোরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইস্তিগফার ও অন্যান্য ইবাদতের মাধ্যমে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদতের মর্যাদা অনেক। ওমরাহ পালন করার সুবাদে মক্কায় পবিত্র কাবা শরিফে বা মদিনার মসজিদে নববিতে ইতিকাফ করার অবকাশ আছে।
রমজান মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল-কোরআনের ঘোষণা, ‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা কদর: ৪)
দোয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এ জন্য এ মাসে আল্লাহর কাছে মন থেকে কেঁদে দোয়া করা যায়।
সাহরি খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে। সিয়াম পালনের এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। সময়মতো ইফতার করা এবং অন্যদের ইফতার করানোও বড় সওয়াবের কাজ।
আরও পড়ুনসুরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াতের গুরুত্ব১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন ম স ন কর র স ক রআন শ র মসজ দ র জন য বল ছ ন আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিটের শুনানি বুধবার
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার ঘটনায় করা মামলায় আসামি গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে—ঢাকা মহানগর পুলিশের এমন সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট শুনানির জন্য আগামী বুধবার (২৩ এপ্রিল) দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
শুনানির জন্য বিষয়টি উত্থাপন করা হলে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এই দিন ধার্য করেন।
৯ এপ্রিল ঢাকা মহানগর পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় আসামি গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়। আদেশে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংক্রান্ত মামলায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এজাহারভুক্ত আসামির সংখ্যা অধিক। এসব মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমাণসহ অবশ্যই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। উপযুক্ত প্রমাণ ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলার এজাহারভুক্ত কিংবা তদন্তে প্রাপ্ত কোনো আসামি গ্রেপ্তার না করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এই আদেশের বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন গতকাল রোববার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। আজ সকালে আদালতে রিটের বিষয়টি উত্থাপন করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রিট আবেদনকারী মো. জসিম উদ্দিন।
আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির সিদ্ধান্তের বৈধতা নিয়ে রিট২২ ঘণ্টা আগেপরে আইনজীবী মো. জসিম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিটের বিষয়টি উত্থাপন করা হলে আদালত ২৩ এপ্রিল শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।’
রিটের প্রার্থনায় দেখা যায়, ৯ এপ্রিলের অফিস আদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়। রুল হলে বিচারাধীন অবস্থায় অফিস আদেশের কার্যক্রম স্থগিত চাওয়া হয়েছে রিটে। স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার, ডিবি প্রধান, সিআইডি প্রধান, এসবি প্রধানসহ সাতজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ঘটনার মামলায় গ্রেপ্তারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে১২ এপ্রিল ২০২৫