‘আমার স্বামীকে ওরা বাঁচতে দিল না, আমি এই হত্যার বিচার চাই’
Published: 28th, February 2025 GMT
‘আমার স্বামী রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ ও মানুষের উপকার করতেন। তাঁর ইচ্ছা ছিল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন করে মানুষের আরও বেশি সেবা করবেন। কিন্তু ওরা আমার স্বামীকে বাঁচতে দিল না। আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী নূরে আলমের পরিকল্পনায় আর বিএনপি নেতা লুৎফর রহমান ও তার সহযোগীরা আমার স্বামীকে নির্মমভাবে মেরে ফেলল। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক এজিএস গোলাম জাকারিয়া বাদলের স্ত্রী পপি বেগম এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে স্বামীর বাড়িতে বসে বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলেন তিনি।
বিএনপি নেতা গোলাম জাকারিয়া সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের ভীমগঞ্জ গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে। তাঁকে হত্যার অভিযোগে এখনো কোনো মামলা হয়নি। তবে সদর থানার পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে দুজনকে আটক করেছে।
গোলাম জাকারিয়ার স্ত্রী পপি বেগম আরও বলেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও কামারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নূরে আলম সিদ্দিকীর বিভিন্ন সন্ত্রাসীমূলক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করতেন তাঁর স্বামী। এ জন্য নূরে আলম বিভিন্ন সময় তাঁর স্বামীকে হুমকি দিতেন। এমনকি কয়েক মাস আগে তাঁর স্বামীর ওষুধের দোকান ভাঙচুরও করেন। বিভিন্ন মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত নূরে আলম সিদ্দিকী সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়ার পর বর্তমানে শেরপুর জেলা কারাগারে বন্দী রয়েছেন। কামারিয়া ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমান কারাগারে গিয়ে নূরে আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। এরপর নূরে আলমের নির্দেশে লুৎফর রহমান ও তাঁর ১৫-১৬ জন সহযোগী তাঁর (পপি বেগম) স্বামী জাকারিয়া বাদলকে কুপিয়ে হত্যা করেন। নূরে আলমের নির্দেশে তাঁর (জাকারিয়া) ওপর হামলা করার কথা মৃত্যুর আগে জাকারিয়া স্বজনদের কাছে বলে গেছেন।
তবে নূরে আলম সিদ্দিকী কারাগারে আটক থাকায় ও লুৎফর রহমান পলাতক থাকায় বিএনপি নেতা পপি বেগমের স্বামী গোলাম জাকারিয়াকে হত্যার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে গোলাম জাকারিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, জাকারিয়া হত্যাকাণ্ডে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসী মধ্যে শোকে মুহ্যমান। বাড়ির আঙিনায় অনেক প্রতিবেশী ও স্বজন ভিড় করে আছেন। জাকারিয়া বাদলের স্ত্রী পপি বেগমকে জড়িয়ে ধরে বড় ছেলে তানভীর আহমেদ কাঁদছেন। আর ছোট ছেলে গোলাম তাহসিনুর তাবিব অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শুয়ে আছে।
শেরপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত বিএনপি নেতা গোলাম জাকারিয়ার বড় ছেলে তানভীর আহমেদ মা পপি বেগমকে জড়িয়ে ধরে কাঁদছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার ভীমগঞ্জ গ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল ৎফর রহম ন সদর উপজ ল আম র স ব ম ব এনপ আলম র
এছাড়াও পড়ুন:
কাঁদতে কাঁদতে গাজার বাসিন্দা বললেন, ‘আমরা তো সব হারিয়েছি, ঈদটা কষ্টের’
ফিলিস্তিনের গাজায় রোববার পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তবে ইসরায়েলের নৃশংস হামলায় বিধ্বস্ত উপত্যকাটিতে এ দিন ছিল না উৎসবের আমেজ। ঈদের দিনও সেখানে নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। মুসলিমদের কাছে খুশির এ দিনটিতেও গাজায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৩৫ ফিলিস্তিনি।
দীর্ঘ ১৭ মাস ধরে চলা হামলায় গাজায় আর কোনো মসজিদ অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। রোববার তাই উপত্যকাটির বাসিন্দাদের ঈদের নামাজ আদায় করতে হয়েছে ধ্বংস হয়ে যাওয়া মসজিদের বাইরে। আগের দিনে গাজার যেসব শিশু নতুন পোশাক পরে আনন্দ করত, তারা এখন ক্ষুধায়-আতঙ্কে কাতর। ঈদ উপলক্ষে নেই তেমন রান্নার আয়োজন।
ইসরায়েলের হামলা শুরুর আগে গাজার ফিলিস্তিনিরা ঈদের সকালে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উদ্যাপন করতেন। তবে এখনকার চিত্র ভিন্ন। বহু গাজাবাসী তাঁদের পরিবারের সদস্যকে হারিয়েছেন। রোববার অনেককে দেখা যায় প্রিয়জনের কবরের পাশে। অনেকে হাজির হন হাসপাতালের মর্গে—শেষবারের মতো কাছের মানুষের মরদেহটি দেখতে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজার বাসিন্দা আদেল আল-শায়ের তাঁর পরিবারের ২০ সদস্যকে হারিয়েছেন। মধ্য গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় ঈদের নামাজ শেষে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। বলেন, ‘এই ঈদটা কষ্টের। আমরা আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলোকে হারিয়েছি। আমাদের সন্তান, আমাদের জীবন, আমাদের ভবিষ্যৎ—সবকিছু... আমরা তো সব হারিয়েছি।’
ঈদের দিন স্বজনের কবরের পাশে গাজা নগরীর এক নারী