১৯৬২ সালের ৩০ অক্টোবর, সিলভিয়া প্লাথ ব্রিটিশ কাউন্সিলের পিটার ওরের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে অংশগ্রহণ করেন। অর্থাৎ এই সাক্ষাৎকারটি নেওয়া হয়েছিল কবির মৃত্যুর মাত্র তিন মাস আগে। এটি ১৯৬৬ সালে প্রকাশিত দ্য পোয়েট স্পিকস: ইন্টারভিউস উইথ কনটেম্পোরারি পোয়েটস গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়; যা হিলারি মরিশ, পিটার ওর, জন প্রেস ও ইয়ান স্কট-কিলভার্ট কর্তৃক গৃহীত সমসাময়িক কবিদের সাক্ষাৎকারের সংকলন। 

ওর: সিলভিয়া, কীভাবে কবিতা লেখা শুরু করলেন?
প্লাথ: আমি ঠিক জানি না কীভাবে শুরু করলাম। ছোটবেলা থেকেই লিখতাম। সম্ভবত শিশুতোষ ছড়াগুলো ভালোবাসতাম। মনে হয়েছিল আমিও এমন লিখতে পারি। আমার প্রথম কবিতা, প্রথম প্রকাশিত কবিতা, লিখেছিলাম যখন আমার বয়স ছিল সাড়ে আট। সেটা দ্য বোস্টন ট্রাভেলার-এ প্রকাশিত হয়েছিল, আর তখন থেকেই বলা যায় আমি পেশাদার হয়ে গেছি।
ওর: অনেক বছর পেরিয়ে এসে এখন যদি জিজ্ঞেস করা হয়, এমন কোনো থিম আছে কি– যা একজন কবি হিসেবে আপনাকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করে? এমন কিছু, যা নিয়ে আপনি লিখতে চান?
প্লাথ: হয়তো এটি কিছুটা মার্কিনিসুলভ ব্যাপার– অনুভব করি নতুন একটি প্রাপ্তি নিয়ে আমি দারুণ উচ্ছ্বসিত হয়ে আছি। যা সম্ভবত এসেছে রবার্ট লোয়েলের লাইফ স্টাডিজের সাথে সাথে। এটি একরকম প্রবল অগ্রযাত্রা; যা একই সাথে খুব গুরুতর, দারুণ ব্যক্তিগত এবং আবেগপ্রবণ অভিজ্ঞতার দিকে নিয়ে যায়, যা বোধ করি কিছুটা ট্যাবু হিসেবে গণ্য করা হতো। উদাহরণস্বরূপ, রবার্ট লোয়েলের মানসিক হাসপাতালের অভিজ্ঞতা নিয়ে লেখা কবিতাগুলো আমাকে তীব্রভাবে আগ্রহী করে তুলেছিল। আমার মতে এই অদ্ভুত, ব্যক্তিগত এবং নিষিদ্ধ বিষয়গুলো নিয়ে সাম্প্রতিক আমেরিকান কবিতায় বিশেষভাবে অনুসন্ধান করা হয়েছে। বিশেষ করে কবি অ্যান সেক্সটনের কথা বলব, যিনি একজন মা হিসেবে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন। এমন একজন মা; যিনি স্নায়বিক বিপর্যয়ের শিকার হয়েছেন। 


