আজ পর্দা নামছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর। এবার মেলার প্রতিপাদ্য ছিল– ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ’। গণঅভ্যুত্থান-উত্তর এই বইমেলা নিয়ে পাঠক, লেখক ও প্রকাশকদের অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় একরাশ হতাশা নিয়ে আজ শুক্রবার মেলা প্রাঙ্গণ ছাড়বেন প্রকাশকরা।
প্রকাশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এবারের বইমেলায় সবচেয়ে হতাশাজনক বিষয় হচ্ছে কম বিক্রি। বলা যায়, গত বছরের চেয়ে ৫০ শতাংশ বিক্রি কম হয়েছে।
শেষ দিনে এসে চলুন ফিরে দেখি এবারের বইমেলা কতটা আলোচনার জন্ম দিল। গত নভেম্বরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মেলা হওয়া নিয়ে একটা শঙ্কা তৈরি হয়। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ৬ নভেম্বর বাংলা একাডেমিকে চিঠি দিয়ে জানায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পরিবর্তে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে মেলার আয়োজন করতে হবে। ১৩ নভেম্বর সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর আশ্বাসে সেই শঙ্কা কেটে যায়।
গত ৯ জানুয়ারি মেলা পরিচালনা কমিটি কয়েকটি প্রকাশনীর প্যাভিলিয়ন বাতিল এবং স্টল ছোট করে দেয়। ‘সুবিচারপ্রত্যাশী প্রকাশকবৃন্দ’ ব্যানারে ক্ষুব্ধরা বাংলা একাডেমির কাছে চিঠি দিয়ে এর প্রতিকার চায়। পরে প্রকাশনীগুলোর স্টল, প্যাভিলিয়ন বরাদ্দে অদলবদল আনা হয়।
১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে বইমেলার নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলেন ইসলামী যুব আন্দোলন পরিচয় দেওয়া একদল ব্যক্তি। তারা যুব সম্মেলনের জন্য উদ্যান ব্যবহারের অনুমোদন নেওয়া হয়েছে বলে জানান। এর পর কাজ বন্ধ করে দেন শ্রমিকরা।
এত সব বাধা ডিঙিয়ে বইমেলা যথারীতি শুরু হয় ১ ফেব্রুয়ারি। ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম শিশুপ্রহরে সিসিমপুর না থাকায় শিশুদের মন খারাপ হয়।
১০ ফেব্রুয়ারি তসলিমা নাসরিনের বই রাখায় মেলায় সব্যসাচীর স্টলে তৌহিদি জনতা চড়াও হয়। তারা স্টলটিতে গিয়ে প্রকাশককে ঘিরে ধরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে প্রকাশক শতাব্দী ভবকে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে যায় পুলিশ। রাতে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেয়। বাংলা একাডেমি থেকে এ বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিল। তবে এ বিষয়ে আর কোনো আপডেট সংবাদ পাওয়া যায়নি।
১৫ ফেব্রুয়ারি স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার বিক্রি করায় একটি স্টল বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা তৈরি হয়। স্টল বন্ধ-সংক্রান্ত একটি চিঠি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে লেখা ছিল, ‘বেশ কিছু ইসলামিস্ট গ্রুপ’ স্টলটিতে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিক্রিতে আপত্তি জানায়। পরে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজম বলেন, ‘এই স্টলটি মেলায় নীতিমালা অনুযায়ী অনুমোদন নেয়নি। এ জন্য বন্ধ করা হয়েছে।’
