যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের একটি লামাকে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক জীবিত পোষা লামা বলে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষ। ওই লামার বয়স ২৭ বছর ২৫০ দিন।
লামা দেখতে অনেকটা ছাগল বা ভেড়ার মতো। তবে সেটির গলা ছাগলের গলার চেয়ে বেশ লম্বা, অনেকটা উটের মতো। মুখের আকৃতিও উটের মতো হওয়ায় হঠাৎ করে তাকালে ছোটখাটো উট মনে হতে পারে।
নর্থ ক্যারোলাইনার এই লামার শরীরের ওপরের অংশের রং সাদা। হয়তো এ কারণেই এটির নাম ‘হোয়াইটটপ’। ২০০৬ সাল থেকে প্রাণীটি ভিক্টরি জংশন ক্যাম্পে রয়েছে। গুরুতর অসুস্থ এবং দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের ভ্রমণ ও আনন্দের জন্য র্যান্ডলম্যানের এই ক্যাম্পে আনা হয়ে থাকে।
ভিক্টরি জংশনের পরিচালক বিলি জো ডেভিস গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসকে বলেছেন, ‘আমাদের ক্যাম্পে শিশুরা এলে সে (লামা) তাদের সঙ্গে খুবই ভালো ব্যবহার করে। সে শুধু শুয়ে-বসে থাকে এবং দুপুরের খাবারের সময় না হওয়া পর্যন্ত বসা থেকে উঠে না। শিশুদের তাকে ছুঁয়ে দেখতে, আদর করতে ও ভালোবাসতে দেয়। সে এমন আচরণ করে যেন এটাই তার কাজ, হ্যাঁ, এটাই তার চাকরি।’
বছরজুড়েই খোলা থাকে ভিক্টরি জংশন, চলে শিশুদের ক্যাম্প। শিশুরা সেখানে ঘুরে বেড়াতে আসে। সেখানে হোয়াইটটপ ছাড়াও নয়টি ঘোড়া, দুটি ছাগল, দুটি খরগোশ, দুটি খুদে গাধা এবং একটি ছোট্ট আকারের পাহাড়ি গরু আছে।
পাহাড়ি গরুটির নাম গুস-গুস, হোয়াইটটপের সঙ্গে তার খাতির সবচেয়ে বেশি।
এর কারণ ব্যাখ্যায় ডেভিস বলেন, ‘কারণ, তারা একসঙ্গে অনেক বেশি খেলাধুলা করে। গুস-গুস হোয়াইটটপকে সম্ভবত গরু মনে করে। গুস-গুস হোয়াইটটপের ওপর দিয়ে লাফিয়ে যেতে এবং সেটির সঙ্গে খেলতে পছন্দ করে। আমি গুস-গুসকে আটকানোর চেষ্টা করি। কারণ, হোয়াইটটপ অনেকটা বুড়ো হয়ে গেছে। কিন্তু হোয়াইটটপ ওই প্রাণীর সঙ্গে খুবই ভালো আচরণ করে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাড়ির শব্দে বিরক্ত হয় পাখিরা
সাতসকালে বারান্দায় এক কাপ চা নিয়ে দাঁড়ালে দারুণ এক শহরের দেখা মেলে। একটু সময় বাড়লেই দূর থেকে বাড়তে থাকে ট্রাফিকের শব্দ আর গাড়ির হর্ন। কখনো কখনো গাড়ির শব্দে আমাদের মেজাজ বিগড়ে যায়। এমন মেজাজ বিগড়ে যাওয়ার ঘটনা পাখিদের মধ্যেও দেখা যায় বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বের নানা প্রান্তে পাখিরা শহরায়ণের কারণে বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ছে। নতুন এক গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, রাস্তাঘাটের গাড়ির অতিরিক্ত শব্দের কারণে পাখিরা বিরক্ত হয়। বিজ্ঞানীরা গ্যালাপাগোসের কিছু পাখির ওপর এই পরীক্ষা চালিয়ে গাড়ির শব্দের প্রভাব জানার চেষ্টা করেছেন। রাস্তাঘাটের গাড়ির শব্দের কারণে অনেক পাখিকে আগ্রাসী আচরণ করতে দেখা যায়। এই রাগের কারণে প্রায়ই কিছু পাখি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে লড়াইয়ে লিপ্ত হয়। গাড়ির শব্দে মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় পাখিদের।
যুক্তরাজ্যের অ্যাঙ্গেলিয়া রাস্কিন ইউনিভার্সিটি (এআরইউ) ও অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনরাড লরেঞ্জ রিসার্চ সেন্টারের গবেষকেরা পাখির এই অদ্ভুত রাগের আচরণ সম্পর্কে তথ্য প্রকাশ করেছেন। পাখিদের আচরণের তথ্য অ্যানিমাল বিহেভিয়ার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষকেরা গান গাওয়া পাখি ইয়েলো ওয়ার্বলারদের ওপর দৃষ্টি দেন। গ্যালাপাগোসে এদের বাস অনেক। এই প্রজাতির উপস্থিতির কারণে গ্যালাপাগোসকে একটি প্রাকৃতিক জীবন্ত পরীক্ষাগার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
গবেষণার জন্য ফ্লোরিয়ানা ও সান্তা ক্রুজ দ্বীপের ওয়ার্বলারদের আবাসের আশপাশে নজর রাখেন। এসব পাখি বাস করে এমন ৩৮টি স্থানে একটি স্পিকার থেকে রেকর্ড করা গাড়ির শব্দ অনবরত বাড়াতে থাকেন। এসব পাখির বাস নিকটতম রাস্তার সংলগ্ন ছিল বা রাস্তা থেকে কমপক্ষে ১০০ মিটার দূরে ছিল।
গবেষণার ফলাফলে দেখা যায়, রাস্তাসংলগ্ন অঞ্চলে বসবাসকারী পাখিরা নিজেদের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। গাড়ির শব্দ বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের আগ্রাসন স্তর বেড়ে যায়। আবার দেখা যায়, যেসব পাখি রাস্তা থেকে দূরে থাকে, তাদের রাগের মাত্রা কম। বিজ্ঞানী কাগলার আকচে বলেন, পাখিরা নিজের প্রতিরক্ষা হিসেবে গানকে সংকেত হিসেবে ব্যবহার করে। গাড়ির শব্দ পাখির সংকেতকে হস্তক্ষেপ করে। পাখিরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় গাড়ির শব্দে, আর এতেই রেগে যায় পাখিরা।
গাড়ি শব্দ শুনে রাস্তার ধারের পাখিরা তাদের গানের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে দেয়। গাড়ির শব্দের চেয়ে নিজেদের শব্দ বেশি জোরে শোনাতে চায় পাখিরা। গাড়ির বিকট শব্দের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না বলেই শারীরিকভাবে আক্রমণাত্মক ভাব প্রদর্শন করে পাখিরা।
সূত্র: এনডিটিভি