গণঅভ্যুত্থানের সকল তরুণ রাজনীতিতে আসুন
Published: 27th, February 2025 GMT
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সাত মাস পার হলো। অভ্যুত্থানের শক্তিগুলোর কাজকর্মের প্রাথমিক অধ্যায় নিয়ে এখন কথা বলা যায়। সাত মাসে অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো প্রশাসনিকভাবে দেশবাসীকে কী উপহার দিল, তার নির্মোহ বিচার-বিশ্লেষণ জরুরি এখন। রাজনৈতিকভাবে কী অর্জন হলো, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ এক ভাবনার ব্যাপার।
চব্বিশের জুলাইয়ের শেষ দিকে মানুষ রাষ্ট্রীয় সংস্কার, অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গঠন, অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও সুশাসন প্রশ্নে সব মতাদর্শের ঊর্ধ্বে এক কাতারে দাঁড়িয়েছিল। সাংগঠনিকভাবে সেই অবস্থা এখন আর নেই। অভ্যুত্থানের চেতনা প্রবলভাবে সমাজে হাজির আছে বটে, কিন্তু তার ধারক ও অভিভাবকরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছেন। অনেকে ছিটকেও পড়ছেন।
অভ্যুত্থানকে তার চূড়ান্ত রাজনৈতিক স্লোগান তথা রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে এর অভ্যন্তরীণ শক্তিগুলোর ঐক্যবদ্ধ থাকাই উত্তম ছিল। সেটা ছিল ছাত্রনেতাদের সাংগঠনিক চ্যালেঞ্জ। সেই কাজ হয়নি। এই বাস্তবতাকে নির্মোহভাবে না মেনে উপায় নেই। তারপরও সামনের দিকে এগোতে হবে সবাইকে।
অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো যে পুরোনো দলীয়-উপদলীয় চেহারায় বিভক্ত হয়ে পড়ছে, সেটা এ দেশের অতীত রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিবেচনায় অস্বাভাবিক ছিল না। এ রকম অতীত থেকে বের হওয়া প্রকৃতই কঠিন। তবে বিশেষ বিশেষ মহল নানাভাবে ইন্ধন দিয়ে সম্ভাব্য বিভক্তিকে দ্রুত ও তিক্ত করছে। তরুণরা পরিকল্পিত ওইসব ইন্ধন এড়াতে পারেনি। সেটা দুঃখজনক হলেও বাস্তবতা হিসেবে মেনে নিতে হবে। চব্বিশে গৌরবময় এক রাজনৈতিক কর্তব্য পালন করলেও তরুণ সমাজের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার যে স্বাভাবিক ঘাটতি ছিল, কিছু অপশক্তি সেই সুযোগ নিয়ে তাদের বিভ্রান্ত করতে চেয়েছে। তাদের দিয়ে নানান সামাজিক দ্বিধাবিভক্তিতে জ্বালানি জুগিয়েছে। অভ্যুত্থানের সাংগঠনিক ভরকেন্দ্রে নানামুখী ফাটলের একটা কারণ নিশ্চয় এসব।
এ রকম বিভক্তি পর্বের এক পর্যায়ে ঢাকায় একটা নতুন রাজনৈতিক দলের জন্ম দেখছি আমরা। তরুণদের ভেতর থেকে রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা ইতিবাচক। দেশ নিয়ে ভাবলে রাজনৈতিকভাবেই এগোতে হবে। বর্তমান ধাঁচের ‘সচিবালয়’নির্ভর প্রশাসন যে আপাতত কিছু দেবে না– সেই উপলব্ধি নিশ্চয় ছাত্রনেতাদের হয়েছে এবং সেই অভিজ্ঞতাই হয়তো তাদের রমনা থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে নিয়ে এসেছে।
নতুন দলের রাজনৈতিক ইশতেহার পুরোটা আমরা জানি না এখনও। কিন্তু সেটা দেশে প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করবে বলে আশা করা যায়। সামনের দিনগুলোতে নতুন দলের নেতারা নিশ্চয় অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মাসের শাসন সম্পর্কেও কিছু অভিমত হাজির করবেন। এই সরকার যে কৃষক ও শ্রমিকদের প্রয়োজনে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কারধর্মী পদক্ষেপ নিতে পারল না, সেটা এক মহাবিস্ময় তৈরি করেছে। পাশাপাশি কেন ভাঙচুরে এত বিধ্বস্ত হলো দেশের বিভিন্ন জায়গা; কেন সমাজে এত বেশি নিরাপত্তাহীনতা এবং ভয়-ভীতি বাড়ল; তার দায়দায়িত্ব কাদের এবং এই অবস্থা থেকে কীভাবে এখন বের হওয়া সম্ভব– সেসব বিষয়ে এই দল নিশ্চয় কিছু বলবে। এই সরকার এখনকার দক্ষতা ও সামর্থ্যে আদৌ সুষ্ঠু, অবাধ ও বিতর্কমুক্ত একটি জাতীয় নির্বাচন করতে সমর্থ কিনা; নাকি সেই কাজের জন্য নতুনদের নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাগবে– সে বিষয়েও মানুষ নতুন দলের অভিমত শুনতে চাইবে।
