Samakal:
2025-02-27@21:27:23 GMT

মার্কেজের লেখায় আড়ালের কৌশল

Published: 27th, February 2025 GMT

মার্কেজের লেখায় আড়ালের কৌশল

‘আমি লাইনোটাইপ মেশিনের গোলমেলে শব্দ পছন্দ করতাম, যেটার শব্দ বৃষ্টি ঝরার শব্দের মতো।’
মার্কেজ এভাবেই নিজের প্রথমদিকের লেখার পরিপ্রেক্ষিত খুলে ধরেছিলেন প্যারিস রিভিউর সাক্ষাৎকারে পিটার এইচ স্টোনের কাছে। ছন্দময় বাতাবরণে নিজেকে খুঁজে পেতেন পৃষ্ঠার কালো অক্ষরে। জয়েস ও ভার্জিনিয়া উলফের কাছ থেকে তিনি নিয়েছিলেন স্বগতোক্তি ও চেতনাপ্রবাহ রীতির কৌশল। মার্কেজের সেসব লেখাই সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হয়েছে যে কাজগুলো তাঁর কল্পনা থেকে এসেছে, যেখানে পুরো কাজের মধ্যে একটিমাত্র লাইনও সত্যি নয় বা সেটা কোনো বাস্তবতার ভিত্তিতে করা হয়নি। তবে মজার বিষয় হলো, মার্কেজের চোখে ক্যারিবিয়ান বাস্তবতা আসলে বন্যতম কল্পনার অনুরূপ।
রচনাকৌশল পরিণত ও আয়ত্তে এসে গেলেই যে কোনো লেখকের জন্য লেখালেখি সহজ হবে, মার্কেজ এমনটা মনে করতেন না। কারণ, একটা ফর্মে ফেলে একজাতীয় লেখার পুনরাবর্তন কোনো সৃষ্টিশীল লেখকের কাজ নয়। তাই তাঁর ভাষায়, ‘প্রতিটি শব্দ আগের চেয়ে দামি হয়ে ওঠে, তখন তা বহু লোককে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখে।’
মার্কেজ লেখার কৌশল হিসেবে সব সময়েই শুরুটা করতেন একটা কল্পনায় তৈরি করা চিত্র দিয়ে। এটা খুব সাহসী পদক্ষেপ। থিম কী হবে, ঘটনাপরম্পরা কী হবে, কাহিনিবিন্যাস কোথা থেকে কোথায় যাবে, গল্পের দুনিয়া কোন প্রেক্ষাপটে হবে– সেসব নিয়ে না এগিয়ে শুধু একটা চিত্রকল্প দিয়ে লেখা শুরু করে এগিয়ে যাওয়া একটা দৈবচয়নের মতোই বিষয়। মূলত, মনের গভীরে সব সময় মথিত হওয়া না বলা গল্পের আলোড়ন তাঁকে ঠেলে নিয়ে যেত গল্প বলার দিকে, কিন্তু সেই বলার ক্ষেত্রে তিনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন সুনির্দিষ্ট চিত্রকল্প দিয়ে শুরু করে। এটাই ছিল তাঁর মোক্ষম কৌশল। প্লিনিও অপুলেইও মেনদোজার সঙ্গে কথোপকথনে তিনি এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। ‘মঙ্গলবারের দিবানিদ্রা যে গল্পটিকে আমি আমার সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ছোটগল্প হিসেবে মনে করি, সেটা লেখা হয়েছিল, কালো পোশাক ও কালো ছাতা মাথায় একজন নারী এবং একটি ছোট মেয়ে একটি নির্জন শহরে তীব্র রোদের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে দেখে। পাতাঝড় উপন্যাসে যে চিত্রকল্পটি ছিল তা হচ্ছে, একজন বৃদ্ধ লোক তার নাতিকে একটি অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠানে নিয়ে যাচ্ছে। কর্নেলকে কেউ চিঠি লেখে না উপন্যাসের ক্ষেত্রে চিত্রকল্পটি ছিল ব্যারেনকুইলার বাজারে একটি লোক লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছেন। তিনি একধরনের নীরব উদ্বিগ্নতা নিয়েই লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অনেক বছর পরে প্যারিসে একটা চিঠির জন্য প্রতীক্ষারত আমি, সেই একই রকম উদ্বিগ্নতা নিয়ে মূলত মানি অর্ডারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি স্মৃতির মধ্য থেকে সেই বহুদিন আগের চিঠির জন্য অপেক্ষা করা মানুষটিকে চিনে নিতে পেরেছিলাম।’ 
