দেশের পোশাক কারখানা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, গণপরিবহন, অনলাইন প্লাটফর্মে নারী ও ছাত্রীরা কোনো না কোনোভাবে সহিংসতা বা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসবের মধ্যে পোশাক কারখানায় ৮০, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৭৪, গণপরিবহনে ৯৪ এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ৬৮ শতাংশ নারী হয়রানির শিকার। এই সমস্যা মোকাবিলায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ব্র্যাক যৌথভাবে হাতে নিয়েছে ‘শিখা প্রকল্প’।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটলে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পটি যাত্রা শুরু করেছে।

উদ্বোধনী এ উদ্যোগটি জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা, হয়রানি এবং যৌন হয়রানির প্রতিরোধ ও প্রতিক্রিয়া জোরদার করে ব্যক্তিগত ও জনপরিসরে নারীর জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে কাজ করবে। এ সময় বক্তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নারী ও ছাত্রী হয়রানির বিষয়টি তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার। বিশেষ অতিথি পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত সচিব) ওমর মো.

ইমরুল মহসিন, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ পরিচালনায় সহায়ক কমিটির সদস্য এবং শাশা গার্মেন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামস মাহমুদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু এবং ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্।

অনুষ্ঠানে ইইউ হেড অব ডেলিগেশন মাইকেল মিলার বলেন, একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কর্মক্ষেত্র পর্যন্ত সকল ক্ষেত্রে নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, যেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবার সমান অধিকার থাকবে। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতাকে শুধুমাত্র নারীর সমস্যা হিসেবে দেখে না বরং এটি মানবাধিকার, উন্নয়ন ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন।

আসিফ সালেহ্ বাংলাদেশে নারীদের এগিয়ে যাওয়ার পথে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করতে সম্মিলিত উদ্যোগের আহ্বান। ওমর মো. ইমরুল মহসিন বলেন, এই প্রকল্পটি জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা, হয়রানি ও যৌন নিপীড়নমুক্ত পরিবেশ গড়ে তুলতে কাজ করছে এবং কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর (ডিআইএফই) এই উদ্যোগকে পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে।

শামস মাহমুদ পোশাক শিল্পের পক্ষ থেকে অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টেকসই ও দায়িত্বশীল পোশাক খাত গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু নারীদের জন্য নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে সমন্বিত প্রচেষ্টার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, অর্থবহ পরিবর্তন আনতে সময়ের প্রয়োজন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ব্র্যাকের সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স অ্যান্ড সেফগার্ডিং কর্মসূচির পরিচালক জেনেফা জব্বার শিখা প্রকল্পের সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন হয়র ন র প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেছেন, গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে নতুন সংবিধান করতে হবে। এ কারণে আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে। সংসদ নির্বাচন ও গণপরিষদ নির্বাচনকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর যৌক্তিক কারণ নেই। গণপরিষদ নির্বাচনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই সংবিধান প্রণয়ন ও সংসদ সদস্যের কাজ একসঙ্গে যৌথভাবে সম্পন্ন করতে পারবে।

শুক্রবার বিকেলে রংপুর জিলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে জাতীয় নাগরিক পার্টির ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনীতিবীদ, ছাত্র-জনতা, শ্রমিক, পেশাজীবী, অ্যাক্টিভিস্ট, ওলামায়ে কেরাম ও বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে এনসিপি।

এতে আখতার হোসেন বলেন, যে সংবিধান দিয়ে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, সেটি মানুষের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই সংবিধানের এক তৃতীয়াংশকে পরবর্তীতে কোনও সংসদ সংশোধন করতে পারবে না এমন বিধান যুক্ত করা হয়েছে। এ সংবিধানে রাষ্ট্রের তিনটি অর্গানের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য নিশ্চিত করা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীকে এমনভাবে ক্ষমতায়িত করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একজন প্রধানমন্ত্রী এ দেশে স্বৈরাচারী হয়ে ওঠার সুযোগ পায়। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন সংবিধানের বাস্তবতা রয়েছে।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথে দেশের শাসন কাঠামো, বিচার কাঠামো, পুলিশ প্রশাসন প্রত্যেক জায়গায় আমূল সংস্কার দরকার। সরকারের তরফ থেকে সংস্কার প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। সেই প্রক্রিয়ায় আমরা সংহতি ব্যক্ত করেছি। দেশের গণহত্যার বিচার সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত বিষয়। গণহত্যার বিচার না হলে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী শক্তি ভবিষ্যতে দেশের রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করে দেশে আরেকবার গণহত্যা, খুন, রাহাজানির সুযোগ পেয়ে যাবে। দেশকে নিরাপদ করতে হলে চব্বিশের আন্দোলনে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের ব্যক্তি ও দল হিসেবে বিচার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের বার্তা নিয়ে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। দেশের স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্পকে স্বনির্ভর করতে হবে। প্রত্যেক সেক্টরকে স্বনির্ভর করে গড়ে তোলা হলে দেশের মানুষের মুক্তির অর্জন সম্ভব। দেশে কাঠামো উন্নয়ন নয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে, জনগণের সেবায় তারা সচেষ্ট থাকবে এমন দেশ বিনির্মাণ করা হবে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সংগঠক সাদিয়া ফারজানা দিনা, আসাদুল্লাহ গালিব, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্যাটারি রিকশা— একটু আস্তে চালান ভাই
  • রাজধানীতে ‘ঈদ বকশিশের’ নামে বাড়তি ভাড়া আদায়
  • ‘কোথাও যানজট নেই, কিন্তু ভাড়া বেশি’
  • নির্বাচনের তারিখ নিয়ে টালবাহানা চলছে: রিজভী
  • সামনের নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন
  • সামনের নির্বাচন গণপরিষদের হতে হবে: আখতার হোসেন
  • সামনের যে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচন গণপরিষদ নির্বাচন হতে হবে: আখতার হোসেন