ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার একই স্থানে ও একই সময়ে বিএনপির দুটির পক্ষের পাল্টাপাল্টি সভাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে একটি পক্ষের সভাস্থলের মঞ্চের পেছন থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ। একটি পক্ষের সভায় প্রধান অতিথি হিসিবে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা থাকার কথা আছে।

স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামীকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার আড়াইসিধা কাদির ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয় মাঠে বিএনপিঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে সভা আহবান করে আশুগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল। সভার অনুমতি চেয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাসেল বিপ্লব। সেই আবেদনের অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও আড়াইসিধা কাদির ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে দেওয়া হয়। ওই সভায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা প্রধান অতিথি থাকার কথা আছে।

এদিকে একই স্থানে ও একই সময়ে ইউনিয়ন বিএনপির কর্মিসভা আয়োজন করেছে আড়াইসিধা ইউনিয়ন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো.

বাদল মিয়া। তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের আবেদনের ১০ দিন পর ২০ ফেব্রুয়ারি কর্মিসভার অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন। বাদল মিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান সিরাজের পক্ষের নেতা। তিনিও আবেদনের অনুলিপি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও আড়াইসিধা কাদির ভূঁইয়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে দেন।

বিএনপি নেতা রুমিন ফারহানা পক্ষের সভার জন্য তিনদিন ধরে মাঠে প্যান্ডেল ও মঞ্চ প্রস্তুতের কাজ করছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা-কর্মীরা। গত বুধবার রাতে ইউনিয়ন বিএনপির নেতা-কর্মীরা এতে বাধা দেন। এতে উভয় পক্ষের নেতা–কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে অনুষ্ঠানস্থলের মাঠে নির্মাণাধীন মঞ্চের পেছন থেকে তিনটি অবিস্ফোরিত ককটেল পড়ে থাকতে দেখে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা–কর্মীরা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনটি ককটেল উদ্ধার করে। এ নিয়ে উপজেলায় বিএনপির দুটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।

আশুগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোস্তাকিম পাটোয়ারি বলেন, তিনটি ককটেল পরিত্যক্ত ও অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখান থেকে ককটেল তিনটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য কেউ এই কাজ করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহজাহান সিরাজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি হাসপাতালে আছি। এখন কথা বলতে পারব না। পরে কথা বলব।’

রুমিন ফারহানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও পেশিশক্তির বিরুদ্ধে। যাঁরা রাস্তা থেকে উঠে এসে রাজনীতি করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমার রাজনীতি। আমি সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও অবৈধপথে উপার্জিত ব্যক্তিদের সবসময় বিরোধিতা করি। আমি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু রাজনীতিতে বিশ্বাসী। যত কিছুই করুক আগামীকালের সভায় আমি যাবই।’

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শ্যামল চন্দ্র বসাক প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিএনপির কোনো পক্ষকেই সভা করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। জেলা প্রশাসন যে পক্ষকে অনুমতি দেবে, সেই পক্ষকে সভা করতে দেওয়া হবে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য যা যা করার তাই করা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব এনপ র ন ব এনপ ককট ল একই স উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারে নিহত বেড়ে ২০৫৬, এক সপ্তাহের শোক ঘোষণা

মিয়ানমারে মৃত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত মানুষের সংখ্যা ৩ হাজার ৯০০। এখনো নিখোঁজ ২৭০ জন। এমন অবস্থায় দেশটিতে এক সপ্তাহের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার দেশটির জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। জাতীয় শোকের অংশ হিসেবে দেশটিতে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

গত শুক্রবার মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। ওই কম্পন থাইল্যান্ডসহ প্রতিবেশী আরও সাতটি দেশে অনুভূত হয়েছে। এর মধ্যে থাইল্যান্ডেও বহুতল ভবন ধসে পড়াসহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।

ভূমিকম্পে মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মধ্যে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয় রয়েছে। শহরটিকে ১৭ লাখ লোকের বসবাস। ভূমিকম্পে সেখানে এমন বিপর্যয় নেমে এসেছে যে সেখানে উদ্ধার তৎপরতা ও জরুরি সহায়তার কার্যক্রম থুবড়ে পড়েছে। মূলত সেখানকার এমন পরিস্থিতি সামনে আসার পর সরকারের পক্ষ থেকে এ শোকের ঘোষণা এল। মান্দালয়ের বাসিন্দারা শুক্রবার থেকে টানা দিনরাত সড়কে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছেন।

জাতিসংঘের আবেদন

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাহায্যকারী সংস্থাগুলো বলছে, গৃহযুদ্ধে নাকাল মিয়ানমারের অবস্থা ভূমিকম্পের ঘটনায় আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেখানে রাস্তাঘাটে লাশের দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে, হাসপাতালগুলো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ৮০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল সহায়তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছে জাতিসংঘ।

৬০ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার ৪

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের প্রায় ৬০ ঘণ্টার পর ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে চারজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সাগাইং অঞ্চলে ধসে পড়া একটি স্কুল ভবন থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির ফায়ার সার্ভিস।

সম্পর্কিত নিবন্ধ