মার্কেজের মনে তৈরি চিত্রকল্পের পাত্রপাত্রীরা এভাবেই সম্পূর্ণ চেহারা নিয়ে তাঁর গল্প ও উপন্যাসের শুরুতে আবির্ভূত হয়েছেন। 
কিন্তু এই চিত্রকল্প কেন তৈরি হয়েছিল তাঁর মনে? আসলে লেখকদের অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির মিশেল, সঙ্গে সৃজনেচ্ছার নিবিড় বন্ধনে তৈরি হয় এসব চিত্রকল্প। মার্কেজের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বেশি পঠিত উপন্যাস সহস্র বছরের নিঃসঙ্গতা উপন্যাসের শুরুতে একজন বৃদ্ধলোক একটি শিশুকে সার্কাসে বরফ দেখাতে নিয়ে যাচ্ছে কৌতূহলের বিষয় হিসেবে।
যারা কখনও বরফ দেখেনি, ভারতীয় উপমহাদেশের প্রেক্ষাপটেও উনিশ শতকের অনেকেই বরফ দেখেনি, তখন এই বরফ দেখাটাই আশ্চর্যের বিষয় ছিল। নতুন কিছু অভূতপূর্ব অনাস্বাদিতপূর্ব কিছু। এই কৌতূহল, এই অজানার মধ্যে ক্রমশ ঢুকে পড়াই লেখালেখির চাবি পয়েন্ট। লেখক যত অভিজ্ঞ, দক্ষ ও সংবেদনশীল হন, পাঠকের সঙ্গে তাঁর সংযোগ তত নিবিড় হয়; পাঠক নিজেকে লেখকের সঙ্গে একীভূত করে ফেলেন, এতই একাত্ম হয়ে ওঠেন যে, নিজেকে সে লেখকের সৃষ্ট চরিত্র ভাবতে পছন্দ করেন। এখানেই লেখকের সাফল্য। 
সহস্র বছরের নিঃসঙ্গতা উপন্যাসে শুরুর বর্ণনা সম্পর্কে লেখকের জবানিতে পাই, ‘বাস্তব কিছুর প্রেরণায়ই চিত্রকল্পটা সৃষ্টি হয়েছিল। মনে আছে যখন আরাকাটাকায় আমি ভীষণ ছোট একটা ছেলে, নানাজান সার্কাসে এক কুঁজবিশিষ্ট দ্রুতগামী উট দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। আরেকদিন যখন আমি তাকে জানাই যে, ঐ সার্কাসে আমি বরফ দেখতে পাইনি, তখন তিনি আমাকে কলা কোম্পানির কলোনিতে নিয়ে যান, তাদের বরফায়িত সামুদ্রিক মাছের মোড়ক করা বেতের ঝুড়ি খুলতে বলেন এবং আমার হাত ওর মধ্যে ঢুকিয়ে দেন। সহস্র বছরের নিঃসঙ্গতার সম্পূর্ণ উপন্যাসটি এই একটি চিত্রকল্প দিয়ে শুরু হয়েছে।’
তবে কি শুধু চমৎকার দৃশ্যকল্প দাঁড় করালেই ভালো সব ফিকশন তৈরি হয়ে যাবে আপনা-আপনি? মার্কেজ কথোপকথনের এই পর্বে সঙ্গে সঙ্গেই খোলাসা করে দিয়েছেন লেখার কৌশল। বহু বছর ধরে যে বাস্তব পৃথিবী তাঁর মনে অভিঘাত দিয়েছে। তাকেই কল্পনার দুনিয়ায় মার্কেজ সন্নিবেশিত করেছেন নিজের পছন্দমতো। বাস্তব ঘটনাগুলো হুবহু পাঠকের সামনে আনলে তা আসলে শুধু সংবাদমাত্র। অনেক বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশায় নিযুক্ত এই মহান লেখক খুব ভালোভাবেই তা জানতেন, তাই কৌশল হিসেবে তিনি বাস্তব-অবাস্তব-কল্পনা-পরাবাস্তব-জাদুবাস্তবতার সম্মিলনে তৈরি করে নিয়েছিলেন নিজস্ব দুনিয়া। সেখানে ‘অনেক বছর পরে, যখন সে ফায়ারিং স্কোয়াডের মুখোমুখি, কর্নেল অরনিয়েলো বুয়েন্দিয়া বহুদিন আগের ঐ বিকেলকে স্মরণ করলেন, যখন তাঁর বাবা তাঁকে বরফ দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন।’ 
