সোনারগাঁয়ে একটি বেসরকারি প্রিন্টিং প্রেসের শ্রমিককে অপহরণের পর মারধর করে মুক্তিপণ আদায় করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাতে উপজেলার কাঁচপুর বালুরমাঠ এলাকা থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। পরে হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। এঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই ফরহাদ আলী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।

ভুক্তভোগী ওই শ্রমিকের নাম মো.

ওমর ফারুক (৩৮)। তিনি সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর বালুরমাঠ এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকেন। স্থানীয় একটি বেসরকারি প্রিন্টিং প্রেসের শ্রমিক তিনি।

অভিযোগে ফরহাদ আলী উল্লেখ করেন  , বুধবার রাতে অজ্ঞাতনামা কিছু ব্যক্তি বাসা থেকে ওই শ্রমিককে তুলে নিয়ে যায়। রাত ১০টায় একটি মুঠোফোন নম্বর থেকে ফোন করে তাঁদের কাছে মুক্তিপণ চাওয়া হচ্ছে। মুক্তিপণ না দেয়া হলে ওমর ফারুককে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।

এদিকে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ওমর ফারুক বাড়িতে ফিরে আসেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, 'বুধবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে কেনাকাটার জন্য ঘরের বাইরে যান। এসময় অজ্ঞাতনামা একজন ব্যক্তি স্বেচ্ছায় তার গায়ে ধাক্কা দিয়ে ওই ব্যক্তির হাতে থাকা মুঠোফোনটি মাটিতে ফেলে দেন।

পরে ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন ওমর ফারুক ওই ব্যক্তির মুঠোফোন ভেঙ্গে ফেলেছে। ওমর ফারুক ওই ব্যক্তির অভিযোগ নিয়ে আপত্তি জানালে অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচ ছয়জন এসে তাকে অজ্ঞান করে অজ্ঞাতনামা স্থানে একটি কক্ষে নিয়ে যায়। রাত দশটায় জ্ঞান ফিরলে তিনি দেখেন মুখোশ পড়িহিত কয়েকজন পুরুষ ও একজন নারী সেই কক্ষে অবস্থান করছেন।

এসময় অপহরণকারীরা তাঁকে এলোপাতাড়ি মারধরের পর পরিবারের কাছে ফোন করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। রাতে ও সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে দুই দফায় ৫১ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেয়া হলে বৃহস্পতিবার সকালে তার একটি আপত্তিকর ভিডিও ধারন করা হয়। পরে চোখ মুখ বেঁধে অজ্ঞাতনামা স্থান থেকে তাঁকে কাঁচপুরের একটি সড়কে ছেড়ে দেয়া হয়।

সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারী বলেন, অপহরণের ঘটনায় একটি অভিযোগ নেয়া হয়েছে। পুলিশ অপরাধীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে।

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ অপহরণ ওমর ফ র ক পর ব র য় একট

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুর আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই আসামি অপহরণ 

ভর দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে হানা দিয়ে মারধর করে আইনজীবীদের সামনে থেকে দুই আসামিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছেন কয়েকজন ব্যক্তি। বাদী পক্ষের লোকজন এই কাজ করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান ঘটনার বিষয়ে তথ্য দিয়ে বলেন, বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের ৩ নম্বর জেলা দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে আসামিদের তুলে নিয়ে যাওয়ার এই ঘটনা ঘটেছে। 

দিনদুপুরে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে জামিন পাওয়া দুজন আসামিকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গাজীপুরে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। 

আরো পড়ুন:

গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী-সতিন গ্রেপ্তার

সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার

তুলে নেওয়া দুজনের নাম বাবুল ও মিলন। এ ছাড়া তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি। তবে তারা সম্পর্কে ভাই বলে জানিয়েছেন তাদের একজনের স্ত্রী দোলেনা আক্তার। তাদের কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই তার। 

বাবুল ও মিলনের জীবন শঙ্কায় রয়েছে দাবি করে দ্রুত তাদের খুঁজে বের করে পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার আকুতি জানিয়েছেন দোলেনা আক্তার।