তিনি একজন অত্যন্ত আবেগপ্রবণ এবং অনুভূতিশীল তরুণী। তাঁর কবিতাগুলো খুবই কারিগরি নৈপুণ্যের সঙ্গে লেখা। তাঁর কবিতাগুলোর মধ্যে একধরনের আবেগিক ও মনস্তাত্ত্বিক গভীরতা রয়েছে, যা আমি মনে করি কিছুটা নতুন এবং খুবই উদ্দীপনাদায়ক।
lআপনি একজন কবি হিসেবে এবং একজন ব্যক্তি হিসেবে আটলান্টিকের দুই পাশে আছেন। যদি আমি এভাবে বলতে চাই, একজন আমেরিকান হিসেবে…
llএটা বেশ একটি অস্বস্তিকর অবস্থান, কিন্তু আমি মেনে নিচ্ছি!
lযদি আমি এই রূপকটি আরেকটু এগিয়ে নিই, তাহলে পাল্লার কোন দিকটিতে আপনার ঝোঁক বেশি হবে?
llআচ্ছা, আমি মনে করি, ভাষার দিক থেকে আমি একজন আমেরিকান। সত্যি বলতে আমার উচ্চারণ আমেরিকান, কথা বলার ভঙ্গি আমেরিকান ধাঁচের, একেবারে সেকেলে আমেরিকান যাকে বলে। এটাই সম্ভবত অনেক কারণের একটি, যার জন্য আমি এখন ইংল্যান্ডে আছি এবং যে কারণে আমি সব সময় ইংল্যান্ডেই থাকব। রুচির দিক থেকে আমি হয়তো পঞ্চাশ বছর পিছিয়ে আছি এবং স্বীকার করতেই হবে যে, যেসব কবি আমাকে সবচেয়ে বেশি উদ্দীপ্ত করেন, তারা আমেরিকান। এমন খুব কম সংখ্যক ইংরেজ কবি আছেন; যাদের আমি ভক্ত।
lএর মানে কি আপনি মনে করেন যে সমসাময়িক ইংরেজি কবিতা আমেরিকান কবিতার তুলনায় সময়ের থেকে পিছিয়ে আছে?
llনা, যদি আমাকে বলতে বলার সুযোগ দেন, আমি মনে করি কবিতা এখানে কিছুটা আঁটোসাঁটো বন্ধনে আবদ্ধ। ব্রিটিশ সমালোচক আলভারেজের একটি প্রবন্ধ ছিল। সেখানে তিনি ইংল্যান্ডে সুশীলতার বিপদ সম্পর্কে যা বলেছেন, তা খুবই প্রাসঙ্গিক এবং যথার্থ। আমি মনে করি, আমি খুব একটা সুশীল নই এবং অনুভব করি যে এই ভদ্রতার আতিশয্য যেন একরকম শ্বাসরোধ করছে: ইংল্যান্ডের সর্বত্র যে পরিচ্ছন্নতা ও নিখুঁত পরিপাটি ভাব দেখা যায়, তা হয়তো ওপরে ওপরে যতটা নিরীহ মনে হয়, আসলে তার চেয়েও বেশি মারাত্মক হয়ে ওঠে।
lসিলভিয়া, আপনি বলেছেন যে আপনি নিজেকে একজন আমেরিকান মনে করেন, কিন্তু যখন আমরা ‘ড্যাডি’ কবিতাটি শুনি, যেখানে ডাখাউ, অশভিৎস এবং মাইন কাম্পফ সম্পর্কে বলা হয়েছে, তখন আমার মনে হয় এটি এমন একটি কবিতা; যা প্রকৃত একজন আমেরিকান লিখতে পারার কথা নয়। কারণ, আটলান্টিকের ওপারে এই নামগুলো এতটা গভীর তাৎপর্য বহন করে না, তাই না?
llঠিক আছে, আপনি এখন আমার সাথে কথা বলছেন সাধারণ একজন আমেরিকান হিসেবে। কিন্তু নির্দিষ্ট করে বলতে গেলে আমার পারিবারিক পটভূমির কথা যদি বলি, তবে তা হলো জার্মান ও অস্ট্রিয়ান। একদিক থেকে আমি প্রথম প্রজন্মের আমেরিকান, আরেক দিক থেকে দ্বিতীয় প্রজন্মের। ফলে কনসেনট্রেশন ক্যাম্প এবং এসব বিষয় নিয়ে আমার অনুভূতি বিশেষভাবে তীব্র। আরেকটি কথা হলো, আমি কিছুটা রাজনীতিসচেতন মানুষও বটে। তাই আমার মনে হয়, কবিতাটি এসেছে আমার নিজের এই অংশ থেকে।