তবে কি বরফে জড়ানো মৃত মাছের শীতলতা কর্নেলের মধ্যে সংক্রমিত? তাই তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মৃতশীতল পরাবাস্তবকে অনুভব করছিলেন! নাকি মৃত্যুর মুখোমুখি হলে পুরোজীবনের যে খণ্ড খণ্ড ছবির কয়েক ঝলক ফ্ল্যাশব্যাকের মতো মানুষের স্মরণে ছায়া ফেলে যায় তারই সফল সৃজন এই উপন্যাসের শুরু? 
বইয়ের প্রথম বাক্যকে বেশি মনোযোগের সঙ্গে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ কী, এ প্রশ্নের উত্তরে মার্কেজ নির্দ্বিধায় বলেছিলেন, ‘প্রথম বাক্যটি বইটির স্টাইল, গঠন, এমনকি দৈর্ঘ্য কতটুকু হবে, তার পরীক্ষাগার হতে পারে।’ অর্থাৎ লেখার প্রথম বাক্যই তাঁর ক্ষেত্রে গল্পের পরবর্তী ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে দিত। নিয়তির মতো। এখানে টেনে লম্বা করা অথবা অকারণ সংক্ষেপ করার কোনো অবকাশ নেই। 
একটা লেখার আইডিয়া ঠিক কতদিন মনের মধ্যে জারিত করার জন্য ফেলে রাখা উচিত, হেমিংওয়ে যেমন বলেছেন– কোনো বিষয় নিয়ে খুব দ্রুত যেমন লিখে ফেলা উচিত নয়, তেমনি খুব দেরি করাও সংগত নয়। এ কথার উত্তরে মার্কেজ যা বলেছেন তাতে বোঝা যায়, এটা লেখক হিসেবে আপেক্ষিক। তাঁর মতে, ‘আইডিয়া যদি সহস্র বছরের নিঃসঙ্গতার মতো পনেরো বছর, গোত্রপতির শরৎকালের মতো সতেরো বছর এবং একটি পূর্বঘোষিত মৃত্যুর দিনপঞ্জির মতো ত্রিশ বছরও যথেষ্ট ভালোভাবে টিকে থাকে, তখন ওটা লিখে ফেলা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় থাকে না।’ যে লেখাটা রচিত হবে, কোনো কারণেই লেখকের মন থেকে মুছে যাবে না। হেমিংওয়ের কাছ থেকে লেখার কৌশল নিয়েছেন গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, ‘তাঁর উপদেশ ছিল যে একটি ছোটগল্প একটি হিমবাহের মতো, এর মধ্যে যেটুকু আপনি দেখতে পাচ্ছেন না, সেটুকু দ্বারাই সে আপনাকে ধারণ করছে– যে কোনো চিন্তা পঠন-পাঠন এবং উপাদান সংগ্রহ করছেন, কিন্তু সরাসরি গল্পে ব্যবহার করছেন না। হ্যাঁ, হেমিংওয়ে আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। এমনকি একটি বিড়াল কীভাবে কোনার দিকে ঘুরে যায় তাকেও তিনি নির্ভুলভাবে নির্ধারণ করতে পারেন।’ তবে এ কথাও স্বীকার করেছেন, ‘একটি ছোটগল্পের বই লেখা একটা উপন্যাস লেখার চেয়ে অনেক বেশি জটিল। প্রতিবার ছোটগল্প লেখার সময় আপনাকে আবারও পুরোটা বিষয় একেবারে প্রথম থেকে শুরু করতে হবে।’ তিনি একটি মনমতো নির্ভুল অনুচ্ছেদ লেখার জন্য বারবার পুনর্লিখন করে পঞ্চাশ পৃষ্ঠা নষ্ট করতেও দ্বিধা করতেন না। মার্কেজ গ্রাহাম গ্রিনের কাছ থেকে শিখেছেন কী করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম অর্থ উদ্ধার করতে হয়। যে পরিবেশটিকে লেখক খুব ভালোরকম চেনেন, সেখান থেকে কাব্যিক উপাদানগুলো আলাদা করা ভীষণ কঠিন কাজ। আবার সেটাকে নিজের লেখায় যথাযথভাবে ব্যবহার করাও মুনশিয়ানার কাজ। এভাবেই লেখার প্রতিটি নৈপুণ্য কৌশল প্রকরণ মার্কেজকে বিশিষ্ট, স্বতন্ত্র, মনোগ্রাহী ও জনপ্রিয় করে তুলেছে। v
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ত রকল প উপন য স র বরফ দ খ অন ক ব প রথম করত ন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ, দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে সংশয়

