কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ৫৮তম অধিবেশনে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেছে ভারত ও পাকিস্তান। ভারতের অবৈধ দখল নিয়ে জাতিসংঘে উচ্চ পর্যায়ে ভাষণে পাকিস্তানের আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার অভিযোগ করেন। 

জম্মু ও কাশ্মীরে ভারতের অবৈধ দখল এবং কাশ্মীরি জনগণের আত্মরক্ষার অধিকারকে অব্যাহতভাবে অস্বীকার করার নিন্দা জানিয়েছেন তিনি। আর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতিসংঘে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি কে ত্যাগী। 

তিনি বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এমন একটি ব্যর্থ দেশের জন্য বৈঠকের সময় নষ্ট হচ্ছে। ওরা তো আন্তর্জাতিক সাহায্য নিয়ে বেঁচে রয়েছে। এমন একটি দেশ, যেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার চালানো হয় এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের দ্বারা নিষিদ্ধ সন্ত্রাসবাদীদের আশ্রয় দেওয়া হয়। সূত্র: ডন
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ, দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে সংশয়

ফিলিস্তিনের গাজায় প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামীকাল শনিবার। তবে ইসরায়েলের অনাগ্রহে যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের বিষয়ে এখন পর্যন্ত তেমন অগ্রগতি হয়নি। অবশ্য যুদ্ধবিরতি ও বন্দিবিনিময় চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত লড়াই বন্ধ থাকার কথা।

এদিকে প্রায় ৬০০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। গত বুধবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর পর্যন্ত তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। এসব বন্দীকে গত শনিবার মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হামাস অনুষ্ঠান করে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ায় শেষ মুহূর্তে তাঁদের মুক্তি আটকে দিয়েছিল ইসরায়েল। বুধবার রাতে আরও চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ হস্তান্তর করেছে হামাস। এই ধাপেও ইসরায়েল ২৬ ফিলিস্তিনির মুক্তি দিতে গড়িমসি করছে বলে গাজার কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে।

চুক্তি অনুযায়ী গত ১৯ জানুয়ারি থেকে গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর এবং বন্দিবিনিময় শুরু হয়। যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ৪২ দিনে ৩৮ ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে প্রায় দুই হাজার ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।

প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শেষ হতে যাচ্ছে আগামীকাল শনিবার। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি শুরুর ১৬তম দিন থেকে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু সে অনুযায়ী আলোচনা শুরু হয়নি। অবশ্য চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা না হওয়া পর্যন্ত প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতি চলতে থাকবে।

দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হলে বাকি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা। এখনো ৫৯ জন ইসরায়েলি গাজায় বন্দী রয়েছেন, যাঁদের অর্ধেকের বেশি বেঁচে নেই বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি এবং মিসর-গাজা সীমান্তসহ সব এলাকা থেকে ইসরায়েলি সেনা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা।

যুদ্ধে ফিরতে চায় ইসরায়েল

হামাস জানিয়েছে, দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে তারা প্রস্তুত। তবে দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতির চেয়ে প্রথম ধাপের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ বাড়িয়ে জিম্মিদের মুক্ত করতে চান ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজায় আবার যুদ্ধ শুরু করতে সরকারের মিত্রদের থেকে তাঁর ওপর চাপ রয়েছে।

গতকাল নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠক আহ্বান করেন নেতানিয়াহু। একটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, ওই বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে ইসরায়েলি প্রতিনিধিদল দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখবে কি না এবং তাদের কোন বিষয়ে আলোচনার ক্ষমতা কতটুকু দেওয়া হবে।

পরে প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েলি আলোচকদের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে আজ (বৃহস্পতিবার) মিসরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু।

গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার না করে প্রথম ধাপের মেয়াদ বাড়িয়ে বাকি জিম্মিদের মুক্ত করার ওপর জোর দিচ্ছেন নেতানিয়াহু। সংশ্লিষ্ট ইসরায়েলি একটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, প্রথম ধাপের মেয়াদ ‘যত দূর সম্ভব বাড়িয়ে’ এই লক্ষ্য অর্জন করতে চান তিনি।

দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে সমঝোতা হলে গাজা ও মিসর সীমান্তবর্তী ‘ফিলাডেলফি করিডর’ থেকে ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা। গত বছরের মে মাসে এই করিডরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল ইসরায়েল। দেশটির সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কান-কে জ্বালানিমন্ত্রী এলি কোহেন বলেছেন, ফিলাডেলফি করিডর ছাড়বেন না ইসরায়েলি সেনারা।

এদিকে ইসরায়েল আবারও গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরিকল্পনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন হামাসের পলিটব্যুরো সদস্য বাসেম নাইম। আল-জাজিরাকে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা করতে রাজি হয়নি ইসরায়েল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