lএকজন কবি হিসেবে আপনার কি ইতিহাস বিষয়ে গভীর ও তীব্র চেতনা রয়েছে?
llআমি ইতিহাসবিদ নই, কিন্তু খেয়াল করছি যে আমি ক্রমশ ইতিহাসের প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছি। এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ইতিহাস পড়ছি। যেমন– বর্তমানে নেপোলিয়নের প্রতি আমি খুবই আগ্রহী– যুদ্ধ, লড়াই, গ্যালিপোলি, প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে খুবই আগ্রহী। আমি মনে করি, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি আরও বেশি ঐতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গি অর্জন করছি। অবশ্যই, বিশের কোঠার শুরুর দিকের বয়সে আমি মোটেই এ রকম ছিলাম না।
lআপনি যাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন বা আপনার জন্য যারা গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন– এমন লেখকদের সম্পর্কে কিছু বলবেন?
llতেমন আসলে খুব কম সংখ্যকই ছিল। সত্যি বলতে তাদের খুঁজে নাম বলতে বেগ পেতে হবে। যখন আমি কলেজে ছিলাম, তখন আধুনিক লেখকেরা আমাকে বিস্মিত ও অভিভূত করেছেন– ডিলান টমাস, ইয়েটস, এমনকি অডেনও। একসময় তো আমি অডেনের জন্য পাগল ছিলাম এবং যা কিছু লিখতাম সবই অনিবার্যভাবে অডেনীয় (অডেনেস্ক) হয়ে উঠত। এখন আবার আমি যখন পেছনে ফিরে যাচ্ছি, ব্লেকের দিকে নজর চলে যাচ্ছে। আর অবশ্যই, শেক্সপিয়রের মতো কারও দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার কথা বলাটা ধৃষ্টতাই হবে। শেক্সপিয়রকে পড়া হয়, ব্যস, এই তো।
lসিলভিয়া, আপনার কবিতা পড়তে এবং শুনতে গিয়ে একটি বিষয় স্পষ্টভাবে এবং দ্রুত বোঝা যায়– দুটি বৈশিষ্ট্য খুব স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। একটি হলো সেগুলোর স্বচ্ছতা বা প্রাঞ্জলতা এবং আরেকটি হলো পাঠের সময় একটি শক্তিশালী ঘোর তৈরি হওয়া (এবং আমি মনে করি এই দুটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে)। এখন, আপনি কি সচেতনভাবে আপনার কবিতাগুলো স্পষ্ট এবং উচ্চ স্বরে পাঠ করলে ঘোরের মাঝে নিয়ে যাবে এভাবে লেখেন?
llআমার শুরুর দিককার কবিতাগুলো এমনভাবে আমি লিখিনি। উদাহরণস্বরূপ, আমার প্রথম বই ‘দ্য কলোসাস’-এর কবিতাগুলো এখন উচ্চকণ্ঠে আমি আবৃত্তি করতে পারি না। সেগুলো আমি এমনভাবে লিখিনি, যাতে আবৃত্তি করা যায়। এই কবিতাগুলো ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ক্লান্ত করে তোলে। কিন্তু এইমাত্র আমি যে কবিতাগুলো পড়লাম, যেগুলো একদম সাম্প্রতিক, সেগুলো আমি নিজেই নিজেকে শোনাই। আমি মনে করি, আমার নিজের লেখার বিকাশের ক্ষেত্রে এটি আমার জন্য একদম নতুন একটি বিষয়। এবং যদি এগুলোর মধ্যে কোনো স্বচ্ছতা থাকে, তবে তা এই কারণে যে আমি এগুলো নিজে নিজেকে শোনাই, উঁচু গলায়ই শোনাই।