কবি ও শিক্ষক সোহেল হাসান গালিবের একটি কবিতা ঘিরে সমালোচনা শুরু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে কবিতায় ‘নবীকে কটাক্ষ’ করার অভিযোগ ওঠে। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো ও রিমান্ডে নেওয়া হয়। ‘আমার খুতবাগুলি’ নামে গালিবের বইটি উজান প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বইমেলায় স্টলে হামলার শঙ্কায় চার দিন ধরে স্টলটি বন্ধ থাকে। ১৭ ফেব্রুয়ারি লেখক-প্রকাশকরা মেলায় মানববন্ধন করে গালিবের মুক্তির জন্য ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেন।
২২ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বেচাকেনা শুরু হওয়া মাত্র বৃষ্টি ও বাতাসে মেলাপ্রাঙ্গণ হয়ে পড়ে এলোমেলো। সাময়িক এই বৃষ্টিতে সেদিনের মতো মেলায় আর বিক্রি হয়নি বলে জানান প্রকাশকরা।
এ ছাড়া এবারের পরিবর্তিত পরিস্থিতির বেশ কিছু নতুন বিষয় মেলায় দর্শনার্থী ও পাঠককে আকর্ষণ করেছে। এর মধ্যে ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্টল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকা এই স্টলে গণঅভ্যুত্থানকেন্দ্রিক যত বই প্রকাশিত হয়েছে, তা পরিবেশিত ও বিক্রি করা হয়েছে। বিশাল খাতায় জুলাই স্মৃতিচারণ করার স্থানসহ জুলাইকেন্দ্রিক বিভিন্ন স্মারক চিহ্ন বিক্রি করা হয়েছে। এর বিপরীতে ছিল ইনকিলাব মঞ্চ। এই স্টলে গণঅভ্যুত্থানের স্লোগান ও ছবিসংবলিত বিভিন্ন অলংকার, শাড়ি, পেইন্টিং বিক্রি করা হয়েছে। তরুণ-তরুণীর ভিড় এই স্টলে ছিল বেশি। এর পাশে দেবাশীষ চক্রবর্তীর জুলাই অভ্যুত্থানের সময়কার পোস্টারের ভিআর বিনামূল্যে প্রর্দশন, পোস্টার ও ভিউকার্ড প্যাকেজ বিক্রি করা হয়েছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের স্টলে থাকা আন্দোলনের সময়কার তথ্যচিত্র, ছবি ঘুরে ঘুরে দেখেন দর্শনার্থী। এ বছর ইসলামিক বইয়ের স্টলগুলো ছিল চোখে পড়ার মতো।
এবারের মেলাজুড়ে প্রতিটি প্রবেশ ও বাহির গেটে হকারদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ ছিল পাঠক, দর্শনার্থী। মেলার শুরুর দিকে এর পরিমাণ কম থাকলেও পরে এদের দৌরাত্ম্য লাগামছাড়া হয়। টিএসসি প্রান্তে মেলার গেট দেখতে ছোটখাটো একটা বাণিজ্য মেলা বলে মনে হয়েছে।
এ বছর যেন লেখক খরায় ভুগেছে বইমেলা প্রাঙ্গণ। ইমদাদুল হক মিলন, সেলিনা হোসেন ও আনিসুল হক থেকে শুরু করে স্বনামধন্য লেখকদের দেখা যায়নি। সেজন্য পাঠকরা কিছুটা হতাশাবোধ করলেও আহমাদ মোস্তফা কামাল ও সাদাত হোসাইনকে দেখা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে। প্রতি বছরের বাঁধা পাঠকরাও আসেননি। মূলত মব, সহিংসতা, আন্দোলন ও নিরাপত্তা শঙ্কায় মেলায় আসেননি অনেকে।
বই হাতে নিচ্ছেন, বইয়ের সঙ্গে বিভিন্ন ভঙ্গিতে ছবি তুলছেন। স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে ভিডিও করছেন। এর পর বই রেখে চলে যাচ্ছেন। এই ছবি তোলার হিড়িক এ বছর ছিল প্রকট।
নতুন বই
গতকাল মেলায় আসে ১৭৬টি নতুন বই। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো– আবদুল মজিদের সায়াহ্নের কবিতা (প্রিয় বাংলা), ওমর কায়সারের ক্ষুধা ও কপিলা (খড়িমাটি), হৃদয় মোহাম্মদ আলীর কোথাও আলো নেই (সাহিত্যদেশ) ও আলী ইমামের ডায়নোসরের দেশে (ডাংগুলী)।
মঞ্চের আয়োজন
বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘একটি অভ্যুত্থানের জন্ম ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। কাজী মারুফের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেজাউল করিম রনি। আলোচনায় অংশ নেন সৈয়দ নিজার।
রেজাউল করিম রনি বলেন, ইতিহাসে অনেক আন্দোলনকে গৌরবের সঙ্গে স্মরণ করা হয়। তেমনি জুলাই গণঅভ্যুত্থান গোটা জাতির জন্য নতুন অভিজ্ঞতার জন্ম দিয়েছে।
সৈয়দ নিজার বলেন, স্বতঃস্ফূর্ততা ও কাঠামোগত দিক থেকে মিল থাকলেও অভ্যুত্থানের প্রথাগত ধারণার সঙ্গে চব্বিশের অভ্যুত্থানের ভিন্নতাও রয়েছে।
লেখক বলছি মঞ্চে আলোচনা করেন সায়ীদ আবুবকর, মিতা আলী এবং শিশুসাহিত্যিক জামসেদ ওয়াজেদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন মনজুর রহমান, রফিক হাসান ও জান্নাতুল ফেরদৌসী প্রমুখ।
সংগীত পরিবেশন করেন ছন্দা চক্রবর্তী, ইমরান খন্দকার, নাসরিন বেগম, আফসানা রুনা প্রমুখ।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বইম ল গণঅভ য ত থ ন প র ঙ গণ এক ড ম স টলট বইম ল
এছাড়াও পড়ুন:
‘জুলাই ক্যালাইডোস্কোপ’ যেভাবে
আমাদের জাতীয় জীবনে বায়ান্নর ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে এবং মার্চ মুক্তিযুদ্ধের সূচনা পর্ব হিসেবে যেমন উদযাপিত হয়, একইভাবে ২০২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক মাইলস্টোন হয়ে গিয়েছে। এই ঐতিহাসিক সময়কালের ঘটনা শিল্প-সাহিত্যের বিষয় হবে, এটা অবধারিত। কেননা, কলাকৈবল্যবাদী আদর্শও সমকালের বিশাল পরিবর্তনকে স্বীকৃতি দেয় দেরিতে হলেও। দৃশ্যশিল্প এবং সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থান এক শক্তিময় প্রেরণার উৎস হয়ে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।
কবিতায়, গানে এবং দৃশ্যশিল্পে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান বিষয় হিসেবে এসেছে সম-সময়ে অর্থাৎ পরিণতিতে পৌঁছানোর আগেই। তবে গান এবং গ্রাফিতি শিল্প যেমন সেই পর্বে প্রাধান্য পেয়েছে, কবিতা বা নাটক তেমন নয়। লেখার বিষয় চোখে বা অনুভবে দেখা দিলেও আন্দোলন চলাকালে গল্প-উপন্যাস লেখা হয় না, সেসবের ‘প্রয়োজন’ অনুভূত না হওয়ার কারণে। এই ‘প্রয়োজন’ নির্ধারণ করে মানুষের (পাঠকের) চাহিদা, যা ঘটনার সমকালে প্রচ্ছন্নই থাকে। গল্প, উপন্যাসের লেখকও মনে করেন যে বিশাল ঘটনা নিয়ে তারা লিখবেন, তার সঙ্গে সময়ের একটা দূরত্ব থাকা প্রয়োজন, যেন যুক্তি দিয়ে কাহিনি এবং ন্যারেটিভ নির্ধারণ করা যায়। বলা বাহুল্য, গান এবং কবিতার ক্ষেত্রে এটা প্রযোজ্য নয়, যেহেতু তাৎক্ষণিক আবেগ-অনুভবই তাদের সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট।
সাধারণ নিয়মের ব্যতিক্রম করে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান নিয়ে এখনই, সময়ের পরিমাপে দূরত্ব না রেখে, উপন্যাস লিখেছি এই জন্য যে আমি প্রতিদিনের ঘটনার উল্লেখ করে ইতিহাসের মোড় ফেরানো এই ‘কাহিনি’ বলতে চেয়েছি। কিন্তু ৫ আগস্টের আগে আমি এই উপন্যাস লেখার কথা ভাবিনি, যে জন্য প্রথম থেকেই তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কথা মনে হয়নি। স্বৈরাচারের পতনের পর যখন সিদ্ধান্ত নিলাম যে প্রতিদিনের ঘটনা উল্লেখ করে উপন্যাস লিখব, তারপর আমাকে ১ জুলাই থেকে প্রতিদিনের ঘটনাবলি সংগ্রহ করতে হয়েছে।