ইতোমধ্যে নতুন দলের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে একটি ছাত্র সংগঠনেরও জন্ম হয়ে গেছে। সে উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একই ঘরানার কর্মীদের ভেতর এক দফা মারামারিও হলো। মারামারি নিন্দনীয় হলেও এই বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই– অভ্যুত্থানের মাঠে এখনও অনেক শক্তি অসংগঠিত অবস্থায় আছে, যারা সংগঠিত হতে চায়।
নতুন দল ও তার ছাত্র সংগঠনের জন্ম অভ্যুত্থানের একটা অংশ থেকে হয়েছে। জুলাই-আগস্টের তরুণ শক্তিকেন্দ্রে অনেক উপশক্তি এখনও রাজনৈতিকভাবে পরবর্তী আকার নেওয়ার অপেক্ষায় আছে। সম্ভাব্য সেসব সংগঠনকেও আগাম অভিনন্দন জানিয়ে রাখা যায়। এ রকম উদ্যোগ রাজনৈতিক অঙ্গনকে আরও প্রতিযোগিতামূলক ও প্রাণবন্ত করবে। এভাবে আমরা ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢুকছি কেবল। অভ্যুত্থানের এই দ্বিতীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও রাষ্ট্র সংস্কারের পুরোনো চ্যালেঞ্জগুলো কিন্তু থাকছে। যদিও দেশ রাজনৈতিকভাবে নির্বাচনমুখী হচ্ছে এবং সেটা প্রয়োজনও। কিন্তু চব্বিশের অভ্যুত্থানের প্রত্যাশার জায়গাগুলো ঊর্ধ্বে ধরে রাখার এখনও বিকল্প নেই।
বাংলাদেশ চরমভাবে শ্রেণিবিভক্ত একটি সমাজ। ধনবৈষম্য এবং সম্পদবৈষম্য তীব্র। এখানে নিচের তলার ১০ শতাংশ মানুষের কাছে জাতীয় আয়ের ২ শতাংশেরও কম যায়। ওপরতলার ১০ শতাংশের কাছে জাতীয় আয়ের ৪০ শতাংশের বেশি যাচ্ছে। বিগত সরকারের আমলে সমাজের এই প্রকৃত বৈপরীত্য বেশ দক্ষতার সঙ্গে আড়াল করে রাখা হয়েছিল। সেই আড়াল করার রাজনীতি থেকে জন্ম দেওয়া হয় ‘শাপলা বনাম শাহবাগ’ নামে একটি কৃত্রিম ও পপুলিস্ট বাইনারি।
চব্বিশের অভ্যুত্থানের ভরকেন্দ্র থেকে যেসব রাজনৈতিক দল ও শক্তি শিগগির সামনে আসবে, তাদের চলমান কৃত্রিম মেরূকরণের বাইরে এসে সমাজের প্রকৃত মেরূকরণের সমাধান খোঁজার দিকে মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
অতীতে সমাজে ‘শাপলা বনাম শাহবাগ’ শব্দদ্বয় দিয়ে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি বনাম সেক্যুলার রাজনীতির একটা দ্বন্দ্ব তৈরি করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ ও ধর্মভিত্তিক শক্তি উভয়ের বেশ কাজে লাগে এই মেরূকরণ। আওয়ামী লীগ বেশ দক্ষতার সঙ্গে এটি ব্যবহার করে ১৫ বছর কাটিয়ে দেয় সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়াই। এর মাঝে ব্যাপক লুটপাটের ভেতর দিয়ে সমাজে ধনী-গরিবের ব্যবধান বিপজ্জনক এক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সে কারণেই চব্বিশের অভ্যুত্থানের মূল স্লোগানই ছিল বৈষম্যের কাঠামো ভাঙা। কিন্তু গত সাত মাসে সে বিষয়ে আমরা তেমন এগোতে পারলাম না। উল্টো চ্যালেঞ্জে পড়ল বহুত্ববাদী সামাজিক যাবতীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি।
দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অতীত শক্তির জায়গাটা ছিল তার উপনিবেশবিরোধী লড়াইয়ের ঐতিহ্য এবং বহুত্ববাদী সংস্কৃতি। চব্বিশের অভ্যুত্থানের শক্তিগুলো এই দুই ঐতিহ্যকে ধারণ করে অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ এবং রাষ্ট্র সংস্কারকে মৌলিক লক্ষ্য হিসেবে হাজির করেছিল। আজকে গণঅভ্যুত্থানের দ্বিতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হলো গত জুলাই-আগস্টের আদি লক্ষ্যগুলো সামনে নিয়ে আসা এবং সেই আলোকে সংগঠিত হওয়া। কেবল এ রকম লক্ষ্যে অভ্যুত্থানের ভরকেন্দ্র থেকে আরও আরও রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তির সাংগঠনিক জন্ম হোক। সবার লক্ষ্য হোক আর্থসামাজিক বৈষম্যের অবসান; আত্মঘাতী কৃত্রিম মেরূকরণ উস্কে দেওয়া নয়।
আলতাফ পারভেজ: গবেষক ও লেখক
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র র জন ত ম র করণ পর য য় এ রকম স গঠন সরক র গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে ফিরে গেলেও শিখন শূন্যতা পূরণে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি সরকার
প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরে ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে ফিরে গেলেও হঠাৎ করে শিক্ষাক্রম পরিবর্তন হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীদের অনেকেই এর সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারেনি। এরজন্য শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি। ফলে শিক্ষার্থীদের এক নতুন মাত্রার ‘লার্নিং লস’ বা শিখন শূন্যতা তৈরি হয়েছে। এই শিখন শূন্যতা পূরণেও সুনিদৃষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। নতুন বছরের প্রায় দুই মাস চলে গেলেও শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশের হাতে এখনও বই পৌঁছায়নি। এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, শিক্ষা আদৌ সরকারের অগ্রাধিকারে আছে কিনা?
মঙ্গলবার শিক্ষা অধিকার সংসদ আয়োজিত ‘ফ্রম লার্নিং লস টু লার্নিং অ্যাসেসমেন্ট’ শিরোনামের ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। ওয়েবিনারে বক্তব্য দেন শিক্ষা অধিকার সংসদের আহ্বায়ক ও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রফেসরিয়াল ফেলো অধ্যাপক ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ, বাংলার ম্যাথের সহ প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ শাহরিয়ার, বেলজিয়ামর ক্যাথোলিক ইউনিভার্সিটি লিউভেনের অধ্যাপক স্যান্ডি টুবেউফ, ফ্রান্সের ইএইচইএসএস-এর রিসার্চ ডিরেক্টর অ্যালাইন ট্রনয়, ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন ও রাজধানীর মনেস্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিনুর রশিদ বলেন, সরকার পরীক্ষার নির্দেশনা দিয়েছে বটে কিন্তু শ্রেণিকক্ষে কী হচ্ছে, তা কি মনিটর করছে? মনে হচ্ছে, কেবল পরীক্ষা নেওয়াই তাদের মূল কাজ। পুরনো শিক্ষাক্রমে ফিরে যাওয়ার কারণে সময়ের অভাবে একদিনেই হয়তো এক অধ্যায় শেষ করতে হচ্ছে। এতে তাদের শিখন ঠিক হচ্ছে না। নতুন করে আবার রমজান ও এসএসসির কারণে বড় ছুটিতে যাচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো, এতেও শিখনশূন্যতা বাড়বে। ২০২৬ সালের জন্য সরকার নতুন শিক্ষাক্রমের কথা বললেও এখনও সে কাজ শুরু করছে না কেন? সরকার অনেক কমিশন করেছে, কিন্তু শিক্ষা কমিশন করেনি। তারমানে কি সরকার শিক্ষার বিষয়ে সিরিয়াস নয়?