lএকমুহূর্তের জন্য কবিতাকে পাশে সরিয়ে রাখি। এমন অন্য কিছু আছে কি– যা আপনি লিখতে চান বা যা আপনি লিখেছেন?
llদেখুন, আমি সব সময় গদ্যের প্রতি আগ্রহী ছিলাম। কিশোর বয়সে আমি ছোটগল্প লিখে প্রকাশ করতাম। আমি সব সময় দীর্ঘ ছোটগল্প লিখতে চেয়েছি, উপন্যাস লিখতে চেয়েছি। এখন আমি বলা যায় একটি সম্মানজনক বয়সে পৌঁছেছি এবং কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। তাই গদ্য এবং বিশেষ করে উপন্যাসের প্রতি আরও বেশি আগ্রহ অনুভব করি। আমি মনে করি, উপন্যাসে আপনি টুথব্রাশ থেকে শুরু করে দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় ছোটখাটো জিনিস ঢুকিয়ে দিতে পারেন, যা কবিতায় করা বেশ কঠিন। আমি অনুভব করি কবিতা বড় কঠোর এক শাস্ত্র। আপনাকে খুব অল্প পরিসরে খুব দ্রুত অনেক দূর যেতে হয়, ফলে সব গৌণ বিষয় বাদ দিতে হয়। কবিতা থেকে দূরে থাকাটা আমাকে পোড়ায়! আবার আমি একজন নারী, আমি আমার ছোটখাটো জিনিসগুলো ভালোবাসি, আমি তুচ্ছ বিষয়গুলো পছন্দ করি, এবং উপন্যাসে আমি জীবনের অনেক বেশি কিছু তুলে ধরতে পারি– হয়তো এতটা তীব্রভাবে নয়, কিন্তু নিঃসন্দেহে অনেক বিস্তৃতভাবে। আর এই কারণেই উপন্যাস লেখার প্রতি আমার আগ্রহ বেড়ে গেছে।
lআপনি কি অন্যান্য লেখক বা কবিদের সংস্পর্শে নিজেকে খুব একটা খুঁজে পান?
llআমি বরং ডাক্তার, ধাত্রী, আইনজীবী– লেখক ছাড়া অন্য যে কোনো পেশার মানুষের সঙ্গ বেশি পছন্দ করি। আমি মনে করি, লেখক ও শিল্পীরা সবচেয়ে আত্মকেন্দ্রিক মানুষ। যদিও এটা বলা উচিত নয়। কারণ, আমি অনেক লেখক ও শিল্পীকে পছন্দ করি, এমনকি আমার অনেক বন্ধু তাদের মধ্যে রয়েছেন। কিন্তু আমি সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধা করি সেই মানুষকে; যিনি বাস্তব অভিজ্ঞতার কোনো ক্ষেত্রে নিজেকে পারদর্শী করে তুলেছেন এবং আমাকে কিছু না কিছু শেখাতে পারেন। যেমন– আমার এলাকার স্থানীয় একজন ধাত্রী আমাকে মৌমাছি পালন করতে শিখিয়েছেন। কিন্তু তিনি আমার লেখার কিছুই বুঝতে পারেন না। অথচ সত্যি বলতে, আমি তাকে অধিকাংশ কবির চেয়ে বেশি পছন্দ করি। আমার বন্ধুদের মাঝেও এমন অনেককে পাই, যারা নৌকা চালানো, নির্দিষ্ট কিছু খেলাধুলা বা কারও শরীর কেটে কোনো অঙ্গ অপসারণ করার মতো বিষয় সম্পর্কে বিস্তর জানেন। ব্যবহারিক বিষয়ে এই দক্ষতা আমাকে মুগ্ধ করে। কবি হিসেবে, আমরা যেন একটু বাতাসে ভেসে থাকি। তাই আমি সব সময় এমন কাউকে পছন্দ করি, যে আমাকে বাস্তবের কিছু শেখাতে পারে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপন য স অন ক ব র জন য আপন র প রথম ন একট