ফিলিস্তিনের গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামীকাল শনিবার। তবে ইসরায়েলের অনাগ্রহে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ে এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি হয়নি। অবশ্য যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত লড়াই বন্ধ থাকার কথা।

এদিকে প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। গত বুধবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। এসব বন্দীকে গত শনিবার মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হামাস অনুষ্ঠান করে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে তাঁদের মুক্তি আটকে দিয়েছিল ইসরায়েল। বুধবার রাতে আরও চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে হামাস। এই ধাপেও ইসরায়েল ২৬ ফিলিস্তিনির মুক্তি দিতে গড়িমসি করছে বলে গাজার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে।

চুক্তি অনুযায়ী গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং বন্দিবিনিময় শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ৪২ দিনে ৩৮ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শেষ হতে যাচ্ছে আগামীকাল শনিবার। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শুরুর ১৬তম দিন থেকে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সে অনুযায়ী আলোচনা শুরু হয়নি। অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে।

দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হলে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা। এখনো ৫৯ জন ইসরায়েলি গাজায় বন্দী রয়েছেন, যাঁদের অর্ধেকের বেশি বেঁচে নেই বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি এবং মিসর-গাজা সীমান্তসহ সব এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা।

যুদ্ধে ফিরতে চায় ইসরায়েল

হামাস জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে তারা প্রস্তুত। তবে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির চেয়ে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে চান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় আবার যুদ্ধ শুরু করতে সরকারের মিত্রদের থেকে তাঁর ওপর চাপ রয়েছে।

গতকাল নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করেন নেতানিয়াহু। একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, ওই বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে কি না এবং তাদের কোন বিষয়ে আলোচনার ক্ষমতা কতটুকু দেওয়া হবে।

পরে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি আলোচকদের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ (বৃহস্পতিবার) মিসরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়িয়ে বাকি জিম্মিদের মুক্ত করার ওপর জোর দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। সংশ্লিষ্ট ইসরায়েলি একটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, প্রথম ধাপের মেয়াদ ‘যত দূর সম্ভব বাড়িয়ে’ এই লক্ষ্য অর্জন করতে চান তিনি।

দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হলে গাজা ও মিসর সীমান্তবর্তী ‘ফিলাডেলফি করিডর’ থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা। গত বছরের মে মাসে এই করিডরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল ইসরায়েল। দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান-কে জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, ফিলাডেলফি করিডর ছাড়বেন না ইসরায়েলি সেনারা।

এদিকে ইসরায়েল আবারও গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন হামাসের পলিটব্যুরো সদস্য বাসেম নাইম। আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়নি ইসরায়েল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