বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ নারীই তার পুরুষ সঙ্গীর নির্যাতনের শিকার হন। এই নির্যাতনের মধ্যে রয়েছে শারীরিক, মানসিক ও যৌন সহিংসতার ঘটনা। আর এসব সহিংসতার সঙ্গে জড়িত থাকেন নারীর স্বামী, সাবেক স্বামী, প্রেমিক কিংবা জীবনের যেকোনো সময়ে সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা’ শীর্ষক এক জরিপে উঠে এসব তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনের সম্মেলন কক্ষে বিবিএস এই জরিপের খসড়া প্রকাশ করে।

২০২৪ সালের মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাস দেশের আট বিভাগের ১৫ বছরের বেশি বয়সী ২৭ হাজার ৪৭৬ জন নারীর সাক্ষাৎকার থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।

প্রাথমিক ফলাফলে বলা হয়, জরিপে অংশ নেওয়া নারীদের মধ্যে প্রায় ৪৭ শতাংশ নারী শারীরিক, ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ যৌন, প্রায় ৩৩ শতাংশ মানসিক, ৫০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবহার, প্রায় ১০ শতাংশ নারী অর্থনৈতিক, এবং ৫৪ শতাংশ নারী শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হন।

এর আগে ২০১৫ সালে সবশেষ এই জরিপটি করা হয়েছিল। সেবছর দেখা গিয়েছিল প্রায় ৭৩ শতাংশ নারী তার পুরুষ সঙ্গীর সহিংসতার শিকার হন।

সে হিসেবে পুরুষ সঙ্গী কর্তৃক নারীর প্রতি এই সহিংসতা আগের তুলনায় সামান্য কমেছে।

জরিপটিতে, ‘জীবনসঙ্গী’ বলতে বর্তমান বা প্রাক্তন স্বামী এবং ‘নন-পার্টনার’ বলতে বর্তমান বা প্রাক্তন স্বামী ছাড়া উত্তরদাতার ১৫ বছর বয়সের পর থেকে জীবনের যেকোনো সময়ে সংস্পর্শে আসা যেকোনো ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে।

জরিপের ফলাফল তুলে ধরে প্রকল্প পরিচালক ইফতেখারুল করিম বলেন, “এই জরিপে দেশের আট বিভাগের গ্রাম-শহর, বস্তি এবং ধনী এলাকাসহ সকল স্তরের ১৫ বছরের বেশি বয়সী নারীর কাছ থেকে সহিংসতা বিষয়ক তথ্য নেওয়া হয়েছে। মোট ১২০ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ২৪ জন সুপারভাইজার এসব তথ্য সংগ্রহ করেছেন।”

তিনি বলেন, “জরিপে যে ২৭ হাজার নারী অংশ নিয়েছেন তারা জানিয়েছেন, জীবনে তাদের স্বামী বা প্রাক্তন স্বামীর (লাইফ পার্টনার) কাছ থেকে অন্তত একবার হলেও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন প্রায় ৪৭ শতাংশ।

“যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন ২৮ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। প্রায় ৩৩ শতাংশ নারী মানসিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। ৫০ শতাংশ নারী স্বামীর কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবহারের মাধ্যমে সহিংসতার শিকার হয়েছেন। এছাড়াও প্রায় ১০ শতাংশ নারী অর্থনৈতিক এবং ৫৪ শতাংশ নারী শারীরিক ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলে জরিপটির ফলাফলে উঠে এসেছে।”

এদের মধ্যে ৪১ শতাংশ নারী গত ১২ মাসে এই সহিংসতার শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি।

ফলাফল অনুযায়ী, দেশে সবচেয়ে বেশি নারী সহিংসতার শিকার হন বরিশালে। এরপর রয়েছে যথাক্রমে চট্টগ্রাম, ঢাকা, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর। সবচেয়ে কম সহিংসতার ঘটনা ঘটে সিলেট বিভাগে।

জরিপের মোড়ক উন্মোচন করেন নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমিন মুর্শিদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মমতাজ আহমেদ এবং পরিসংখ্যা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আক্তার, বিবিএস মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি মাসাকি ওয়াতাবেসহ অন্যরা।

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ ক র হন য ন সহ ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

দেশজুড়ে ঈদের দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস যা বলছে

দেশের ৪ জেলা এবং ৩ বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল রবিবার কয়েকটি জেলায় তাপপ্রবাহ কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। কিছু এলাকায় অপরিবর্তিত ছিল। আজ পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনেও গতকালের মতো তাপপ্রবাহ অপরিবর্তিত থাকবে। তবে আজ তাপপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো পূর্বাভাস নেই।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, গতকাল রবিবার দেয়া এক পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস বলছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

সোমবারের (৩১ মার্চ) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। তবে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে।

মঙ্গলবারের (১ এপ্রিল) আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এদিন সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে, তবে সিলেট বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। 

এ ছাড়া বর্ধিত পাঁচ দিনের আবহাওয়ার অবস্থার উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
 

ঢাকা/হাসান//

সম্পর্কিত নিবন্ধ