এছাড়াও পড়ুন:

আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা, ক্ষমা চাইতে আলটিমেটাম

উপাচার্যের একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে বারবার অশান্ত হয়ে উঠছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক ড. শুচিতা শারমিন উপাচার্য নিযুক্ত হওয়ার পর গত ৭ মাসে একাধিকবার তাঁর পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ ইংরেজি বিভাগের  অধ্যাপক ড. মুহসিন উদ্দিনকে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর আখ্যা দিয়ে সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রতিবাদে তারা আবারও আন্দোলনে নেমেছেন। ড. মুহসিনকে পুনর্বহাল ও উপাচার্যকে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা সোমবার ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন।

ড. মুহসিন জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এবং উপাচার্যের আস্থাভাজন শিক্ষকরা আন্দোলনের বিপক্ষে ছিলেন– তাঁর একটি ভার্চুয়াল সভার অডিও গত শনিবার ভাইরাল হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগের দিন ৪ আগস্ট তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া আওয়ামী লীগপন্থি শিক্ষকদের নিয়ে ওই সভাটি করেছিলেন। অডিও ভাইরাল হওয়ার পর ড. মুহসিনকে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।

সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও পরে উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ৪ দফা দাবিসংবলিত স্মারকলিপি দেন। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। দাবিগুলো হলো– অধ্যাপক মুহসিন উদ্দিনের বিরুদ্ধে মিথ্যা-অপমানজনক অপবাদ প্রত্যাহার, সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য পদে পুনর্বহাল; অবসরের পর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলামকে অপসারণ; ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের দোসর শিক্ষকদের লাভজনক কমিটি থেকে অপসারণ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যমান উন্নয়ন না করে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও ফ্যাসিবাদের দোসরদের পুনর্বাসন করায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া।

আন্দোলনকারীদের অন্যতম ইংরেজি চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রাকিন খান জানান, একজন নিরপরাধ শিক্ষককে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় সাধারণ শিক্ষর্থীরা ক্ষুব্ধ। সোমবার তারা উপাচার্যের দপ্তরে গিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। তারা জেনেছেন, গতকাল তিনি ক্যাম্পাসে ছিলেন না। চার দফা দাবি না মানলে বড় আন্দোলন গড়ে তুলবেন। 

উপাচার্যের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
ড. শুচিতা যোগদানের পরই শিক্ষার্থীরা অভিযোগ তোলেন, তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর অনুসারী। জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের ৩৫০ বিশিষ্টজন গত বছর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছিলেন। উপাচার্যও সেই বিবৃতিদাতাদের একজন। এ ছাড়া কলিমুল্লাহকে ববির একাডেমিক কাউন্সিলর, পরীক্ষা কমিটি ও পূর্বের চাকরি গণনা কমিটির সদস্য করা হলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে প্রত্যাহার করেন তিনি। 

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানীর অভিযোগ, তিনি সব একাডেমিক কাজের প্রশাসনিক তত্ত্বাবধান করবেন। কিন্তু উপাচার্য তাঁকে বাদ দিয়েই নথিভিত্তিক ও সভাভিত্তিক একাডেমিক সিদ্ধান্ত নেন। কোষাধ্যক্ষ ড. মামুন অর রশিদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিতে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত চেক কোষাধ্যক্ষ এবং তদূর্ধ্ব চেক উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ যৌথ স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু উপাচার্য সব চেকে একাই স্বাক্ষর করেন। এসব অভিযোগ এর আগে শিক্ষার্থীরা দুইবার উপচার্যের পদত্যাগে এক দফার আন্দোলনে নেমেছিলেন। গত ২৮ নভেম্বর তাঁর কক্ষে তালাও লাগিয়েছিলেন তারা। 

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে বক্তব্য জানতে উপাচার্য ড. শুচিতা শারমিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও মেসেজ দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি। পরে সোমবার রাতে তাঁর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা সাকিব হোসেন জানান, উপাচার্য সারাদিন একাধিক বৈঠক করেছেন। এখন তিনি বিশ্রামে রয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেতৃত্বশূন্য পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ কী
  • পদ্মাপাড়ের মাটি বিক্রি করছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা, হুমকিতে পুলিশ একাডেমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা
  • যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও মনে করেন, ট্রান্স নারী মানেই নারী নন
  • সিটি কলেজের স্থাপনায় হামলা পুলিশ দাঁড়িয়ে দেখেছে: ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ
  • মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে মহাখালী-সাতরাস্তা সড়ক অবরোধ
  • শাশুড়িকে নারীর চোখে ‘দানব’ বানায় কে
  • সাগর-রুনি হত্যা মামলা তদন্তে সময় বাড়ানো হলো আরও ৬ মাস
  • ‘মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে ট্রেনিং-রিসার্চকে গুরুত্ব দিতে হবে’
  • বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়: আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা
  • আবারও উপাচার্যবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা, ক্ষমা চাইতে আলটিমেটাম