রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কয়েকটি দোকানে অভিযান চালিয়ে ২০০ কার্টনের বেশি বোতলজাত সয়াবিন তেল উদ্ধার করেছে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। বিক্রেতারা এসব তেল গোপনীয় স্থানে লুকিয়ে রেখেছিলেন। এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দোকানগুলোকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রায় এক মাস ধরে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের তীব্র সংকট চলছে। দোকানে দোকানে ঘুরেও ক্রেতারা বোতলের তেল কিনতে পারছেন না। খুচরা বিক্রেতাদের দাবি, কোম্পানিগুলো ও ডিলাররা পর্যাপ্ত তেল সরবরাহ করছে না। অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চাহিদার তুলনায় দেশে অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের পর্যাপ্ত আমদানি রয়েছে। আর ভোজ্যতেল উৎপাদন ও পরিশোধন কোম্পানিগুলোর দাবি, তারা নিয়মিত বাজারে তেল সরবরাহ করছে; কিন্তু কৃত্রিমভাবে দাম বাড়াতে ডিলার ও খুচরা পর্যায়ে তেল মজুত করে রাখা হচ্ছে।

এ রকম পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দিন ধরে বাজারে অভিযান পরিচালনা করছে ভোক্তা অধিদপ্তর। সে ধরাবাহিকতায় আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার ও শান্তিনগর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে সংস্থাটি। কারওয়ান বাজারে অভিযানকালে সাতটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল মজুত করে রাখার প্রমাণ পায় ভোক্তা অধিদপ্তর।

সংস্থাটির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অভিযানের আগে দোকানগুলোতে সাদাপোশাকে তেল কিনতে যান অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। তখন দোকানিরা জানান, তাঁদের কাছে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। পরে অভিযান পরিচালনা করে দোকানগুলো থেকে ২০০ কার্টনের বেশি বোতলজাত সয়াবিন উদ্ধার করেন কর্মকর্তারা।

এসব তেল ভোক্তাদের কাছে বিক্রির ব্যবস্থা করে সংস্থাটি। আর দায়ী সাত প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি রাজধানীর শান্তিনগরেও অভিযান পরিচালনা করে ভোক্তা অধিদপ্তর। এ সময় সয়াবিন তেল মজুত করে রাখার অভিযোগে দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, অভিযানে তারা দেখেছে যে বেশ কিছু দোকানের সহজে দৃশ্যমান স্থানে ভোজ্যতেল প্রদর্শন করা হচ্ছে না এবং ক্রেতাদের তেল নেই বলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরে তল্লাশিতে দোকানের গোপনীয় স্থানে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেলের (৫ লিটারের ২০০ কার্টনের বেশি) মজুত পাওয়া যায়।

কারওয়ানবাজারে অভিযানের সময় ২০২৩ সালের মে থেকে অক্টোবর সময়ে উৎপাদিত পাঁচ লিটারের ছয় কার্টন সয়াবিন তেলও জব্দ করা হয়। এসব তেলের মেয়াদ ২০২৪ সালের মে থেকে অক্টোবরে শেষ হয়েছে। আবার ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে উৎপাদিত পাঁচ লিটারের কিছু বোতলজাত সয়াবিন তেলও পাওয়া গেছে। এসব বোতলের গায়ে ৮১৮ টাকা মূল্য লেখা থাকলেও দোকানিরা ৮৫০–৮৫২ টাকা দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

এই অপরাধে কারওয়ানবাজারের সাতটি প্রতিষ্ঠানকে মোট দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। এর মধ্যে শুধু একটি দোকানকেই দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ওই দোকানের গোপন স্থানে ১২০ কার্টন বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অভিযানে শান্তিনগর বাজারের দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভোক্তা অধিদপ্তর জানায়, বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট নেই। কিছু পাইকারি ও খুচরা অসাধু ব্যবসায়ী অতি মুনাফা লাভের আশায় তেল লুকিয়ে রেখে বাজারে কৃত্রিম সংকট দেখাচ্ছেন। রমজান সামনে রেখে তাঁরা এমনটা করেছেন। সে জন্য তদারক কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।

কারওয়ানবাজারে অভিযানের নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় উপপরিচালক বিকাশ চন্দ্র দাস। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংস্থাটির ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.

আবদুল জব্বার মণ্ডল ও প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. দিদার হোসেন। এ ছাড়া শান্তিনগর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ফাহমিনা আক্তার ও ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শিকদার শাহীনুর আলম।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ন ত নগর ক রওয় ন

এছাড়াও পড়ুন:

বলিউডের ঘোর দুর্দিন, বড় তারকাদের সতর্ক করলেন পরিচালক

অনেক দিন ধরেই হিন্দি সিনেমার দুরবস্থা। ২০২৩ সালে কিছু ঘুরে দাঁড়িয়েছিল, কিন্তু এখন আবারও বলিউডের শনির দশা। ঈদের মতো বড় উৎসবে মুক্তি পেয়েও সালমান খানের মতো বড় তারকার সিনেমা বেহাল। কিছুদিন আগেই নির্মাতা অনুরাগ কাশ্যপ বলেছিলেন, বলিউডের দুর্দশার মূল কারণ, বড় তারকার অতিরিক্ত পারিশ্রমিক। এবার একই বিষয়ে কথা বললেন পরিচালক সুজিত সরকার। বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুজিত বলেন, পারিশ্রমিক না কমালে বড় তারকাদের কেউ আর সিনেমায় নেবে না।

‘ভিকি ডোনার’, ‘পিকু’, ‘অক্টোবর’, ‘মাদ্রাজ ক্যাফে’ নির্মাতা সুজিত মাঝারি বাজেটে সিনেমা বানান। নিজের সিনেমায় বড় তারকাদের সাধারণত নেন না। ফলে তাঁর বেশির ভাগ সিনেমাই মুক্তির পর লগ্নি তুলে আনে। কিন্তু এখন বলিউডের প্রথম সারির শিল্পীর এত বেশি পারিশ্রমিক হাঁকছেন যে সিনেমার বাজেটের বড় অংশ চলে যাচ্ছে তাঁদের পেছনেই। ‘জনপ্রিয় শিল্পীদের উচিত পারিশ্রমিক কমানো। তাঁরা যদি এটা না করেন, তাহলে নির্মাতারা তাঁদের নতুন কাজের প্রস্তাব দেবেন না।’ বলেন সুজিত।

এই নির্মাতা বলেন, তাঁর ছবিতে যাঁরা কাজ করতে চান, তাঁরা ভালো করেই বাজেট সম্পর্কে ধারণা রাখেন। কেউ বাড়তি পারিশ্রমিক দাবি করেন না। বলিউডের এমন মন্দার বাজারে তারকাদের পারিশ্রমিক পুনর্নির্ধারণের পরামর্শ সুজিতের। ‘এখন এমন একটা কঠিন সময় যে নির্মাতাদের অবশ্যই লগ্নি তুলে আনতে কম বাজেটে সিনেমা বানাতে হবে। তাই জনপ্রিয় তারকারা পারিশ্রমিক না কমালে আমাদের বিকল্প ভাবতে হবে।’ বলেন সুজিত।

সুজিত সরকার। এএনআই

সম্পর্কিত নিবন্ধ