এর জন্য লাইব্রেরিতে গিয়ে সংবাদপত্রের পুরোনো সংখ্যা পড়ে দিনওয়ারি ঘটনা সাজাতে হয়েছে। প্রায় তিন সপ্তাহ সময় নিয়েছে এই কাজ।
তথ্য সংগ্রহের পর আমার পরিকল্পনা ছিল দুই থেকে তিন মাস সময় নিয়ে উপন্যাসটি লেখার। কিন্তু প্রকাশক এই বইমেলাতেই উপন্যাসটি প্রকাশ করার জন্য চাপ দিলে আমাকে তা মেনে নিতে হয়। ফলে উপন্যাসটি শেষ করার জন্য আমাকে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হয়েছে। পৃষ্ঠার দিক দিয়ে এটাই আমার সবচেয়ে বড় উপন্যাস (৩২০ পৃ), যা আমি পরিকল্পিত তিন মাসের জায়গায় দেড় মাসে করেছি।
এই উপন্যাসে দুটি অংশ আছে। প্রথম অংশে রয়েছে বাস্তব ঘটনার বর্ণনা, যার জন্য আমি ব্যবহার করেছি সংবাদপত্র থেকে সংগৃহীত তথ্য। দ্বিতীয় অংশ দেখা যায় কল্পিত চরিত্রের আচরণে এবং কথাবার্তায়। কল্পিত চরিত্রের আচরণ এবং কথা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বাস্তবের ঘটনাকেন্দ্রিক। সুতরাং বাস্তব ঘটনাই এই উপন্যাসে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে। বাস্তব ঘটনার মানবিক মাত্রা সংযোজনের জন্যই কল্পিত চরিত্রের অবতারণা। কল্পিত চরিত্র কেবল বাস্তব ঘটনার সঙ্গে ওতপ্রোত হয়ে জড়িয়ে নেই, তারা মাঝে মাঝে সেইসব ঘটনার ওপর মন্তব্যও করে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে মিছিলে, অবরোধ সমাবেশের প্রাণবন্ততা রক্ষায় এবং শক্তির প্রকাশে স্লোগান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে স্লোগান পরিবর্তিত হয়েছে। আন্দোলন যতই ক্রমে তীব্রতা লাভ করেছে তার সঙ্গে সংগতি রেখে স্লোগান এগ্রেসিভ হয়েছে। উপন্যাসে ব্যবহৃত স্লোগানের এই বিবর্তন দেখাতে স্লোগানগুলোর উল্লেখ করা হয়েছে। একইভাবে আন্দোলনে যেসব গান গাওয়া হয়েছে, নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহকপাট’ থেকে র্যাপার হান্নানের ‘আওয়াজ উডা বাংলাদেশ’, সেগুলো যথাস্থানে এসেছে। দৃশ্যশিল্প, বিশেষ করে গ্রাফিতি, সম্বন্ধে লেখা হয়েছে এই শিল্পের ইতিহাস বর্ণনা করে।
এখন সবারই জানা যে জুলাই অভ্যুত্থানের দুটো দিক রয়েছে। প্রথম দিকটি দৃশ্যমান এবং স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে প্রথম থেকে। দ্বিতীয় দিক ছিল অনুল্লিখিত এবং এখনও অফিসিয়ালি তাই। কিন্তু ওয়াকিবহাল যারা; তাদের সবাই জেনে গিয়েছেন এই দ্বিতীয় দিকের তাৎপর্য কী? উপন্যাসে প্রথম দিক যেমন সহজেই আনা যায়, দ্বিতীয় দিক সম্পর্কে একই কথা বলা যায় না। বিশ্বাসের ওপর নির্ভর করে কেউ হয়তো প্রথম দিক নিয়ে লিখেই সন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু যারা এই শ্রেণিতে পড়েন না, তাদের জন্য দ্বিস্তরের এই পরিচিতি বর্ণনা এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। আমি এই উপন্যাস লিখতে গিয়ে কীভাবে এই সমস্যার সমাধান করেছি, সেই সিক্রেট এখন না-ই বললাম। যারা জানতে আগ্রহী, তাদের বলব উপন্যাসটি পড়তে। এই উপন্যাস লিখতে যে পরিশ্রম করেছি, তার সঙ্গে তুলনীয় দৃষ্টান্ত কিছু নেই। লেখার পর যে তৃপ্তি লাভ করেছি সেটিও অনন্য, অসাধারণ।
উপন্যাস : ‘জুলাই ক্যালাইডোস্কোপ’, প্রকাশক : আগামী প্রকাশনী, বইমেলা : ২০২৫।