শিক্ষা অধিকার সংসদের আহ্বায়ক ও নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির প্রফেসরিয়াল ফেলো অধ্যাপক ড. এম নিয়াজ আসাদুল্লাহ বলেন, ২০২৪ জুলাই বিপ্লব বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে মৌলিক এবং দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারর নতুন সুযোগ তৈরি করেছিল। কিন্তু বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশের শিক্ষা খাত আজ বহুমুখী অস্থিরতায় আক্রন্ত। স্পষ্ট নির্দেশনা এবং প্রস্তুতি ছাড়া ২০১২ সালের পাঠ্যক্রমে ফিরে যাওয়াও নতুন শিক্ষা বর্ষে শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকরা- সকলেই নতুন অনিশ্চয়তা ও উৎকণ্ঠার মধ্যে পড়েছে। বিগত শিক্ষা বর্ষে অপরিকল্পিত (অনাকাঙ্ক্ষিত) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, পাঠ্যপুস্তক বণ্টনে বিলম্ব ও বিষয়বস্তু পরিবর্তন এবং শিখন শূন্যতা প্রতিকারমূলক ব্যবস্থার অভাব বিদ্যমান শিখন সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে এই নতুন শিখন সংকট উত্তরণে কার্যকর শিক্ষক ও শিক্ষা বাবস্হাপনার জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা এবং দৃঢ় নেতৃত্ব প্রত্যাশিত।
বাংলাদেশে শিক্ষা গবেষণায় যুক্ত ক্যাথোলিক ইউনিভার্সিটি লিউভেনের অধ্যাপক স্যান্ডি টুবেউফ তার বক্তব্যে বিগত বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা করণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধর ক্ষতিকারক বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। নতুন মাত্রার শিখন শূন্যতা এবং ড্রপআউটের মাত্রা খতিয়ে দেখার বিষয়েও তিনি জোর দেন। তার পাশাপাশি আন্দোলন পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে শিক্ষকদের ওপর যে চাপ তৈরি হচ্ছে তাও যাচাই করতে শিক্ষা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করেন।
ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন বলেন, ২০২৩ সালে বিগত সরকার যে শিক্ষাক্রম রচনা করেছে, তা আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে অনেক দিক থেকেই যথার্থ হয়নি। যার ফলে চব্বিশের বিপ্লবের পর আমরা ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমে ফিরে গেছি। কিন্তু শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা যথাযথ দিক নির্দেশনা পাইনি। শিক্ষার্থীরা যারা নতুন শিক্ষাক্রমে ছিলো, পুরনো শিক্ষাক্রমে যাওয়ার কারণে নতুন করে সৃজনশীল লেখাসহ অনেক বিষয়েও তারা হোঁচট খাচ্ছে।
বাংলার ম্যাথ-এর সহপ্রতিষ্ঠাতা আহমেদ শাহরিয়ার বলেন, কোভিডের সময়েও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে শিখন শূন্যতা তৈরি হয়েছিল, তার মূল্যায়ন কিংবা সেই শিখন শূন্যতা পূরণে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জুলাই বিপ্লবের কারণে পাঠ্যপুস্তকের পরিবর্তন জরুরি ছিলো, কিন্তু এরপরও পাঠ্যপুস্তক পেতে যে দেরি হয়েছে, সেটি অগ্রহণযোগ্য।
রাজধানীর মনেস্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপ্না পারভীন বলেন, পুরনো শিক্ষাক্রমে ফিরে গেলেও শিক্ষকরা যেহেতু আগে এই শিক্ষাক্রমে অভ্যস্ত ছিলো, সেজন্য সমস্যা হয়নি। শিক্ষা প্রশাসন থেকেও সিলেবাস নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
ওয়েবিনার সঞ্চালনা করবেন শিক্ষা অধিকার সংসদের অফিস কোঅর্ডিনেটর মো. মিনহাজুল আরেফিন। শিক্ষা অধিকার সংসদ এর সঙ্গে ওয়েবিনারের সহ-আয়োজক ছিল বাংলার ম্যাথ।