নাজমুল করিম খান বলছেন, যারাই এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার একটি মামলায় বেশ কয়েকজন স্থায়ী জামিনের জন্য আদালতে আসেন। জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধির পাওয়ার পর তারা আদালত প্রাঙ্গণে এলে বাদীর লোকজন হানা দিয়ে সেখান থেকে দুজনকে তুলে নিয়ে যান।

রাইজিংবিডি ডটকমের হাতে আসা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মামলার বাদীসহ বেশ কয়েকজন তখন আদালত প্রাঙ্গণে উপস্থিত হন। সেখানে তারা আকস্মিকভাবে লোকজনকে মারপিট শুরু করেন। এসময় আইনজীবীরা বাধা দিলে তাদের ওপরও আক্রমণ করেন তারা। 

এই মারধরের মধ্যে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এসে জামিন পাওয়া বাবুল ও মিলন নামে দুই আসামিকে তুলে নিয়ে যান, যা ভিডিওতে দেখা গেছে।

আইনজীবী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, তাদের সামনেই আদালত প্রাঙ্গণে অতর্কিত হানা দিয়ে আসামিকে তুলে নিয়ে গেছেন কয়েকজন ব্যক্তি। যাওয়ার আগে বেশ কয়েকজনকে মারধরও করেন ওই ব্যক্তিরা। 

গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “৩ নম্বর সিনিয়র জুডিশিয়াল কোর্টে শ্রীপুর থানার একটি মামলার তারিখ ধার্য ছিল। ওই মামলায় ১৩ জন অস্থায়ী জামিনে ছিলেন। বাদী তাদের জামিন বাতিলের আবেদন করেন। তবে আদালত তাদের জামিন বর্ধিত করেন। এরপর মামলার বাদী কিছু সশস্ত্র লোকজন নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে হামলা করেন। সেখান থেকে তারা দুজন আসামিকে অপহর করে নিয়ে গেছেন। এটি আমাদের আদালতের জন্য নিরাপত্তাহীনতা।” 

আদালত প্রাঙ্গন থেকে তুলে নেওয়া আসামির স্ত্রী দোলেনা আক্তার বলেন, “জামিন হওয়ার পর উকিল আমাদের দাঁড়াতে বলেন। এমন সময় মামলার বাদী নাজমুল ও বেশ কয়েকজন আসেন। এসেই আমাদের মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে আমরা উকিলের রুমে গিয়ে লুকাই। সেখানে গিয়ে আমার স্বামী ও দেবরকে তুলে নিয়ে গেছেন। এখন তারা কোথায় আছেন জানি না।”

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার নাজমুল করিম খান বলেন, “আজকে (বুধবার) যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা উদ্বেগের বিষয়। কিছু লোক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তোয়াক্কা করছে না। এটি রাষ্ট্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। এটি ফ্যাসিবাদেরই আরেকটি রূপ। দুপুরের পর থেকে পুলিশ এটি নিয়ে কাজ করছে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।” 

ঢাকা/রেজাউল/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৌশলে ১৫ মাসের শিশুকে অপহরণ, ৯ দিন পর যেভাবে উদ্ধার
  • চট্টগ্রামে শিশু অপহরণ: চক্রের হোতাসহ গ্রেপ্তার ২
  • গাজীপুরে আদালত চত্বর থেকে ২ আসামি অপহরণ
  • ফতুল্লায় ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে শিশুকে হত্যা, ঘাতক গ্রেপ
  • গাজীপুর আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই আসামি অপহরণ 
  • নারায়ণগঞ্জে অপহরণের পর শিশুকে হত্যা
  • কুষ্টিয়ায় ২১ দিনেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত স্কুলছাত্রী
  • চটপটি খাওয়ার কথা বলে শিশুকে অপহরণ, এক দিন পর লাশ উদ্ধার
  • টেকনাফে পাহাড় থেকে দুজনকে অপহরণ