বনসাই উঠোন এবং প্রান্তরের বৃক্ষ
আমিনুল ইসলাম
বিজ্ঞাপিত উঠোনে জমে ওঠা বনসাইয়ের মেলায়
গজফিতা আর কাঁচিহাতে উচ্চকণ্ঠ বাদামি বামন:
আরে ভাই, বলছি– বৃক্ষের বাহুল্য ঠেকাও! অতএব
বিদেশি কুকুরের মতো জাগ্রত সব শাণিত সন্দেহ!
উঠোনের একপাশে বৃক্ষবিষয়ক সেমিনারে
বনসাই বন্দনায় প্রগল্ভ ববকাট গদ্য উপস্থাপক:
আহা, একেই বলে প্রাতিস্বিক শিল্পীর সুচারু সংযম!
ঠিক দূরে নয়– তবু দূরে– ক্ষীণজল নদীটির পাড়ে
লালনসংগীতের মতন বেড়ে উঠেছে একটি পুষ্টপ্রাণ বৃক্ষ,
জলস্নাত হাওয়ায় থেকে থেকে নেচে ওঠে তার স্বতঃস্ফূর্ত
সবুজের সচ্ছলতা; তার শাখায় বসে– কখনো ছায়ায়
দাঁড়িয়ে– স্কুল সহপাঠিনীর মতো কোরাসে উচ্ছল
দোয়েল কোয়েল পাপিয়া এবং বেনেবউ; বনসাই-
ব্যাপারী সম্পাদিত বৃক্ষের তালিকায় তার নাম নেই।
কিন্তু সুবহ সাদেকের উদ্ভাসিত আঁধারে,– উপকূলীয়
হাওয়া তারই মাথায় ঢালে সুন্দরবনের ঝড়রোধী আশীর্বাদ!
আসল মন্ত্রের ঠিকানা
আরিফ মঈনুদ্দীন
কলসের ভেতরে কী আছে
আমার জানার আগেই কে যেন এসে
মুখ বন্ধ করে দিয়ে গেছে
মন্ত্রের একটি পাঠ লুকিয়ে রেখেছে
একান্ত গোপন স্থানে
চেষ্টাচরিত্রের শেষ-অবশেষ
শক্তির সুঠাম কাঠামোয় আগলে ধরেও
কূলকিনারা হয়নি
রাজ্যময় ঘোষণায় তুলি দেওয়া কপাট খোলার কিচ্ছা
মুখ থুবড়ে পড়ে আছে আঙিনায়—কিছুতেই কিছু
হচ্ছে না জেনেও আবার চেষ্টা—আবার কসরত
কে খুলবে কলসের আঁটানো কঠিন মুখ
মন্ত্র তার কাছে
সত্য এবং ন্যায়ের আদি পাঠ মহাবিশ্বের প্রারম্ভ থেকে
আজ অবধি পরম আধুনিক যার কাছে
‘সত্য’ই মন্ত্র—সত্যের যাবতীয় কলা
হৃদয়ই গোপন ঠিকানা—মানে না সে ছলাকলা।
না-স্বীকারীর স্বীকারোক্তি
সুদেব চক্রবর্তী
হেমলকের পেয়ালা হাতে নিয়ে
ত্রিমাত্রিক ভার্সনে হাসতে হাসতে বলব– নেই।
রিরংসার জলে ধোয়া এইসব শস্যক্ষেত্রে
অনুপ্রবেশকারীরা দেখুক মূলোৎপাটিত দ্রাবিড়ের
অক্ষত স্পর্ধা
উন্নতজানু হয়ে বলতেই থাকব– নেই, ছিল না।
আলো হোক বিপ্রতীপ
পাখিশূন্যতায় ভরে যাক শিশুসকাল
টিকটিকির ডাকে মাটি টুসকানো পিতামহী
তেড়ে আসুক ছি ছি পোকা নিয়ে
ন্যাওটা উঠোনের কীলকলিপি মুছে
কারফিউ বিছিয়ে দিক ককেসীয় সেমেটিক মিথ্যাচাষিরা
লোভ আর ভয় বেচে ডলার কামানো তোমাদের শৃগালসভ্যতায়
আমার টোটেম সারমেয়– ছুড়ে দিলাম পুরবিনাশী ঘেউ– নেই, নেই;
কোনোকালেই ছিল না।
সরল অন্ধকার
উম্মে হাবিবা
চিঠির মতো সুন্দর এ সকাল
রোদে গলে পড়ছে মুহুরী নদী
রাতভর কেউ তাকে জাগিয়ে
রেখেছে যুদ্ধ বন্ধের গল্প বলে
অস্ত্রের মুখে চুমু খেয়ে ট্রিগার
চাপলে নিশানা ভুল হবার নয়
তবু অক্ষত বুকে বেঁচে ফেরে
শত্রুকে বহনকারী কালো অশ্ব
পাহাড়ের সমতলের সকলের
সকল অপরাধ একা করেছে
কি দুঃসহ দুর্বিনীত ফেরার সে
ছদ্মনাম ব্যবহার করে লুকিয়ে
আছে গ্রামের সরল অন্ধকারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদলের দেওয়া বিবৃতি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি: ডুজা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সংগঠনটির দেওয়া বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) এক যৌথ বিবৃতিতে ডুজার সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি ও সাধারণ সম্পাদক মাহাদী হাসান ছাত্রদলের এমন বিবৃতির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিভিন্ন মহল থেকে চাপ প্রয়োগ করে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সরিয়ে নেওয়া, বিবৃতিতে সংবাদকর্মীদের নিয়ে আপত্তিকর শব্দচয়নের মতো আচরণকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকিস্বরূপ বলে দাবি করেছে ডুজা।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে পাণ্ডুলিপিবিষয়ক কর্মশালা শুরু
ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে আইডিইএ পরিচালকের সাক্ষাৎ
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ছাত্রদলের কর্মসূচি নিয়ে ‘আওয়ামী এমপিকে পুনর্বাসন/ভাগ বাটোয়ারা দ্বন্দ্বে জাবিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি স্থগিত’ শিরোনামে জাগোনিউজ২৪.কম-এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ সংবাদকে ঘিরে একটি বিবৃতি দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। যেখানে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু শব্দচয়ন করে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সাংবাদিকতার নীতি-নৈতিকতা মেনে নিউজ করার পরেও দু’একটি গণমাধ্যমের উপর ছাত্রদলের প্রভাব খাটিয়ে সংবাদ সরিয়ে ফেলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য হুমকি। গত ৫ আগস্টের পর নতুন বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই কাম্য নয়।
বিবৃতিতে আরও বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমাদের আকাঙ্ক্ষা ছিল সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসা অভিযোগের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করবেন। কেউ নিজেকে ক্ষতিগ্রস্ত মনে করলে নিয়ম অনুযায়ী প্রতিকার চাইবেন। কিন্তু ছাত্রদলের এ ধরনের আচরণ আমাদের সে আকাঙ্ক্ষাকে আশাহত করেছে।
ডুজা নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাগোনিউজ২৪.কম-এর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি সৈকত ইসলামকে ‘সময়ের আলো’র স্টাফ রিপোর্টার সাব্বির আহমেদ নামে একজন ফোন দিয়ে চাপ প্রয়োগেরও নিন্দা জানাই।
নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্তৃক সাব্বির আহমেদের অপেশাদার ও অনৈতিক আচরণের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করেন।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী