Samakal:
2025-04-21@07:50:12 GMT

সাত মাসেও অধরা জড়িতরা

Published: 27th, February 2025 GMT

সাত মাসেও অধরা জড়িতরা

জুলাই আন্দোলনের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় জড়িতরা এখনও অধরা। খোদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আবাসিক হল থেকে অস্ত্র উদ্ধারের পরও মামলা করেনি। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় গত বছরের ১৬ জুলাই বেরোবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। তাঁকে হত্যার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আন্দোলন ভিন্ন মাত্রা পায়। সারাদেশের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসেন। এরই ধারাবাহিকতায় ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন হয় শেখ হাসিনার।

গত ২৮ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৮তম সিন্ডিকেট সভায় আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত অভিযোগে দুই শিক্ষক ও সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত হয়। সভার পর চার মাস কেটে গেলেও তাদের বিচারের আওতায় আনতে প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি। এরই মধ্যে গত ২০ জানুয়ারি ১০৯তম সিন্ডিকেট সভায় আবু সাঈদ হত্যায় জড়িত অভিযোগে ৭১ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সেমিস্টার অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা বোর্ড ২৩ শিক্ষার্থীকে এক সেমিস্টার, ৩৩ জনকে দুই সেমিস্টার ও ১৫ প্রাক্তন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সেমিস্টার থেকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষার্থীরা প্রশ্ন তুলেছেন।
এর বাইরে হত্যাকাণ্ডে জড়িত নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ১৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থার আশ্বাস দিলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। অভিযুক্তরা হলেন ছাত্রলীগের শাখা সভাপতি পমেল বড়ুয়া ও  সাধারণ সম্পাদক শামীম মাহাফুজ, সংগঠনের  কর্মী ধনঞ্জয় কুমার টগর, গ্লোরিয়াস (ফজলে রাব্বি), বাবুল, বিধান, তানভীর, আদুল্লাহ আল নোমান খান, রিফাত, ফারহাদ হোসেন এলিট, মোমিনুল, আরিফুজ্জামান ইমন, গাজীউর, শাহিদ হাসান ও মামুন।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আবু সাঈদ হত্যার দিনে বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়। কিন্তু তদন্ত কমিটি এখন পর্যন্ত তাদের জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনেনি। সাবেক উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী নিরাপত্তা দপ্তরের কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ, পরিবহন পুলের উপপরিচালক তাপস কুমার গোস্বামী, নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার শাহিন মিয়া ওরফে শাহিন সর্দার, পেনশন শাখার উপপরিচালক রিয়াজুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর নুরুজ্জামান, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের কর্মচারী বিপ্লব, বহিষ্কৃত সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ, ডেসপাস শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার মোক্তারুল ইসলাম, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাসুম খান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের কর্মচারী ও তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মাহবুবার রহমান, নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার কর্মচারী ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি নুর আলম মিয়া, নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার উপরেজিস্ট্রার হাফিজ আল আসাদ রুবেল, মার্কেটিং বিভাগের কম্পিউটার অপারেটর আহসান হাবীব তুষার, ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সেশন অফিসার এ কে এম রাহিমুল ইসলাম দিপু, প্রক্টর অফিসের কর্মচারী মো.

আপেল ও সংস্থাপন শাখা-১ এর কর্মচারী সবুজ মিয়াকে ঘটনাস্থলে দেখা যায়।
আবু সাঈদের সহযোদ্ধা শামসুর রহমান সুমন ও এস এম আশিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা চাচ্ছিলাম যারা আহত, তারা সাক্ষ্য দেবেন। কিন্তু তাদের বেশির ভাগ সাক্ষ্য দিতে অনাগ্রহী। এখন আমরা নিজেরাই সাক্ষ্য দেব। সাক্ষীদের তালিকা করছি। শিগগির এ তালিকা প্রশাসনের কাছে জমা দেব।’
জানতে চাইলে প্রক্টর ফেরদৌস রহমান বলেন, দুই শিক্ষক ও সাত কর্মকর্তা-কর্মচারীকে শোকজ করা হয়েছে। আমরা তিনবার নোটিশ দেব। উত্তর না পেলে তাদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক শওকাত আলী বলেন, ‘আবু সাঈদ ও তাঁর সহপাঠীদের ওপর হামলাকারীদের বিচারের আওতায় আনা হবে। শিগগির মামলা হবে। অপরাধীদের বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।’

হত্যা মামলায় রিমান্ডে ছাত্রলীগ নেতা
রংপুর অফিস জানায়, আবু সাঈদ হত্যা মামলায় বেরোবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইমরান চৌধুরী আকাশের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার রংপুর মেট্রোপলিটন আমলি আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান এ আদেশ দেন।
১ ফেব্রুয়ারি আকাশকে জামালপুরের ইসলামপুরের গঙ্গাপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গণঅভ্যুত্থানের পর পালিয়ে নিজ এলাকায় আশ্রয় নেন তিনি।
আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় তাঁর বড় ভাই রমজান আলী হত্যা মামলা করেন। মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে। তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই রংপুরের এসপি এ বি এম জাকির হোসেন জানান, এ মামলায় পুলিশসহ এ পর্যন্ত চারজন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব যবস থ র কর ম ত কর ম রহম ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

দিল্লিতে ভ্যান্স এবং মোদির বৈঠক আজ

যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও তার পরিবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আজ তার বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে। 

বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। খবর বিবিসির। 

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রন্ধির জৈসওয়াল বলেন, এই সফর আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করবে বলে আমরা আশাবাদী।

বিশ্বব্যাপী ওয়াশিংটনের শুল্কনীতি ঘিরে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে এই সফর বিশেষ তাৎপর্য বহন করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষিত ৯০ দিনের শুল্ক বিরতির সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে দেশগুলো দ্রুত চুক্তি চূড়ান্তে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

ভ্যান্সের সফরের অংশ হিসেবে তিনি তার স্ত্রী উষা ভ্যান্স এবং সন্তানদের সঙ্গে আগ্রা ও জয়পুর ভ্রমণে যাবেন। তার স্ত্রী উষার পরিবার ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিল।

সোমবার সকালে দিল্লিতে পৌঁছে ভ্যান্স আকসারধাম মন্দির পরিদর্শন করেন। সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তাকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করেন।

যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বর্তমানে প্রায় ১৯০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যদিও ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, ভারতের উচ্চ শুল্ক হার এবং ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ।

সম্প্রতি ভারত কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাস করেছে এবং ভবিষ্যতে আরও হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে।

ভবিষ্যতে ট্রাম্পের সম্ভাব্য ভারত সফর এবং কোয়াড শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের প্রেক্ষাপটে ভ্যান্সের সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