সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

দেশে জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইজিবাইকচালক আল আমিন হত্যা ও লাশ গুমের মামলার অন্যতম আসামি নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি আবু মো. নোমান হাসানকে (৩২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারের পর বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাকে আদালতে হাজির করলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আকতার জুলিয়েট তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর পরপরই তাকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়।

নোমান হাসানকে কারাগারে নেওয়ার সময় আদালত চত্বরে জড়ো হওয়া ছাত্রদল-যুবদলের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করে তার রিমান্ড ও বিচার দাবি করেন। এদিকে, নোমানকে তার চাচা আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মনা দেখতে থানায় গেলে তাকেও গ্রেফতার করা হয়। এই দুজনকেই বিএনপি দলীয় কার্যালয় ভাঙার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।

এর আগে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নীলফামারী সদর উপজেলার ধনীপাড়া এলাকা থেকে আবু মো.

নোমান হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশের সহায়তায় তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাব-১৩। পরে র‌্যাব তাকে নীলফামারী সদর থানায় হস্তান্তর করলে সেখান থেকে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ নোমান হাসানকে পঞ্চগড়ে নিয়ে এসে আদালতে হাজির করে।

জানা যায়, পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুম হয় আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত বছরের ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেন। এ মামলায়  আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এ মামলায় অন্যতম আসামি ছিলেন নিষিদ্ধ সংগঠন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু নোমান হাসান। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও তিনটি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তিনি পঞ্চগড় পৌরসভার ডোরোপাড়া এলাকার প্রয়াত মোশারফ হোসেনের ছেলে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের জেলা সভাপতি আবু মো. নোমান হাসানকে র‌্যাবের সহযোগিতায় নীলফামারী থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আল আমিন হত্যা ও গুমের মামলাসহ ৪টি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তিনি। একই সঙ্গে তার চাচা মিজানুর রহমান মনাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।’

এনজে

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: সদর থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু, ইলাই আমরার ঈদ’

দলা পাকানো চালের গুঁড়া চ্যাপটা করে ছোট ছোট বড়া বানানোর পর সেগুলো কড়াইয়ে দিচ্ছিলেন লাভলী বেগম (২৫)। চুলায় খড়ের আগুন কমে আসছিল বারবার। মাথা নিচু করে চুলার নিচ দিকে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায় নাস্তানাবুদ অবস্থা। কুলায় যে পরিমাণ চালের গুঁড়া, তাতে ২০ থেকে ৩০টা বড়া হবে।

ঈদের আয়োজন বলতে কি শুধু এই কয়টি বড়া? লাভলী বলেন, ‘মাইয়ে (মা) কিছু গুড় আনছিলা। গুড়ের হান্দেশ (সন্দেশ) করছি। আর কিতা করমু। সকালে বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু। ইলাই আমরার ঈদ।’ কথা শেষের সঙ্গে সঙ্গে লাভলী বেগমের একটা দীর্ঘশ্বাস যেন হাওরের বাতাসে মিশে গেল। তাঁর পাশে তখন পাখির ছানার মতো বসা দুই সন্তান সাহানা (৫) ও আবির (৩)। তাদের চোখ কড়াইয়ে, তেলের ওপর ভাসতে থাকা বড়ার দিকে।

লাভলী বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরপারের কান্দাহাটি গ্রামে। গতকাল রোববার পড়ন্ত বিকেলে ওই গ্রামে গিয়ে কথা হয় লাভলী ও তাঁর পরিবারের অন্যদের সঙ্গে। এর আগে গত বছরের জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বন্যার সময় ওই গ্রামের যাওয়ার পর প্রথম দেখা হয়েছিল। বন্যা সব শেষ করে দিয়ে গেছে তাঁদের। হাওরের ঢেউয়ে তখন ঘরটি ভেঙে পড়ে।

লাভলী তিন সন্তান নিয়ে মা সবুরা বেগমের সংসারে আছেন। বাবা নেই; নেই মানে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে চলে গেছেন বহু আগে। লাভলীরও একই অবস্থা, স্বামী আরেকটা বিয়ে করে আলাদা থাকেন। এখন সবুরার আটজনের সংসার। ছেলে জহুরুল ইসলামের (২০) স্ত্রী ও এক মেয়ে আছে। এই সংসার মূলত সবুরা বেগম ও ছেলে জহুরুল ইসলামের শ্রম-ঘামে চলে। সবুরা, জহুরুল দুজনই শ্রমিক। যখন যে কাজ পান, সেটাই করেন, কিন্তু অভাব যায় না।

ঘরের চুলায় তেলের বড়া ভাজছেন লাভলী বেগম। সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপারের কান্দিগাঁও গ্রাম থেকে গতকাল রোববার বিকেলে

সম্পর্কিত নিবন্ধ