সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরামের ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বর্তমান সংবিধানকে ফেলে দেওয়া একদমই ভুল হবে। এত দিন এই সংবিধানের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হয়েছে। জনগণ মেনে নিয়েছে। সেটা ফেলে দিয়ে নতুন একটা সংবিধান করা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়, গ্রহণযোগ্য নয়। 

আজ বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে ‘৭২-এর সংবিধান ও প্রস্তাবিত সংস্কার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি এই সভার আয়োজন করে। 

সভায় ড.

কামাল হোসেন আরও বলেন, সংবিধানকে ফেলে দিয়ে নতুন সংবিধান করা—এটা সংস্কার নয়, এটা সংবিধানকে ধ্বংস করার একটা পথ। সংবিধান পুনর্লিখনও একটা ভুল ধারণা। সংবিধান সংস্কারের প্রয়োজন আছে, সংস্কার বিবেচনাযোগ্য। বিস্তর আলোচনার পর যদি ঐকমত্য হয়, তখন সংবিধান সংশোধন করা যায়। 

সংবিধানের ব্যাপক সংশোধনীর পক্ষে ভিন্নমত পোষণ করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো রাজনীতি থেকে দূরে সরে গেছে, সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই বাস্তবতায় গণতন্ত্রের নামে রাজনৈতিক দলগুলো পা রাখার মতো মাটি দ্রুত পাবে না। অল্প অল্প করে পর্যায়ক্রমে ভালোর দিকে যেতে হবে। 

তিনি বলেন, বিগত ৫৩ বছর বিচার করলে রাষ্ট্রধর্ম আর ধর্মনিরপেক্ষতা—দুটি কথাই সংবিধান থেকে বাদ দেওয়া উচিত। গণতন্ত্রের মধ্যেই ধর্মনিরপেক্ষতা আসতে পারে। ধর্মনিরপেক্ষতা শব্দটা ব্যবহার না করে অন্যভাবে এগোতে পারলে ভালো। 

অধ্যাপক আবু সাইয়িদ বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা ফেলে দেওয়ার প্রস্তাবের ফলে ধীরে ধীরে ধর্মীয় উগ্রবাদী শক্তির উত্থান হচ্ছে; যা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। তিনি আরও বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন হতে হবে, না হলে দেশে শান্তি আসবে না। 

সংগঠনের সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক সোহরাব হাসান, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহিদুল বারী, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, এস এম এ সবুর ও আবু ইয়াহিয়া। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইনজীবী গোলাম মোস্তফা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইনজ ব

এছাড়াও পড়ুন:

গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর বিভাজন স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঘটাবে

অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর এ বিভাজন স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঘটাবে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা।

আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে অন্তর্বর্তী সরকার, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে একে অপরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক অপতথ্য এবং ভুয়া তথ্য সমাজ ও রাজনৈতিক পরিসরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, যা গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজনের বীজ রোপণ করতে পারে। এ ধরনের বিভাজন কেবল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়াকেই হুমকিতে ফেলবে না, বরং পতিত স্বৈরাচারের রাজনীতির পুনরুত্থানও ঘটাতে সহায়তা করবে।

এ পরিস্থিতি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচির ঘোষণা; নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য ও গণতন্ত্র সুসংহতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কারবিষয়ক ঐকমত্য ও বাস্তবায়ন; গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সর্বসম্মত সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়ন, যা নির্বাচনের পর বাস্তবায়ন করা হবে, যেন পতিত স্বৈরশাসকের ব্যবহৃত জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে জনগণের সেবায় পুনর্গঠিত করা যায়; কোনোভাবেই পতিত স্বৈরশাসকের শক্তির সঙ্গে আপস করবে না মর্মে সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি এবং পতিত স্বৈরশাসক এবং তার সহযোগী ও সংগঠনগুলোর, বিশেষত আওয়ামী লীগের বিচার।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, গবেষক মো. খান সোবায়েল বিন রফিক, অর্থনীতিবিদ ও লেখক জ্যোতি রহমান, স্থপতি মার্জিয়া মিথিলা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য কোনো ধরনের সংস্কার নয়: রুহুল কবির রিজভী
  • নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেন ইমরান খান
  • আইসিটির প্রসিকিউটর সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
  • রাষ্ট্র মেরামত জলে গেলে জনতা ছাড়বে না
  • যুক্তরাষ্ট্রে ৩০০টির বেশি ভিসা বাতিল, অধিকাংশই ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীদের: মার্কো রুবিও
  • সমালোচনার মুখে আইসিটির প্রসিকিউটর সিলভিয়ার নিয়োগ বাতিল
  • মেসির হয়ে কেন বক্সিংয়ে লড়তে চান তাঁর বডিগার্ড
  • প্রতারণার মামলায় ইথার ফারিয়েলের জামিন আবেদন নাকচ
  • গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর বিভাজন স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঘটাবে
  • আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও চার নতুন প্রসিকিউটর